পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা PDF | পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা PDF |  পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা PDF : প্রিয় পাঠকগন আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম, এই পর্বটিতে পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা বা পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা রচনা টি সম্পর্কে নিঁখুত ভাবে আলোচনা করেছি। যা তোমাদের জন‍্য খুবই সাহায্যকারী হবে। চলো দেখে নেওয়া যাক পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা প্রবন্ধ রচনা টি।

রচনা -১

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা :

“এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যা আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার “
সুকান্ত ভট্টাচার্য

ভূমিকা : উদ্ভিদ ও জীবজগৎ – সহ যে প্রাকৃতিক ঘেরের মধ্যে আমরা বাস করি, তাই হল পরিবেশ। প্রাকৃতিক নিয়মে এই পরিবেশের মধ্যে যুগ যুগ ধরে ভারসাম্য রক্ষিত হয়ে আসছে বলে জীবকুল আজও পৃথিবীতে সুখ-স্বাভাবিকভাবে বসবাস করতে পারছে। আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সাথে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার একটি অনিবার্য সম্পর্ক রয়েছে।

যান্ত্রিক সভ্যতা ও পরিবেশের ভারসাম্য : আধুনিক যুগের যন্ত্রসভ্যতা প্রসারের কারণে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে । বৃক্ষ ছেদন নগরায়ন, কলকারখানা নির্মান, পারমানবিক শক্তির ব্যবহার প্রভৃতির ফলে পরিবেশ নানাভাবে দূষিত হচ্ছে। তবুও আমরা বিজ্ঞান প্রযুক্তি নিয়ে মেতে রয়েছি । উপযুক্ত মনোযোগ দিতে পারিনি পরিবেশ ভারসাম্যের দিকে।

ভারসাম্যের সংকটকালীন অবস্থা : বর্তমানে বায়ু, জল, মাটি ভীষনভাবে দূষিত হচ্ছে। কল- কারখানার বিষাক্ত ধোঁয়া বাতাসে কার্বন-ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইডের পরিবেশের বিষাক্ত গ্যাসের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলছে। কৃষিক্ষেত্রে বিষাক্ত সারের ব্যবহার, কল- কারখানার বর্জ্য পদার্থ দ্বারা জল দূষিত হচ্ছে। যানবাহনের শব্দ, বাজির শব্দ, শব্দ দূষণের মাত্রাকে তরান্বিত করছে। যার ফলে খরা, বন্যা বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হচ্ছে।

ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা : পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা অপরিসীম যথা –

১. নিজের এলাকার আবর্জনা যাতে জমতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা। যদিবা আবর্জনা জমাও হয় তবে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফাঁকা স্থানে পুড়িয়ে ফেলা ।

২. জল দূষণরোধ করতে নিজের এলাকায় ব্যবহৃত জলাশয়ে গবাদিপশুর স্নান ও পুকুর পাড়ে প্রাতঃকৃত্য বন্ধ করা।

৩. রাস্তার ধারে বিদ্যালয় কিংবা পড়ে থাকা জমিতে বৃক্ষ- রোপন কর্মসূচী নেওয়া ও বন সংরক্ষন করা।

৪. বে-আইনিভাবে গাছ কাটা বন্ধ করা ।

৫. ইলেকট্রিক হর্ন বাজানো বন্ধ করা।

সচেতনতার প্রসার ঘটানো : বেতার, দূরদর্শন, চলচ্চিত্রের সাহায্য নিয়ে জল, বাতাস বিশুদ্ধ রাখার জন্য মানুষকে সচেতন করা সম্ভব ৷ এছাড়া ছাত্রছাত্রীরা স্থানীয় এলাকায় পরিবেশ ভারসাম্যতা নিয়ে সভা ও পথ নাটিকার আয়োজন করতে পারে ।

উপসংহার : জীবনে সুস্থভাবে বাঁচার জন্য প্রয়োজন বিশুদ্ধ পরিবেশ। আজকের ছাত্রসমাজ ভবিষ্যতের সচেতন দ্বায়িত্বশীল নাগরিক । সে কারণে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তাদের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। তাই ছাত্র সমাজ বর্তমান বিশ্বের মানুষের কাছে প্রত্যাশা করে –

“ অন্ন চাই, প্রাণ চাই, আলো চাই, চাই মুক্ত বায়ু “
চাই বল, চাই স্বাস্থ্য, আনন্দ উজ্জ্বল পরমায়ু ।”

রচনা -২

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা :

ভূমিকা : পারিপার্শ্বিক উদ্ভিদ ও জীবজগৎ-সহ আমরা যেখানে বাস করি, তাই হল পরিবেশ। শিল্পবিপ্লবের আগে প্রাকৃতিক নিয়মে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষিত হতো, জীবকুল সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বাস করতো। কিন্তু জীবাশ্ম জ্বালানি দহন যখন থেকে প্রকৃতির হৃৎপিন্ডে বিষবাষ্প ঢালতে শুরু করেছে সেদিন থেকেই ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়ে চলেছে। আজ মারাত্মক দূষিত আমাদের এই পরিবেশ। সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। এই ভারসাম্য রক্ষায় ছাত্র সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

যান্ত্রিক সভ্যতা ও পরিবেশের ভারসাম্য : দিন যত এগিয়ে চলেছে যন্ত্রসভ্যতার ততই প্রসার ঘটেছে। তাতেই বিঘ্নিত হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। বৃক্ষচ্ছেদন, নগরায়ন, শিল্প-কারখানা নির্মাণ, যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষিক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার, কীটনাশক প্রয়োগ, জনবিস্ফোরণ প্রভৃতির কারণে পরিবেশ আজ কলুষিত। আজ অবহেলিত পরিবেশ, আমরা মনযোগ দিতে পারেনি পরিবেশের ভারসাম্যের দিকে।

ভারসাম্যের সংকট : আজ প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতিটি উপাদান যথা মাটি, জল, বায়ু – মারাত্মকভাবে দূষিত। কলকারখানা, যানবাহন ও জীবাশ্ম জ্বালানির দহনে বাতাসে মিশছে কার্বন ডাই অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার ডাই অক্সাইডের মতো ক্ষতিকর গ্যাস বেড়েই চলেছে। কৃষি, কলকারখানা, গৃহস্থালির দূষিত বর্জ্য, জল ও মাটিকে দূষিত করে চলেছে। দূষিত হচ্ছে শব্দ ও দৃশ্য। বেড়ে চলেছে দুর্যোগ ও বিপর্যয়।

পরিবেশ উন্নয়নমূলক কর্মসূচী : ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অনন্ত সম্ভাবনাকে পরিবেশের উন্নয়নের উদ্দেশ্যে কাজে লাগাতে হবে। তাই সর্বপ্রথম তাদের মধ্যে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার বীজ রোপণ করতে হবে। যা একসময় মূল্যবোধের মহীরুহ হয়ে উঠবে। তখন আপনা থেকেই তাদের মধ্যে পরিবেশের উন্নয়নমূলক বিষয়ে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহ জন্মাবে। ছাত্র-ছাত্রীরা পরিবেশের উন্নয়নমূলক নানা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবে।

পরিবেশ সচেতনতায় ছাত্রসমাজ : “আমরা শক্তি আমরা বল আমরা ছাত্রদল”- নজরুলের ছাত্রদল আমরা। আমরা এই পরিবেশের সবথেকে প্রাণবন্ত, সতেজ ও বলিষ্ঠতম অংশ। ছাত্রসমাজ যদি জেগে ওঠে তারা পরিবেশকে সুস্থ স্বাভাবিক করে তুলতেই পারে। আদর্শ পরিবেশ গড়ার ব্রতে ব্রতী হয়ে পরিবেশকে কলুষতার হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসাবে নিরন্তর প্রচার চালিয়ে যেতে হবে ও তার ফলাফলের পর্যালোচনা করে যেতে হবে।

বৃক্ষরোপণে ছাত্রসমাজ : পরিবেশ সুরক্ষার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সবচেয়ে বেশি উল্লেখযোগ্য। অরণ্য সপ্তাহ পালন, বছরের বিভিন্ন সময়ে গাছ লাগানো (বিশেষ করে বর্ষাকালে) জীবনের যেন একটি ব্রত হয়ে যায়। একটি গাছ, একটি প্রাণ, একটি কাটলে দশটি লাগাও স্লোগান তুলে জনগনকে সচেতন করে তুলতে হবে।

দূষণ নিয়ন্ত্রনে ছাত্রসমাজ : বায়ু, জল, মাটি, শব্দ প্রভৃতি দূষণরোধে – ছাত্রসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। তার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে, যেমন―১. নিজেদের বাড়িতে পয়ঃপ্রণালী ঠিক রাখা। ২. গৃহস্থালীর বর্জ্য পদার্থ যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা। ৩. হাসপাতাল, নার্সিংহোম, স্কুল, কলেজ প্রভৃতি জায়গা সবসময় পরিচ্ছন্ন রাখা। ৪. ধূমপান, মদ্যপান, ড্রাগ সেবন প্রভৃতি থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি।

অন্যান্য কর্মসূচী : তাছাড়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভ্রমণ, পৃথিবীর জীব বৈচিত্রের সাথে পরিচিতি, পরিবেশ সচেতনতার প্রসারমূলক প্রচারকার্যে অংশগ্রহণ ইত্যাদিকেও পরিবেশ উন্নয়নমূলক কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। পরিবেশ সম্পর্কিত নানান তথ্য গণমাধ্যমে যাতে প্রচারিত হতে পারে, সে বিষয়ে জনশিক্ষার ব্যবস্থা যাতে গৃহীত হয় তা দেখা উচিত সরকারের। শুধু ছাত্ররা সচেতন হলে হবে না, সেই সচেতনতা যাতে বিস্তৃত হয় সেজন্য দৃঢ় পদক্ষেপ ও কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে সরকারকে এবং সেই সঙ্গে শুভবুদ্ধি সম্পন্ন জনগণকে। রবীন্দ্রনাথ দুঃখের সঙ্গে বলেছিলেন―

“যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো ?”

উপসংহার :  সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য চাই বিশুদ্ধ পরিবেশ। তাই আজকের ছাত্রসমাজকে পরিবেশ উন্নয়নে কবিগুরুর এই কথা মনে রেখে ভবিষ্যৎ সুস্থ পরিবেশের স্বার্থে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধিতে তথা পরিবেশের উন্নয়নে সচেষ্ট হতে হবে। বর্তমান বিশ্বের মানুষ ছাত্রসমাজের কাছে প্রত্যাশা করে―

“দাও ফিরে সে অরণ্য, লও এ নগর,
লও যত লৌহ লোষ্ট্র কাষ্ঠ ও প্রস্তর”

রচনা -৩

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা :

ভূমিকা : আমরা যেখানে বাস করি, তার পারিপার্শ্বিক পরিমণ্ডলকেই বলা হয়, ‘পরিবেশ’। গাছ যেমন সজল মাটি, অবাধ আলো এবং উৎকৃষ্ট সার পেলে সতেজভাবে বেড়ে ওঠে, আমাদের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠাটাও যেন ঠিক অনুরূপ। আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য চাই উৎকৃষ্ট পরিবেশ। স্বাস্থ্য-উজ্জ্বল পরমায়ুর জন্য সুস্থ পরিবেশের বড়ো প্রয়োজন।

পরিবেশ দূষণ, নালা নর্দমা, পচা খাবার ইত্যাদি : দুঃখের ব্যাপার এই যে, আমাদের বেঁচে থাকার জন্য ভালো পরিবেশের বড়ো অভাব। বেশির ভাগ সময়েই দেখা যায়, আমাদের ঘরের পাশেই নালানর্দমা। আমরা যে জল ব্যবহার করি, তার নিকাশি ব্যবস্থাও ঠিক নেই। ফলে, জল জমে এবং এই জমে থাকা জলে মশার জন্ম হয়। কেবল মশা নয়, আরও নানারকম দূষিত কীটপতঙ্গের আশ্রয় হয় এই জমে থাকা জলে। কলেরা প্রভৃতি নানান রোগের সৃষ্টি হয় এই পরিবেশে। তা কেবল জল জমা নয়, আমরা ঘরের পাশেই জমিয়ে তুলি নানাধরনের আবর্জনা। ছাইপাশ, মাছের আঁশ, পচা খাবার, কাঁঠালের ভূতি, শালপাতা, খাবারের প্যাকেট ইত্যাদি জমিয়ে ঘরের পাশে তৈরি করি আবর্জনার পাহাড়। এই আবর্জনা হল দুষিত গন্ধের গন্ধমাদন। ভীষণ অস্বাস্থ্যকর। এরা হল নানান রোগের উৎস।

প্রয়োজনীয় আলো ও বাতাস : বিশেষভাবে সূর্যের আলো এবং বাতাসের ওপর পরিবেশের উৎকর্ষ নির্ভর করে। সূর্যের আলোর অভাবে  বাসগৃহগুলি অনেক সময় ভিজে ও স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকে। চারদিকের নোংরা আবহ পরিবেশকে করে তোলে অস্বাস্থ্যকর। এই ধরনের পরিবেশে যারা বাস করে, তারা সারা বছর ধরে নানা অসুখে ভোগে। কোনো ওষুধের ক্ষমতা নেই যে, তাদের নিরাময় করে তোলে। এই প্রেক্ষিতে বলা যায়, পরিবেশ উন্নয়নে আলো ও বাতাস খুবই জরুরি।

সুস্থ পরিবেশের জন্য চাই নাগরিক সচেতনতা। নাগরিকরা যদি নিজেরা নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হন, তা হলে তাঁরা পরিবেশকেও পরিচ্ছন্ন রাখায় সচেষ্ট হবেন। এ ব্যাপারে অবশ্য সরকার, পুরসভা, পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ ও পরিকল্পনা থাকা দরকার।

ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা : তবে এ ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্রদের জীবনটাই তো সুন্দর, পবিত্র, নির্মল। তারা নিয়মিতভাবে স্কুলের পরিবেশ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখায় কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। তাই সামাজিক পরিবেশ রক্ষায়ও তাদের এগিয়ে আসতে হবে। তারা যেমন হাতে-কলমে পরিচ্ছন্নতার কাজ করবে, তেমনি নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তাদের সামনে নিজেরা কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, আলাপ-আলোচনা করবে, পদযাত্রা করে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে। ছাত্ররা প্রথমে তাদের গৃহ-পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর করবে। তারপর তারা প্রতিবেশীদের পরিবেশকে সুন্দর করার চেষ্টা করবে। এইভাবে তারা বৃহত্তর সমাজে নিজেদের আদর্শের কথা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে। ফলে সমাজের সবচেয়ে সচেতন অংশ যে ছাত্রসমাজ, তাদের আচার-আচরণ দেখে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং পরিবেশ সুন্দর হয়ে উঠবে।

উপসংহার : পল্লির নিকাশি ব্যবস্থা এবং বাসগৃহের পাশে যাতে জজ্জাল না জমে সেই বিষয়েও আবাসিকদের সচেতন করার দায়িত্ব নিতে পারে ছাত্রছাত্রীরা, দরকার হলে তারা দল বেঁধে সাফাইয়ের কাজেও নেমে পড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। তারা জনসাধারণকে দেখাতে পারে, বাড়ির আবর্জনা কোথায় ফেলতে হবে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে আবাসিকদের সচেতন করতে ছাত্র-ছাত্রীরাই সক্ষম।

রচনা -৪

পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা :

ভূমিকা : আমাদের চারপাশের সবকিছু নিয়েই আমাদের পরিবেশ। সুস্থভাবে বাঁচার জন্য সুস্থ পরিবেশ একান্ত প্রয়োজন। অথচ সেই পরিবেশই মানুষের অনন্ত চাহিদা আর অপরিমেয় লোভের শিকার হয়ে ক্রমশ তার ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে।

পরিবেশে ভারসাম্যের সংকট : নানাভাবে পরিবেশ তার ভারসাম্য হারাচ্ছে। বাতাস, জল, মাটিতে দূষণের মাত্রা বিপদজনকভাবে বাড়ছে। যানবাহন আর কল-কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় মানুষ সর্দি, কাশি, হাঁপানি, নিউমোনিয়ার মত অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে বা তার ব্যাধির প্রকোপ বাড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাছপালা এমনকি জড়জগৎও। কলকারখানার বর্জ্য পদার্থ, ব্যবহারিত রসায়নিক সার আর কীটনাশক, জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত তেল, জলকে প্রতিনিয়ত দূষিত করে তুলেছে। শহরাঞ্চলের আবর্জনায় আর জঞ্জালে মাটি ও দূষিত হচ্ছে। মাইক্রোফোনের উচ্চ শব্দ স্নায়ুতন্ত্রকে বিকল করে দিচ্ছে, বধিরতা সৃষ্টি করছে। পারমাণবিক অস্ত্র নির্মাণ ও অস্ত্র পরীক্ষা তেজস্ক্রিয় দূষণকে ত্বরান্বিত করে তুলেছে।

যন্ত্র সভ্যতার বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে জীবনের ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে মূল্য দিতে মানুষ তার উন্নতি আর স্বাছন্দের লক্ষ্যে পরিবেশকে প্রতিনিয়ত আঘাত করেছে।বাসস্থানের প্রয়োজনে নির্বিচারে অরণ্য ধ্বংস করেছে । বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির লক্ষ্যে ভুলে গেছে পরিবেশের ভারসাম্যের দিকটিকে।

ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা : পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তারাই ভবিষ্যতের সুনাগরিক। পরিবেশ সুরক্ষার পরিকল্পনা ও পরিবেশ উন্নয়নের দায়িত্ব তারা নিলে তাদেরই ভবিষ্যৎ অনেক সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে। যারা সচেতন নয় তাদের সচেতন করে তোলার লক্ষ্যে ছাত্রছাত্রীরা এগিয়ে আসতে পারে। পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন পোস্টার, ফেস্টুন তৈরি করে শোভাযাত্রার মাধ্যমে, বিদ্যালয়ে অরণ্য সপ্তাহ বা বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মতো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এ কাজে তারা সামিল হতে পারে। বৃক্ষরোপণ ও বন সংরক্ষণের ব্যাপারে, বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ বা জলদূষণ রোধে তারা সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে নিজেদের দাবি জানাতে পারে। প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষতি সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করতে পারে।

দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার আবেদন জানিয়ে আলোচনা সভা ও পথনাটিকার আয়োজন করতে পারে। এছাড়াও ক্যুইজ, বক্তৃতা, বিতর্ক, আলোচনা সভা আয়োজনের মধ্য দিয়ে, পরিবেশ বিষয়ক প্রকল্প নির্মাণ, প্রাচীর পত্র লিখন, দেয়াল পত্রিকা লিখন এবং সংবাদপত্রে প্রতিবেদন রচনার মাধ্যমেও পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রছাত্রীরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে।

উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় আজকে যারা ছাত্র-ছাত্রী তারাই আগামীদিনের নাগরিক। অতএব তারা পরিবেশ সুরক্ষার দায়িত্ব নিলে ভবিষ্যৎকাল দায়িত্বশীল নাগরিক তাদের মধ্যেই খুঁজে পাবে। এভাবেই রক্ষা পাবে পরিবেশ।

PDF DOWNLOAD ZONE 
File Name : পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা
Language : বাংলা
Size : 106 KB
Clik Here To Download

আরও দেখুন :

বাংলার উৎসব রচনা 

আমার প্রিয় ঋতু রচনা 

দূর্গা পূজা রচনা 

শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা 

1 thought on “পরিবেশ রক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকা PDF | পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকা”

Leave a Comment