দূর্গা পূজা রচনা PDF | Durga Puja Rachana in Bengali

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

দূর্গা পূজা রচনা PDF | Durga Puja Rachana in Bengali

দূর্গা পূজা রচনা PDF : সুপ্রিয় পাঠকগন আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম, এই পর্বটিতে আমারা দূর্গা পূজা রচনা সম্পর্কে নিঁখুত ভাবে আলোচনা করেছি। নীচে অনেক গুলি দূর্গা পূজা রচনা প্রদান করা হয়েছে, তোমাদের পছন্দমতো যেকোনো একটি পড়লেই হবে।

রচনা -১

দূর্গা পূজা রচনা :

ভূমিকা : অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে উৎসবমুখর শরতের আবির্ভাব। এই সময়ে আকাশে বাতাসে আগমনী গান ভাসে। শরতের ফুল শিউলির বিছানো পথে জগজ্জননী অসুরনাশিনী উমা মায়ের আগমন । শরৎ প্রকৃতি এই সময় উৎসবের সাজে সজ্জিত হয় । ঘাসের আগায় শিশিরের মানিক জ্বলে। অপরাজিতার পাপড়িতে রঙ ধরে। পদ্মের বনে উদাসী বাতাস আলপনা আঁকে।

দুর্গাপুজোর পুরাণ ইতিহাস : ঋতুরাজ বসন্তে মা শারদা বাসন্তী মাতা হিসেবে পূজিতা হন । পুরাণে পাওয়া যায় পুরাকালের রাজ্যচ্যুত রাজা সুরথ নিজ রাজ্য পুনরুদ্ধারের জন্য বসন্ত কালে শক্তির আরাধ্য দেবী দূর্গার আরাধনা ও পূজা করেন। রাক্ষসাধিপতি রাবণকে নিধন করার জন্য দশরথ ও কৌশল্যা তনয় সীতাপতি রামচন্দ্র এই মায়ের বোধন ও আরাধনা শরৎকালে করেছিলেন। যা বাংলা রামায়ণ অনুবাদক কৃত্তিবাসের রামায়ণে পাওয়া যায়।

সর্বজনীন পূজা : দশভুজা, ত্রিনয়নী, মহিষাসুরমর্দিনী দূর্গামায়ের পূজা প্রায় হাজার বছরের পুরানো। অতিতে ধনী সম্ভ্রান্ত ও জমিদার পরিবারে এই পূজা সীমাবদ্ধ ছিল। পরে ঊনবিংশ শতকে পাশ্চাত্য জ্ঞান বিজ্ঞানের আলোকে ভারতবাসীর গণচেতনা বিস্তার ঘটায় সকলের চাঁদার দ্বারা তা বারোয়ারী শারদ্যোৎসবের সূচনা হয়। আজ এই বারোয়ারী পূজাই সার্বজনীন পূজায় পরিণত হয়েছে। বাঙালি জীবনে শারদ্যোৎসব ঐতিহ্যপূর্ণ । যা বর্তমানে জাতীয় জীবনে পরিণত হয়েছে।

প্রতিমার বিবরণ : মা দশভুজা, সিংহবাহিনী, অসুর নাশিনী হিসেবে নিরতা। মায়ের বামে শক্তির আধার দেব সেনাপতি কার্তিক ময়ূর বাহনে এবং হংসবাহিনী জ্ঞানের দেবী শ্বেত পদ্মাসনা মা সরস্বতী। দেবীর ডাইনে সর্বাসিদ্ধিদাতা গনেশ ইঁদুরের উপর উপবিষ্ট আর ভাগ্যের সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষী রয়েছেন। দেবীর একপাশে কলাবউ ঘোমটা মাথায় দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। মায়ের এই অপূর্ব শ্রীমূর্তি দেখে সকল ভক্তবৃন্দ ও ভক্তিমতী মা বোনরা মায়ের আরাধনায় নিমগ্ন হন –

‘ জাগো, তুমি জাগো, জাগো দূর্গা জাগো দশপ্রহরণধারিণী অভয়াশক্তি বলপ্রদায়িণী, তুমি জাগো।’

পূজার বর্ণনা : শুক্লা ষষ্ঠীর সান্ধ্য সময়ে বেল গাছের মূলে মায়ের বোধন। এরপর মায়ের অধিবাস সম্পন্ন হয়। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী তিথিতে মহা সমারোহে মায়ের যাবতীয় পূজা পদ্ধতি চলে। ঢাকের বাদ্যি ও কাঁশরের ধ্বনিতে মুখরিত হয় বাংলার আকাশ বাতাস। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে সন্ধিপূজা হয়। এই সন্ধিপূজাতে বলিদান হিসেবে আখ বা চালকুমড়ো দেওয়া হয়। দশমী তিথিতে অপরাজিতা পূজা হয়। সেই সময় বড়ো ঘটের মায়ের প্রতিবিম্বকে বিসর্জন দেওয়া হয়। পুজোর সময় মায়ের কাছে কামনা করা হয়-

“মধুকৈটভবিধ্বংসি বিধাতৃবরদে নম: । রূপং দেহি জয়ং দেহি যশ দেহি দ্বিষো দেহি ।”

সম্প্রীতির উৎসব : মানুষে মানুষে নানা পারস্পরিক বিবাদ বিসংবাদ ভুলে সকলের আলিঙ্গন করে। সকলেই এই সর্বজনীন উৎসবে মেতে ওঠেন। আনন্দ উপভোগ করেন। মায়ের মঙ্গলময় অনুভূতি অনুভব করেন।

প্রবাসীদের ঘরে ফেরা : জীবন জীবিকার সন্ধানে দূর দেশে পাড়ি দেয় মানুষেরা। তবে এই পূজাকে কেন্দ্র করে বাড়ি ফেরার জন্য দীর্ঘ সময়ে প্রতীক্ষার অবসান ঘটে। মেলাতে যেমন পরিচিত সকলের সাথে বহুদিন পর দেখা হয় তেমনি অচেনা মানুষের সাথেও নতুন পরিচয় ভাব বিনিময় ঘটে।

উপসংহার : বর্তমানে দূর্গাপূজা ধর্মীয় উৎসব নয় তা বিশ্ব ভ্রাতৃত্ববোধ ও সম্প্রীতি মিলন মৈত্রীর উৎসব। আনন্দময়ী গুণরূপা প্রাণদাত্রী অন্নদার আগমনে আনন্দ দেশ ভরে ওঠে। সকলেই নতুন ভাবে নতুন সাজে সেজে উৎসবের আনন্দ উপভোগ করেন। সর্বহারা যারা তারাও এই পূজার অংশীদার আয়োজক তথা মাতৃ আরাধনায় নিমগ্ন থাকেন।

রচনা -২

দূর্গা পূজা রচনা :

ভূমিকা : দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড়ো উৎসব। সারা ভারতেই দুর্গাপূজা হয়। সারা বছরের দুঃখ-কষ্ট, ক্লান্তি দূর করতে দেবী দুর্গা আসেন আশ্বিন মাসে।

দেবীর বর্ণনা : দেবী দুর্গার বাহন সিংহ। তাঁর পায়ের নীচে শূলবিদ্ধ মহিষাসুর। দুর্গার দশটি হাত। তাঁর প্রত্যেকটি হাতেই বিভিন্ন রকম অস্ত্র। দেবীর ডানদিকে সম্পদের দেবী লক্ষ্মী, বাম দিকে বিদ্যার দেবী সরস্বতী। লক্ষ্মীর ডান দিকে থাকেন সিদ্ধিদাতা গণেশ, সরস্বতীর বাম দিকে থাকেন দেব সেনাপতি কার্তিক। লক্ষ্মীর বাহন পেঁচা, সরস্বতীর বাহন হাঁস। গণেশের বাহন ইঁদুর, কার্তিকের বাহন ময়ূর।

পূজার বিবরণ : সাধারণত আশ্বিন মাসে দেবীর পূজা হয়। শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন হয়। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীতে মহা সমারোহে দেবীর পূজা হয়। দেবীর সামনে নৈবেদ্য দিয়ে মন্ত্রপাঠ করে পূজা হয়। তার পর আরতি হয়। কোথাও কোথাও ছাগল, মহিষ বা কুমড়ো বলি দেওয়া হয়। দশমীর দিন নদী বা বড়ো জলাশয়ে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। এরপর শুরু হয় প্রীতি ও শুভেচ্ছা বিনিময় এবং আশীর্বাদ প্রার্থনা।

পূজার আনন্দ : পূজা আসার অনেক আগেই শুরু হয়ে যায় কেনা-কাটা। বিভিন্ন দোকানে ভিড় বাড়তে থাকে। পূজার কয়েক দিন আগে থেকে স্কুল কলেজ অফিস সবই বন্ধ হয়ে যায়। প্রবাসীরা বাড়ি ফেরে। পূজার কয়েকদিন প্রতিমা দর্শনের জন্য পূজা মণ্ডপে খুব ভিড় হয়। সারা রাত ধরে প্রতিমা দর্শনের পালা চলে।

উপসংহার : এই উৎসবে শুধু বাঙালি হিন্দুরাই নয়, অন্যান্য ধর্ম ও সম্প্রদায়ের লোকেরাও অংশগ্রহণ করে।

রচনা -৩

দূর্গা পূজা রচনা :

ভূমিকা : দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব। এটি দুর্গোৎসব বা ষষ্ঠোৎসব নামেও পরিচিত, যার ছয়টি দিন মহালয়া, ষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী এবং বিজয়াদশমী হিসাবে পালিত হয়। এই উৎসবের সব দিনই দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। এটি সাধারণত হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে আশ্বিন মাসে পড়ে। দেবী দুর্গার দশটি হাত রয়েছে এবং প্রতিটি হাতে আলাদা অস্ত্ৰ থাকে।

পূজা প্রণালী : এই উৎসবে পুরো নয় দিন ধরে দেবী দুর্গার আরাধনা করা হয়। তবে, পূজার দিন স্থান অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। মাতা দুর্গার ভক্তরা পুরো নয় দিন বা শুধুমাত্র প্রথম ও শেষ দিনে উপবাস করেন। তারা তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী দেবী দুর্গার প্রতিমা সাজিয়ে প্ৰসাদ, জল, কুমকুম, নারকেল, সিঁদুর ইত্যাদি দিয়ে পূজা করে। প্রতিটি স্থান খুব সুন্দর দেখায় এবং বায়ুমণ্ডল খুব পরিষ্কার এবং বিশুদ্ধ হয়ে ওঠে। মনে হয়, আসলে দেবী দুর্গা সকলের বাড়িতে আশীর্বাদ দিতে আসেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে মায়ের আরাধনা করলে আনন্দ, সমৃদ্ধি, অন্ধকার ও অশুভ শক্তির বিনাশ হয় ।

সাধারণত, কেউ কেউ ৬, ৭, ৮ দিন উপবাসের পর তিন দিন (সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী) পূজা করেন। তারা দেবীকে সন্তুষ্ট করার জন্য সকালে সাত বা নয়টি অবিবাহিত মেয়েকে খাবার, ফল এবং দক্ষিণা প্রদান করে।

পূজা শেষে মানুষ পবিত্র জলে দেবীর প্রতিমা বিসর্জনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ভক্তরা বিষণ্ণ মুখ নিয়ে ঘরে ফিরে মায়ের কাছে প্রার্থনা করে যেন পরের বছর অনেক আশীর্বাদ নিয়ে আসে।

উপসংহার : হিন্দু ধর্মের প্রতিটি উৎসবের পেছনে একটি সামাজিক কারণ থাকে। দুর্গাপূজা পালনের পেছনে সামাজিক কারণও রয়েছে। দুর্গাপূজা অনৈতিকতা, অত্যাচার ও অশুভ শক্তির বিনাশের প্রতীক হিসেবে পালিত হয়। দুর্গাপূজা অনৈতিকতা, অত্যাচার ও প্রতিহিংসামূলক প্রবণতা ধ্বংসের প্রতীক হিসেবে পালিত হয়।

রচনা -৪

দূর্গা পূজা রচনা :

উৎসব মানুষের জীবনে নতুনত্ব আনে। উৎসবের মাঝে আমরা আমাদের একঘেঁয়ে জীবনের ক্লান্তি থেকে মুক্তি পাই। সেই মুক্তি আমাদের আনন্দ দেয়। উৎসবের মাঝে আমরা পরস্পরের সঙ্গে মিলনের সুযোগ পাই। সেই মিলন পরকে আপন করার কাজে সাহায্য করে।

বাঙালির জীবনে উৎসব এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে, তাই যে-কোনো একটা উপলক্ষ্য পেলেই উৎসব- অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। লোকে বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। দুর্গোৎসব সেই পার্বণের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ। দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে শরৎকালের এই উৎসব দেশের আপামর জনগণকে মাতিয়ে তোলে। অনুষ্ঠানের বেশ কিছুদিন আগে থেকে চলে প্রস্তুতি। চাঁদা তোলা, মণ্ডপ নির্মাণ, প্রতিমা তৈরি প্রভৃতি কতই না কাজ।

রাবণকে বধ করার জন্য দেবী দুর্গার আশীর্বাদ পেতে রামচন্দ্র বসন্তকালের বদলে অকালে এই পূজা করেন। তাই এই শারদোৎসবকে ‘অকাল বোধন’ও বলা হয়। দশভুজা দেবী দুর্গা সন্তান-সন্তুতি নিয়ে মর্ত্যে আবির্ভূতা হন। সিংহবাহনা দেবীর দশ হাতে দশ অস্ত্র। তিনি মহিষাসুরকে বধ করার জন্য যুদ্ধে নিরতা। তাঁর ডানপাশে বাহন সহ লক্ষ্মী-গণেশ, বাঁ-পাশে বাহন সমেত সরস্বতী ও কার্তিক।

শরৎকালের শুক্লা ষষ্ঠীতে দেবীর বোধন। দশমীতে বিসর্জন। এই কটা দিন পাড়ায় পাড়ায় আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত বন্ধ থাকে। শিশু থেকে বৃদ্ধা প্রায় সকলই নতুন জামা-কাপড় পরে প্রতিমা দর্শনে বেরিয়ে পড়ে। পথ যেন জনসমুদ্র। দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু বাঙালিরই নয়, সকল ধর্ম-জাতি নির্বিশেষে এটি সকলেরই উৎসব। ভারতের অনেক স্থানে ও সুদূর বিদেশেও অনেকেই এই অনুষ্ঠানে মেতে ওঠে। তবে পশ্চিমবঙ্গেই এই উৎসবের মাতোয়ারা রূপটি প্রকট। উৎসবের সমাপ্তি দিনটি ‘বিজয়া দশমী’ নামে পরিচিত। প্রতিমা বিসর্জনের পর গুরুজনকে প্রণাম, সমবয়সিদের আলিঙ্গন করার মাঝে এক বিশেষ অনুভূতি জাগে। একে অপরকে মিষ্টিমুখ করায়।

হিন্দু বাঙালিদের কাছে দেবী দুর্গা যেন ঘরের মেয়ে। তাই দুর্গোৎসবের প্রথম দিনটি যেন শ্বশুর ঘর থেকে মেয়ের বাপের বাড়ি আসা। ঘরে ঘরে আনন্দের বন্যা বয়। বিজয়া দশমীর দিনে কন্যাকে বিদায় দিয়ে মায়ের ব্যথাতুর মন ও সজল চোখ বিষণ্ণ পরিবেশ গড়ে তোলে। উৎসব শেষে সবাই দুঃখভরা মন নিয়ে আগামী বছরের জন্য প্রতীক্ষায় থাকে। শুরু করে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

রচনা -৫

দূর্গা পূজা রচনা :

সমগ্ৰ বাঙালি জাতির প্রাণ এই পূজার মধ্যে অর্ন্তনিহিত থাকে। বর্ষার কালো মেঘ সরিয়ে শরতের রোদ্দুর উঁকি দিলেই বাঙালির জাতির মনে হিসেব কষতে শুরু করে দেয় মা দূর্গার আগমনের আর কতদিন বাকি। প্রতিদিনকার পরিচিত গতানুগতিক জীবনে ব্যাস্ত বাঙালি গোটা একটা বছর শত উৎসবের মধ্যেও অধীরভাবে প্রতীক্ষা করে থাকে এই মহোৎসবের জন্য। শরৎ এর মেঘ আর শিউলির গন্ধ দশভুজার আগমনকে উন্মুক্ত চিত্তে স্বাগত জানায়। বাঙালির জীবনে দুর্গোৎসবের এই আনন্দকে তুলে ধরে আজকের বিষয় দূর্গা পূজা রচনা।

ভূমিকা : “বাঙালীর বারো মাসে তেরো পার্বণ”। তার মধ্যে অন্যতম হল বাঙালির ‘দুর্গোৎসব’। কাশ বনের দোলায় দেবীপক্ষের সূচনা বাঙালির মনকে আলোড়িত করে। বাঙালির দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটে মহালয়ার শুভ বন্দনাতে। শরৎ এর মেঘ আর শিউলির গন্ধ দশভুজার আগমনকে উন্মুক্ত চিত্তে স্বাগত জানায়। দুর্গাপূজা হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ উৎসব। এ উৎসবে সকলেই আনন্দে যেতে ওঠে। বাঙালির ঘরে ঘরে আনন্দের স্রোত বইতে থাকে ।

প্রস্তুতি : এ সময় প্রত্যেক বাঙালি হিন্দুই সাধ্যমতো নতুন নতুন জামাকাপড় কিনে থাকে। এজন্যে পূজার প্রায় একমাস আগে থেকেই জামাকাপড়ের দোকানে ভিড় পড়ে যায়। পূজা উপলক্ষ্যে প্রায় একমাস স্কুল কলেজ বন্ধ থাকে। অফিস আদালতও এসময় কয়েকদিন ছুটি থাকে। যাঁরা দূরে বা বিদেশে থেকে চাকরি বা লেখাপড়া করেন, তাঁরা এ সময়ে বাড়ি ফিরে আসেন।

সময় : আমাদের এই পশ্চিমবঙ্গে শরৎকালে ও বসন্তকালে বছরে মোট দু-বার দুর্গাপূজা হয়। শরৎকালের পূজাকে ‘শারদীয়া পূজা’ আর বসন্তকালের পূজাকে ‘বাসন্তী পূজা’ বলা হয়। আমাদের দেশে শারদীয়া পূজারই প্রচলন বেশি।

পটভূমি : হিন্দু-পুরাণে কথিত আছে, পুরাকালে মহারাজ সুরথ তাঁর রাজ্য হারিয়ে ফেলেন। সেই হারানো রাজ্য ফিরে পাবার উদ্দেশ্যে রাজা দুর্গা দেবীর পূজা করেন। তদবধি হিন্দুরা বসন্তকালেই দুর্গাপূজা করতেন। লংকার যুদ্ধে বিপন্ন রামচন্দ্র আবার দেবী দুর্গার অকাল বোধন করে শরৎকালে। তখন থেকেই হিন্দুরা শরৎকালে এ পূজা করে আসছে। দুর্গাপূজা বলতে হিন্দুদের হিন্দুদের শারদীয় পূজাকেই বোঝায়।

বর্ণনা : দুর্গা তাঁর বাহন সিংহের ওপর দাঁড়িয়ে থাকেন, তাঁর বাঁদিকে বীণা হাতে তাঁর এক কন্যা সরস্বতী, ডানদিকে অন্য কন্যা লক্ষ্মী। সরস্বতীর বাঁদিকে তিরধনুক হাতে এক পুত্র কার্তিক আর লক্ষ্মীর ডানদিকে আর-এক পুত্র হস্তীমুখ গণেশকে দেখা যায়। দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করছেন।

পূজা প্রণালী : শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে ঘট বসিয়ে পূজার সূচনা করা হয়। একে বলে “বোধন”। এরপর সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী এই চারদিন ধরে পূজা চলে। দশমীর রাত্রিতে প্রতিমাকে বিসর্জন দেওয়া হয়।

উপসংহার : উৎসবের দুটি দিক; একটি ব্যাক্তির, আর অন্যটি হল সমষ্টির। দুর্গা পুজোয় মূলত আমাদের সার্বিকভাবে চোখে পড়ে সমষ্টির সমাবেশ। ব্যাক্তিগত জীবনে কেউ হিন্দু কেউ মুসলিম, কেউ শিথ, কেউ বা ধর্মে বিশ্বাসী নয়; আবার কেউ ধনী, কেউ বা দরিদ্র- এই সকল প্রকার ভেদাভেদ দূরে সরিয়ে সবাই মিলেমিশে পরম আনন্দে আমরা এই উৎসবে মেতে উঠি। বিসর্জনের পর ছোটোরা বড়োদের প্রণাম করে। বড়োরা পরস্পরে আলিঙ্গন করেন। মিষ্টি খাওয়ানো হয়। তার পর পূজোর ছুটি শেষ হতে না হতেই পড়াশোনায় মন দিতে হয়। স্কুল খুললেই পরীক্ষায় ঘন্টা বেজে ওঠে।

PDF DOWNLOAD ZONE
File Name : দূর্গা পূজা রচনা
Language : বাংলা
Size : 103 KB
Clik Here To Download
আরও দেখুন :

শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা  

Leave a Comment