শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা PDF | শিক্ষক দিবস উপলক্ষে কিছু কথা | Teachers Day Speech in Bengali

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা PDF | শিক্ষক দিবস উপলক্ষে কিছু কথা | teachers day speech in bengali

শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা : সুপ্রিয় পাঠকগন আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম, এই পর্বটিতে আমারা শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা সম্পর্কে শিক্ষক দিবস উপলক্ষে কিছু কথা নিঁখুত ভাবে আলোচনা করেছি। নীচে অনেক গুলি শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা প্রদান করা হয়েছে।

শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা :

আমাদের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের জন্মদিন উদযাপনের জন্য ৫ই সেপ্টেম্বর সারা ভারতবর্ষ জুড়ে শিক্ষক দিবস পালিত হয়। যিনি ১৮৮৮ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আজকের এই পর্বটিতে কতগুলি শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা সম্পর্কে শেয়ার করা হয়েছে। এবং নীচে শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা PDF প্রদান করা হয়েছে তোমরা চাইলে ডাউনলোড করে নিতে পারো।

বক্তৃতা -১ 

শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা :

আজ ৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মহতী অনুষ্ঠানে উপস্থিত আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক-শিক্ষিকা মহাশয়/মহাশয়া ও মা- বাবা, সকল অথিতিবৃন্দকে শ্রদ্ধাপূর্বক প্রনাম জানাই; এছাড়া আমার স্নেহের সহপাঠী, ভাই-বোন ও দাদা-দিদি সকলকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শিক্ষক দিবস
উপলক্ষে দু-একটি কথা উপস্থাপন করছি।

আমরা আমাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে জীবন পাই, কিন্তু সেই জীবন কীভাবে কাটাতে হয় তা শিক্ষকের চেয়ে ভাল কেউ বলতে পারে না। পিতামাতার পরে, আমাদের সাফল্যের পুরো কৃতিত্ব আমাদের শিক্ষকদের। শিক্ষক, শিক্ষিকারা হলেন আমাদের জীবনের প্রদীপ, যারা নিজেদের পুড়িয়ে আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করে জ্ঞানের আলোয় ভরিয়ে তোলেন।

একজন সফল মানুষের পেছনে শিক্ষকের যে কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে, তা নতুন করে বলার কিছু নেই। শিক্ষক মহাশয় শুধু যে শিক্ষাদানই করেন তাই নয়। তিনি একজন শিক্ষার্থীকে জীবনে চলার পথে পরামর্শ দেন, ব্যর্থতায় পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে একজন আদৰ্শ মানুষ হওয়ার শিক্ষা দান করেন ।

তেমনি আজকের এই বিশেষ দিনটির তাৎপর্য খুঁজতে গিয়ে জানা যায় যে,একজন আদর্শ শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ ৫ই সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮ তামিলনাড়ুর তিরুট্টানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি । তিনি একাধারে রাজনীতিবিদ,দার্শনিক ও অধ্যাপক তিনি ছাত্রজীবনে অতি মেধাবী ছিলেন।

জীবনে কোনও পরীক্ষায় দ্বিতীয় হননি। বিভিন্ন বৃত্তির মাধ্যমে তাঁর ছাত্রজীবন এগিয়ে চলে। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন৷ তার বিষয় ছিল ‘বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্বকল্পনা’। বিশ্বের দরবারে তিনি অতি জনপ্রিয় দার্শনিক অধ্যাপক হিসাবে ও পরিচিত ছিলেন।

তিনি ১৯৫৪ সালে ভারতরত্ন সম্মান পান। প্রথম জীবনে তিনি মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করেন। এমন কি তিনি এই বঙ্গের ক্যালকাটা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও করেছেন। এক সময়ে তিনি দেশ-বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অধ্যাপনার আমন্ত্রণও পেয়েছেন। তিনি ভারতবর্ষের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তাঁর গুণমুগ্ধ ছাত্ৰ ও বন্ধুরা তাঁর জন্মদিন পালন করতে চাইলে, তিনি বলেন জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস উদ্যাপিত হয় তবে আমি বিশেষরূপে অনুগ্ৰহ লাভ করবো ।

তিনি বলেন আমাদের শিক্ষকরা শুধু আযাদের শেখান না, আমাদের ভালো-মন্দের পার্থক্য বুঝতেও সাহায্য করেন।’ তাঁর এই বক্তব্য আমাদের বলে যে আমাদের জীবনে শিক্ষক থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এবং আমরা কত ভাগ্যবান যে আমরা আমাদের শিক্ষকদের কাছ থেকে এত কিছু শিখেছি, এখনও শিখছি এবং ভবিষ্যতেও এভাবে শিখতে থাকব। সেই থেকে এই দিনটি ভারতে শিক্ষক দিবস রূপে পালিত হয়ে আসছে।

তাই আজ একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ তথা ভারতের দেখা স্বপ্নগুলো বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে শিক্ষক মহাশয় সদাসর্বদা আমাদের সহিত বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবে, পথপ্রদর্শক ও নির্দেশনা দান করার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে সর্বাগ্রে নিয়ে যাওয়া সম্ভব করবে।
তাই এই সময় আমাদের সর্বদা করণীয় হবে শিক্ষক তথা গুরুজনদের শ্রদ্ধা জানানো, একে অন্যের সাহায্য করা অর্থাৎ সবাই মিলে চেষ্টা করে নব আঙ্গিকের পথে এগিয়ে চলা।

সবশেষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সভ্যগণকে আরো একবার শ্রদ্ধাপূর্বক প্রনাম জানাই এবং বন্ধু-বান্ধব সহপাঠীবৃন্দ তথা সমগ্র দেশের সাহায্যকারী সকলকে শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমার ক্ষুদ্র বক্তব্য এখানেই শেষ করলাম।

বক্তৃতা -২

শিক্ষক দিবসের ছোট বক্তৃতা :

উপস্থিত সম্মানীয় অতিথি প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকা ও আমার সহপাঠীবৃন্দদের জানাই শিক্ষক দিবস উপলক্ষে আমার আন্তরিক অভিনন্দন। আজ ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস উদযাপন করার জন্য এই বিশেষ অনুষ্ঠানে আমরা উপস্থিত হয়েছি।

স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ও দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন ছিলেন, একজন আদর্শ শিক্ষক ও মহান দার্শনিক, তার জন্মদিন কে কেন্দ্র করেই ভারতের শিক্ষক দিবস পালিত হয় ।

১৯৬২ সালের ৫ই সেপ্টেম্বর থেকে আমাদের দেশ ভারতবর্ষে শিক্ষক দিবস পালন হয়ে আসছে। তিনি ছিলেন একজন ভারতরত্ন প্রাপক রাষ্ট্রপতি ও মহান পন্ডিত ও শিক্ষক। এই আদর্শ শিক্ষক জন্মগ্রহণ করেছিলেন তামিলনাড়ুর তিরুটানিতে, এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে ।

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার গুণমুগ্ধ ছাত্র ও বন্ধুরা, তার জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন, জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস পালন করেন, তবে তিনি খুব বেশি খুশি হবেন সেই থেকেই এই দিনটি ভারতে শিক্ষক দিবস রূপে পালিত হয়ে আসছে।।

শিক্ষকরা হলেন জাতির মেরুদন্ড,এই শিক্ষকরাই পারে যুবসমাজকে জ্ঞানের আলো জ্বেলে বিশ্বের সেরা চূড়ায় পৌঁছে দিতে। এই দিনটি হল শিক্ষার্থীর জন্য তাদের শিক্ষকদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করার বিশেষ দিন, এই দিনটি মহা সম্মানের সাথে পালিত হয়ে থাকে।

তাই আমাদের উচিত সবসময় শিক্ষকদের আদর্শ পরামর্শ মেনে চলা ও তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।

বক্তৃতা- ৩

শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা :

সুপ্রভাত, প্রধান শিক্ষক মহাশয়, আজকের প্রধান অতিথি মহাশয়, সকল আমার সহকর্মীবৃন্দ এবং স্নেহের ছাত্র-ছাত্রীরা সকলকে জানাই
দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা। আজ ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস এই দিনটি একজন ছাত্র ও শিক্ষক উভয়ের কাছেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা দিন।

এই দিনটি একজন রাজনীতিবিদ, বিচক্ষণ দার্শনিক এবং সর্বোপরি একজন মহান শিক্ষক এর কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি হলেন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান। ১৮৮৮ সালে আজকের দিনেই তামিলনাড়ুর এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

তিনি ছিলেন একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র। জীবনের কোনো পরীক্ষাতেই প্রথম ছাড়া দ্বিতীয় হননি। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি তার চাকরি জীবন শুরু করেন মাইসরো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা দিয়ে। তারপর, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বেনারস বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৩১ সালে ইংরেজরা তাকে নাইটহুড উপাধিতে সম্মানিত করেছিলেন। এই শিক্ষক দিবস শুরু হওয়ার পেছনে একটি ছোট্ট ঘটনা আছে।

তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক হওয়ার কারণে, তার অসংখ্য গুণমুগ্ধ ছাত্র ও ছাত্রী ছিলেন। ১৯৬২ সালে রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর ওনার শিক্ষার্থীরা ও বন্ধুরা ৫ই সেপ্টেম্বর তার জন্মদিন পালন করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাতে তিনি সম্মতি প্রদান না করে বলেন তার জন্মদিনের পরিবর্তে, ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয় তাহলে তিনি বেশি খুশি হবেন৷ এই পরিপেক্ষিতে ১৯৬২ সালের পর থেকে ৫ই সেপ্টেম্বর দিনটি ভারতবর্ষে শিক্ষক দিবস হিসেবে উদযাপন করা শুরু হয়।

ডাঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান বলেছেন যে, ‘পুরো পৃথিবী একটি স্কুল, যেখানে আমরা নতুন বা অন্য কিছু শিখি। আমাদের শিক্ষকরা শুধু আমাদের শেখান না, আমাদের ভালো- মন্দের পার্থক্য বুঝতেও সাহায্য করেন’ তাঁর এই বক্তব্য নির্দেশ করে যে আমাদের জীবনে শিক্ষক থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

প্রকৃতপক্ষে শিক্ষক দিবস উদযাপনের উদ্দেশ্য হল শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক স্নেহের বন্ধন কে আরো দৃঢ় করা। কিন্তু একজন শিক্ষক হিসেবে আমার মনে হয় এই বন্ধন আস্তে আস্তে শিথিল হয়ে পড়ছে। এর কারণ বর্তমান সময়ে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নম্রতা, ভদ্রতা, সঠিক ব্যবহার, বড়দের প্রতি সম্মান, নীতি শিক্ষার অভাব গভীরভাবে লক্ষ্য করতে পারি যা খুব দুঃখজনক। যদিও এর কারণ হিসেবে আমরা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের দোষারোপ করতে পারি না।

আমার মনে হয়, এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, সমাজ ও বাবা-মা। যদি আমরা আজ থেকে কিছু বছর পূর্বে যাই তাহলে দেখবো শিশু অবস্থায় আমরা নীতি শিক্ষা পেয়েছি বাবা-মা, দাদু, ঠাকুমার কাছ থেকে। কিন্তু এখনকার সময়ে বাবা-মা বাচ্চাদের উপর কম সময় দেন আর স্কুলের ওপর বেশি ভরসা করেন।

অন্যদিকে, স্কুলের শিক্ষকেরা সবসময় চেষ্টা করে ছাত্রদের পুঁথিগত শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে তাদের একাডেমিক স্কোর বৃদ্ধি করা। এর ফলে তৈরি হয় এক শূন্যস্থান, সেই শূন্যস্থান হলো নীতি শিক্ষার। যদি এই শূন্যস্থান নিয়েই শিশুরা এগিয়ে চলে তাহলে হয়তো আমরা, প্রযুক্তিগত ভাবে অনেক উন্নতি করব কিন্তু কখনোই এক ভালো সমাজ গড়ে তুলতে পারবো না। তাই আমি একজন শিক্ষক ও অভিভাবক হিসেবে বলতে চাই, আমাদের শিশুদের মধ্যে পুঁথিগত শিক্ষার সাথে সাথে নীতিগত শিক্ষাকে সমভাবে প্রেরণ করতে হবে। তাহলে হয়তো আমরা শিক্ষক দিবসের প্রকৃত তাৎপর্যকে উদ্ভাসিত করতে পারবো।

বক্তৃতা- ৪

শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা :

সুপ্রভাত মাননীয় প্রধান শিক্ষক মহাশয়, আমার সকল প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ, বন্ধুবান্ধব, দাদা দিদি দের জানাই শিক্ষক দিবসের অসংখ্য শুভেচ্ছা। আমি অমিত মণ্ডল, আজকের এই বিশেষ দিনে আমাকে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের সম্পর্কে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে এই জন্য আমি নিজেকে খুব গর্বিত অনুভব করছি।

আজ ৫ই সেপ্টেম্বর ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান এর জন্মদিন। ওনার এই জন্মদিন কে উৎসর্গ করেই অনুষ্ঠিত হয় শিক্ষক দিবস। অবশ্য এই শিক্ষক দিবস উদযাপনের পরামর্শ তিনি নিজেই দিয়েছিলেন। একবার ওনাকে তার ছাত্ররা জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি কি তার জন্মদিন উদযাপন করতে দেবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি তার ছাত্রদের পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, ছাত্ররা সমাজে শিক্ষকদের অবদানকে সম্মান জানাতে ওই দিনটি যদি শিক্ষক দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয় তাহলে তিনি বেশি আনন্দিত হবেন।

প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন শিক্ষক ছিলেন তাই তিনি, শিক্ষকদের প্রয়োজনীয়তাকে উপলব্ধি করতেন, তিনি বলতেন “True Teachers are those who help us to think for ourselves” প্রকৃত শিক্ষক তিনি যিনি আমাদের ভাবতে শেখান। ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ এর আরো বিশেষ পরিচয় হলো তিনি ছিলেন একজন দার্শনিক, ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি।

এছাড়া তিনি, নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য 11 বার, সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য 16 বার মনোনীত হয়েছিলেন। প্রকৃতপক্ষে একজন শিক্ষকই পারে দেশ, সমাজের পরিবর্তন করতে, তাই শিক্ষকদের অবদানকে আমরা কোনদিনই ভুলতে পারি না। শিক্ষকের গুরুত্ব কতটা তা আমরা একটি ছোট্ট মহাভারতের কাহিনী থেকে জানার চেষ্টা করবো।

মহাভারতে আমরা দেখতে পাই গুরু দ্রোনাচার্য কৌরব এবং পাণ্ডবদের শুধু শিক্ষা দানই করেননি, তিনি তাদের প্রত্যেকের সুপ্ত প্রতিভাকে উপলব্ধি করেছেন এবং সেই প্রতিভার ভিত্তিতে শিক্ষাদান করেছেন। তাদের প্রত্যেককেই আলাদা আলাদা ক্ষেত্রে পারদর্শী করে তোলেন।

নাহলে, অর্জুনকে যদি গদার শিক্ষা এবং ভীমকে ধনুর্বিদ্যা শেখানো হতো, তাহলে হয়তো অর্জুন কোনদিনও শ্রেষ্ঠ ধনুকধারী এবং ভীম শ্রেষ্ঠ গদাধারী হতে পারতেন না। এছাড়া অন্য এক ঘটনা শিষ্য একলব্যের তার গুরু দ্রোনাচার্যের প্রতি ভক্তি, ইহা আমাদের শিক্ষা দেয়, একজন আদর্শ শিষ্যের তার শিক্ষকের প্রতি নিষ্ঠা, ভক্তি, শ্রদ্ধা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, নাহলে একজন শিষ্য তার উন্নতির শিখরে পৌঁছতে পারে না। শিক্ষক হলেন সমাজ তথা মানুষ তৈরীর কারিগর। একজন মা সন্তানকে জন্ম দেয়, কিন্তু সত্যিকারের একজন শিক্ষক সেই জীবনকে আকার ও আকৃতি দেন, শিশুদের মনে ন্যায় নীতি এবং মূল্যবোধ সৃষ্টি করেন।

তাই শিক্ষকদের ছাড়া জীবন অর্থহীন। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে হয়তো আমরা শিক্ষকদের গুরুত্বকে অনুভব করার চেষ্টা করি না, কিন্তু শিক্ষকের গুরুত্ব সব সময় ছিল, আছে এবং থাকবে। আমি আমার বক্তব্য আর দীর্ঘায়ু না করে একটি ছোট্ট উক্তি দ্বারা বক্তব্য শেষ করব।

এখন ইন্টারনেটে পেয়ে যাই সব ধরনের জ্ঞান কিন্তু সেখানে কি আছে ভালো-মন্দের বিচার তাই শিক্ষকদের আছে অনেক বড় অবদান। কিভাবে জানাই আপনাদের ধন্যবাদ যারা দিয়েছেন আমাদের নিঃস্বার্থ জ্ঞান তাই প্রতিমুহূর্তে চাই আপনাদের আশীর্বাদ।

বক্তৃতা- ৫

শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা :

উপস্থিত সম্মানীয় সভাপতি, বিশেষ অতিথি, শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, শিক্ষক এবং আমার প্রিয় সহপাঠীবৃন্দ আপনাদের সবাইকে স্বাগতম। আজ ৫ই সেপ্টেম্বর আমরা সকলে শিক্ষক দিবস উদযাপন করার জন্য উপস্থিত হয়েছি। প্রথমেই আমার শ্রদ্ধেয় সকল শিক্ষকদের আমার প্রণাম ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

শিক্ষক ও শিষ্যের মধ্যে শিক্ষা ও জ্ঞানের সম্পর্ক রয়েছে। শিক্ষা এবং শিক্ষক উভয়ই আমাদের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমাদের বাবা-মায়ের পরে তাঁদের ভূমিকা আমাদের জীবনকে সাজাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আজ ৫ই সেপ্টেম্বর স্বাধীন ভারতের প্রথম উপ- রাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্মদিন, যাঁর স্মরণে ভারতবর্ষে আমরা সবাই শিক্ষক দিবস উদযাপন করি।

ড: সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ ছিলেন একজন আদর্শ শিক্ষক, মহান দার্শনিক এবং বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী। ভারত সরকার ১৯৫৪ সালে তাঁকে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ‘ভারতরত্ন’ দিয়ে সম্মানিত করে। তিনি সর্বোচ্চ পুরস্কার প্রাপ্ত দেশের প্রথম ব্যক্তি। ভারতবর্ষের সকল বিদ্যার্থী তাঁকে সম্মান জানানোর জন্য তাঁর জন্মদিনে শিক্ষক দিবস পালন করে থাকে।

রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তাঁর ছাত্ররা তাঁর জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন “জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ সেপ্টেম্বর যদি ‘শিক্ষক দিবস’ উদ্‌যাপিত হয় তবে আমি বিশেষরূপে অনুগ্রহ লাভ করবো।” সেই থেকে প্রতি বছর ৫ই সেপ্টেম্বর ভারতবর্ষে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। শিক্ষক দিবসের শুরুতে তিনি আমাদের জীবনে শিক্ষকদের গুরুত্বের কথা জানান।

শিক্ষকরা আমাদের সমাজের মেরুদণ্ড হয়ে রয়েছেন। তাঁরা ছাত্রদের ব্যক্তিত্ব গঠনে যেমন অংশ নেন, তেমনই সঠিক শিক্ষা ও বোধ গঠনে সহায়তা করেন। দিশা দেখিয়ে দেন আগামীর পথ চলার। সব শিক্ষা পুঁথিগত হয় না, আর পুঁথি থেকে নেওয়া শিক্ষাকে বাস্তবে প্রয়োগ করে দেখানোর গুরুদায়িত্ব থাকে শিক্ষকদের কাঁধে। সেই পথে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেন আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকারা।

দেশের আদর্শ নাগরিক হিসেবে ছাত্রদের গড়ে তোলার ব্রত নিয়ে শিক্ষকরা নিজেদের মতো করে পথ চলেন। দেখিয়ে দেন ঠিক এবং ভুলের রাস্তা। জাতির শক্তি বৃদ্ধি করতে, বিশ্বকে আরও বলিষ্ঠ করতে শিক্ষকদের অবদান অতুলনীয়।

শিক্ষকের স্থানের সঙ্গে অন্য কারোর স্থানের তুলনা হয় না। জীবনের চলার পথে অভিভাবক হিসাবে মা বাবার গুরুত্ব যতটা, ততটাই শিক্ষকের গুরুত্ব। শিক্ষকরা হলেন আমাদের জীবনের প্রদীপ, যাঁরা নিজেদের পুড়িয়ে আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে থাকা অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর করে জ্ঞানের আলোয় ভরিয়ে তোলেন।

সুতরাং আমাদের উচিত সব সময় তাদের যোগ্য সম্মান ও ভালোবাসা দেওয়া। সেই জায়গা থেকে ৫ সেপ্টেম্বর আজকের দিনটি আমাদের সকলের কাছে উদযাপনের দিন। তাঁরা ক্রমাগত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমাদের শিক্ষিত করে তোলেন। তাঁদের অনুপ্রেরণা জন্যই আমরা জীবনে সফলতা অর্জন করতে পারি।

আমাদের উচিত সবসময় তাদের উপদেশ মেনে চলা, শিক্ষক তথা গুরুজনদের শ্রদ্ধা জানানো, একে অন্যের সাহায্য করা অর্থাৎ সবাই মিলে চেষ্টা করে নব আঙ্গিকের পথে এগিয়ে চলা।

সবশেষে অনুষ্ঠানে উপস্থিত আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক-শিক্ষিকাগণ, সহপাঠী বৃন্দ ও শিক্ষার সাথে জড়িত সকল সভ্যগণকে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম ও শুভেচ্ছা জানাই। ধন্যবাদ।

PDF DOWNLOAD ZONE 
File Name : শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা
Language : বাংলা
Size : 128 KB
Clik Here To Download

আরও পড়ুন :

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন ও শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল ?

4 thoughts on “শিক্ষক দিবসের বক্তৃতা PDF | শিক্ষক দিবস উপলক্ষে কিছু কথা | Teachers Day Speech in Bengali”

  1. ডক্টর সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মদিন তথা শিক্ষক দিবসের যেসব বক্তৃতা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তার নমুনা গুলি খুবই সুন্দর হয়েছে। সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রদানকারীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, সম্পাদক, পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির মুখপত্র শিক্ষা ও শিক্ষক। সম্পাদক, কৃষ্টি কিরণ।

    Reply

Leave a Comment