শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা PDF

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা PDF

শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা : সুপ্রিয় পাঠকগন আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম, এই পর্বটিতে শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে নিঁখুত ভাবে আলোচনা করেছি, যা আপনাদের জন‍্য খুবই হেল্পফুল হবে। 

শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা :

ভূমিকা : কোনো সন্দেহ নেই, আধুনিক বিশ্ব গণমাধ্যম বা মিডিয়ার দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত। এই একবিংশ শতাব্দীকে তাই অনেকে ‘গণমাধ্যমের শতক’ হিসাবে অভিহিত করেছেন। বিশেষ করে ভারতবর্ষের মত উন্নতিশীল মুক্ত গণতান্ত্রিক দেশে সংবাদপত্র, বেতার, দূরদর্শন, ইন্টারনেট প্রভৃতির মত গণমাধ্যমগুলি যে কি প্রচণ্ড প্রভাবশালী তা আমরা প্রতি মুহূর্তেই উপলব্ধি করতে পারি। গণজাগরণে এই সর্বজনস্বীকৃত গণমাধ্যমগুলির ভূমিকা প্রসঙ্গে আলোচনা তাই একান্ত স্বাভাবিক।

গণমাধ্যম কী : যে মাধ্যম দ্বারা দেশের বেশির ভাগ মানুষকে কোন কিছু বিষয়ে অবগত করানো যায়, এর দ্বারা তাদের উপকার হয় তাকে গণমাধ্যম বলা যায়। এর ভূমিকা ‘বহুবিধা। লোকশিক্ষা, লোকরঞ্জন, প্রচার ইত্যাদি।

অতীত ভারতে গণমাধ্যম : সেকালে ভারতবর্ষে কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক গণমাধ্যম ছিল না। কোনো মুদ্রণযন্ত্রের প্রভাব কার্যকরী হয়নি তখনও কিন্তু ব্রতকথা, যাত্রাগান, পুতুলনাচ, পাঁচালীগান, বাউল, মঙ্গলগান, কীর্তন ইত্যাদি মাধ্যমগুলি লোকশিক্ষা, লোকমনোরঞ্জন ও গণসংযোগের ভূমিকাই পালন করতো।

বর্তমানের গণমাধ্যম : যুগ এগিয়েছে, ক্রমে বিজ্ঞানের উন্নতিতে সংবাদপত্র, বেতার, চলচ্চিত্র, দূরদর্শন, টেপরেকর্ডার, ইন্টারনেট প্রভৃতি মাধ্যমগুলি ব্রতকথা, পুতুলনাচ, বেহুলা- লক্ষীন্দর-চাঁদ সদাগর-বিশ্বমঙ্গল, পাঁচালী ও লোকসাহিত্যের স্থান দখল করেছে।

বর্তমান ভারতের গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমগুলি : ১. সংবাদপত্র- এ বিষয়ে সর্বাগ্রে সংবাদপত্রের কথা উল্লেখ করতে হয়। ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দের ৩১ শে ডিসেম্বর এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদনে দেখা যায় যে ভারতে বর্তমানে দৈনিক ও অন্যান্য পত্রপত্রিকার প্রচারসংখ্যা নিম্নরূপ।
দৈনিক সংবাদপত্র ৫,১৫৭টি, দ্বি-সাপ্তাহিক ৪,৩৩৭টি, সাপ্তাহিক ১৬,৮৭২টি, মাসিক পত্রিকার সংখ্যা ১২,৭৯৬টি। এই সব পত্রপত্রিকাগুলি ইংরাজী এবং ১৮টি প্রধান ভাষা ছাড়াও ৮১ বিভিন্ন ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষাতে প্রকাশিত হয়। বর্তমান একবিংশ শতাব্দীতে এই পরিসংখ্যান একটু পরিবর্তিত হলেও স্বাভাবিকভাবেই লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি পাঠকের উপর সংশ্লিষ্ট এইসব পত্রিকাগুলির প্রভাব অপরিসীম।

২. বেতার : এবারে ভারতের বৈদ্যুতিন গণমাধ্যমের মধ্যে সর্বাধিক প্রচারসম্পন্ন বেতার সংস্থার কথা সর্বাগ্রে আসে। আকাশবাণীর বর্তমানে মোট প্রচার সম্প্রসারণ কেন্দ্র ১৮৫টি, ১৯৩টি ট্রান্সমিটার এবং ৫০টি বিবিধভারতী কেন্দ্র আছে। এইসব বেতার কেন্দ্রের শ্রোতার সংখ্যা কোটি কোটি। বিশেষ করে যেখানে দূরদর্শন পৌঁছায়নি সেই গ্রামীণ এলাকার শ্রোতার কাছে এইসব বেতারকেন্দ্রগুলির প্রভাব অত্যন্ত ব্যাপক।

৩. দূরদর্শন : সব উন্নতিশীল দেশের মত ভারতেও দূরদর্শনের ব্যাপক প্রচার ও প্রসারতা অত্যন্ত সম্প্রসারণশীল। বর্তমানের এই গণমাধ্যমটির জনপ্রিয়তা সর্বাধিক বলা যেতে পারে। কারণ এতে একই সঙ্গে দেখা ও শোনার কাজটা হয়ে থাকে। এতে থাকে সচিত্র তথ্য ও সমস্যার বিবরণ। মাধ্যমটি মানুষের মনোরঞ্জনের অফুরন্ত উৎস ও শিক্ষার বাহন। ভারতের প্রায় পঞ্চাশটি দূরদর্শন কেন্দ্রের অসংখ্য দর্শকের কাছে এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়।

এছাড়া ভারতের মত শত কোটি অধিক জনসংখ্যার দেশে চলচ্চিত্র, ইন্টারনেট, টেপরেকর্ডার, নাটকের মত গণমাধ্যমগুলির ভূমিকাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। স্বাভাবিকভাবে বোঝা যাচ্ছে জনমতের উপর এই সমস্ত গণমাধ্যমগুলির সামগ্রিক প্রভাব কত সুদূরপ্রসারী।

গণমাধ্যমের কুফল : জনজীবনে এইসব গণমাধ্যমগুলির ইতিবাচক দিকগুলি যেমন একদিকে পরিলক্ষিত হয় তেমনি অন্যদিকে এর নেতিবাচক দিকগুলি উৎস গণমাধ্যমগুলির অতিরিক্ত চাপ মানুষকে আজ বিপথে পরিচালিত করছে। বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক মালিকানাধীন সংবাদপত্র ও দূরদর্শন সংস্থাগুলি তাদের স্বার্থ পরিপূরণকারী সংবাদ, সমীক্ষা, তথ্যচিত্র ও কাহিনীচিত্রের বকলমে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। হিংসা, রাজনৈতিক বিদ্বেষ, নৈতিক অধঃপতনের বিভিন্ন ঘটনাবলি, সংবাদপত্রে ও দুরদর্শনে প্রচারের ফলে ছাত্রছাত্রী তথ্য সাধারণ নাগরিকদের জীবন প্রচণ্ড কুপ্রস্তাবিত ও বিপর্যন্ত। এ সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে কুরুচিকর বিজ্ঞাপনগুলির ভূমিকাও কম দায়ী নয়। ভালমন্দ সব কিছু মিলিয়ে ভারতের কোটি কোটি জনগণের উপর এইসব গণমাধ্যমগুলির প্রভাব যে অতি গুৰুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে দ্বিমত নেই।

উপসংহার : সব জিনিষেরই ভাল ও মন্দ দিক থাকে; সেই দিক থেকে গণমাধ্যমগুলিকে বিবেচনা করতে হবে। সে কারণে আজকের এই মুক্ত বিশ্বায়নের যুগে কিছু রক্ষাকবচ রেখে গণমাধ্যমগুলির সুদূরপ্রসারী সুপ্রভাবগুলি জনমানসে ছড়িয়ে দিতে হবে। দেখতে হবে গণমাধ্যমগুলি যেন কখনই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে না পারে অথবা, সাম্প্রদায়িকতা ও প্রাদেশিকতায় প্ররোচনা না দেয়। পরন্তু এইসব নানা গণমাধ্যমগুলির সাহায্যে যেন আমরা বিশ্বকে এক লহমায় গৃহাঙ্গনে নিয়ে আসতে পারি।

দ্বিতীয় উত্তর : 

এখানে দুটি ভিন্ন ভিন্ন উত্তর প্রদান করা হয়েছে তোমাদের পছন্দমতো যে কোনো একটি উত্তর পড়লেই হবে।

শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা :

শিক্ষাদান আর শিক্ষাগ্রহণ শুধু বিদ্যালয়ের চার দেওয়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বহুকাল আগে যখন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির তেমন অগ্রগতি হয়নি, যখন মানুষ শক্তিশালী গণমাধ্যমের কথা ভাবতেও পারত না, তখনও কিন্তু পুথি আর পাঠশালার বাইরে শিক্ষা প্রসারের কিছু কিছু আয়োজন ছিল। লোকগাথা, ব্রতকথা, যাত্রা, কথকতা প্রভৃতির মাধ্যমে সেই যুগে মানুষ নানা ধরনের শিক্ষালাভ করত। তবে তার বিস্তার ছিল খুবই সীমিত। ধীরে ধীরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতি ও নানান আবিষ্কারের সূত্রে মানুষের জীবনে এল নানান আধুনিক গণমাধ্যম। আর সেইসব গণমাধ্যম ক্রমশ শিক্ষাবিস্তারের গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হয়ে উঠতে লাগল ।

আধুনিক মানুষের হাতের কাছে আজ বিভিন্ন ধরনের গণমাধ্যম রয়েছে। সেগুলির মধ্যে প্রথমেই যার কথা মনে আসে, সেটি হল সংবাদপত্র। তারপরেই উল্লেখ করতে হয় বেতারের কথা। চলচ্চিত্রও একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম। তবে একালের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য গণমাধ্যম হল দূরদর্শন। এইসব গণমাধ্যমগুলি একদিকে যেমন মনোরঞ্জনে তৎপর, তেমনি অন্যদিকে শিক্ষাবিস্তারেও সহায়ক।

সংবাদপত্র স্বদেশ এবং বিদেশের নানান সংবাদ নিয়ে নিয়মিত আমাদের সামনে হাজির হয়। পৃথিবীর নানান প্রান্তের নানান খবরাখবরে আমাদের মনের পরিধি বিস্তৃত হয়, সমৃদ্ধ হয় আমাদের জ্ঞানভাণ্ডার। সংবাদপত্র শুধু সংবাদ পরিবেশন করে না, সংবাদের পাশাপাশি সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান প্রভৃতি নানা “বিষয়ের সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয়। বিভিন্ন জীবিকার মানুষের পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষার বিস্তারেও সংবাদপত্র অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেছে।

বেতারযন্ত্রের আবিষ্কার বহু মানুষকে একসূত্রে বেঁধে দিতে সক্ষম হয়েছে। বেতারের মাধ্যমে একই সঙ্গে লক্ষ লক্ষ মানুষ একই অনুষ্ঠান শুনতে পায়। শুধু তাই নয়, বেতার-সম্প্রচার শ্রুতিনির্ভর হওয়ায় নিরক্ষর মানুষও অন্যের সহায়তা ছাড়াই সরাসরি বেতারের যে-কোনো অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারে। বেতারে মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা যেমন থাকে, তেমনি থাকে নানা ধরনের শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানও। শিক্ষাপ্রসারের ক্ষেত্রে বেতারের একটি বিশেষ ভূমিকা আছে।

শিক্ষাবিস্তারে সবাক এবং নির্বাক চলচ্চিত্রের ভূমিকাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। নানারকম কাহিনি চিত্র, তথ্যমূলক চিত্র, নিউজ রিল প্রভৃতি পরিবেশনের মাধ্যমে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে এটিও একটি উল্লেখযোগ্য মাধ্যম।

বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য গণমাধ্যম হল দূরদর্শন। মনোরঞ্জনের ক্ষেত্রে যেমন এর জুড়ি নেই, তেমনি শিক্ষাপ্রসারের ক্ষেত্রেও এর দোসর মেলা ভার। দূরদর্শনের মাধ্যমে প্রথাগত এবং প্রথাবহির্ভূত উভয় ধরনের শিক্ষাই দেওয়া যেতে পারে। ক্লাসরুমে একজন শিক্ষক যেভাবে শিক্ষা দেন, দূরদর্শনের ক্ষেত্রে সেই ব্যবস্থাটিও অনায়াসে করা যায়। বহু মানুষ একই সঙ্গে দেখার ও শোনার সুযোগ পায় বলে দূরদর্শনের যে-কোনো শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান যথার্থই গণশিক্ষা বিস্তারে সহায়ক হয়ে উঠতে পারে।

আজ আমাদের চারপাশে যে সমস্ত গণমাধ্যমগুলি রয়েছে সেগুলি শিক্ষাপ্রসারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট মনোযোগী। তবু বলা যায়, সংবাদপত্র, বেতার, চলচ্চিত্র এবং দূরদর্শনের মতো গণমাধ্যমগুলি যদি শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রে আরও বেশি দায়িত্বশীল হয়, যদি আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানগুলিকে, তাহলে তা শিক্ষাবিস্তারে যুগান্তর এনে দিতে পারে। গণমাধ্যমগুলির কাছে আমরা আজ সেই প্রত্যাশাই করব।

PDF DOWNLOAD ZONE 
File Name : শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা
Language : বাংলা 
Size : 76 KB
Clik Here To Download

আরও পড়ুন :

বাংলার উৎসব রচনা

একটি গাছ একটি প্রাণ

বিজ্ঞানের সুফল ও কুফল

3 thoughts on “শিক্ষা বিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা PDF”

Leave a Comment