বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তপন সিংহের অবদান | বাংলা চলচ্চিত্রে তপন সিংহের অবদান

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তপন সিংহের অবদান | বাংলা চলচ্চিত্রে তপন সিংহের অবদান

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তপন সিংহের অবদান : সুপ্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তপন সিংহের অবদান সম্পর্কে। এখানে দুটি উত্তর প্রদান করা হলো তোমাদের পছন্দমতো যে কোন একটি উত্তর পড়লেই হবে।

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তপন সিংহের অবদান :

ভূমিকা : তপন সিংহ ( 1924 অক্টোবর 2 – 2009 জানুয়ারি 15 ) বাংলা মেইনস্টিম চলচ্চিত্র ধারার সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচালক। সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করা শুরু করে বিমল রায় এবং রেনোয়ার সঙ্গে সংযোগ তাঁকে অভিজ্ঞ করে।

তপন সিংহের অবদান : পৃথিবীর প্রথম ম্যাগনেটিক সাউন্ড রেকর্ডিং মেশিনে চার্লস পুলটনের সঙ্গে ‘দি রিভার’ ছবির শুটিং করেন তিনি। পেশাদারি শব্দকুশলীর কাজ করতে তিনি বিদেশ যান এবং সেখানে সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ারের কাজ পান। তাঁর ছবি ‘অঙ্কুশ’ ( 1954 ) এর মুখ্য চরিত্র একটি হাতি। এ চলচ্চিত্রটি সাফল্য না পাওয়ায় তাঁর মন ভেঙে যায়। বিভিন্ন কটূক্তি ও অসম্মান সঙ্গে নিয়ে নতুন করে লড়াই শুরু করেন তিনি।

বিভিন্ন সিনেমা : আত্মকথা ‘মনে পড়ে’ তে জীবনের এই পর্বকে তিনি বিশ্লেষণ করেছেন তাঁর মনোবলকে ব্যাখ্যা করে। ‘কাবুলিওয়ালা’ , ‘ক্ষুধিত’ ‘পাষাণ’ , ‘ঝিন্দের বন্দী’ , ‘হাঁসুলিবাঁকের উপকথা’ , ‘জতুগৃহ’ , ‘গল্প হলেও সত্যি’ , ‘হাটেবাজারে’ , ‘সাগিনা মাহাতো’ , ‘সফেদ হাতি’ ,  ‘সবুজ দ্বীপের রাজা’ , ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ , ‘আদালত ও একটি মেয়ে’ , ‘আতঙ্ক’ , ‘এক ডক্টর কী মওত’ , ‘অন্তর্ধান’ , ‘হুইল চেয়ার’ এবং 2000 খ্রিস্টাব্দে শেষ ছবি ‘আনোখা’ তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য কীর্তি ।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি : পরিচালনার জন্য দেশী – বিদেশি বহু পুরস্কার, রাষ্ট্রপতি সম্মান,  ,দাদাসাহেব ফালকে ‘ পুরস্কার তিনি পেয়েছেন। জীবনের সহজ বাস্তব রূপকার তপন সিংহ বাংলা চলচ্চিত্র জগৎকে সমিত ভঞ্জ, স্বরূপ দত্তদের মতো অভিনেতা উপহার দিয়েছেন, রবীন্দ্রসৃষ্টি ও সংগীতকে নতুনভাবে প্রয়োগ করেছেন। আলি আকবর, রবিশঙ্করের অভিনব সুরতরঙ্গ বাংলা চলচ্চিত্রের প্রয়োগে ভিন্ন মাত্রা এনেছেন। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন যে, তপন সিংহ আমাদের হাতেকলমে শিখিয়েছেন অভিনয়ের নানা দিক, ভঙ্গি ও প্রকার।

মূল‍্যায়ন : 2009 সালের 15 ই জানুয়ারি তপন সিংহ পরলোক গমন করেন কিন্তু কিন্তু তার তৈরি ছবিগুলি আমাদের হৃদয়ে অমর হয়ে থাকবে।

দ্বিতীয় উত্তর : 

বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তপন সিংহের অবদান :

পাঁচ – এর দশকে যে সমস্ত বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালকের হাতে বাংলা ছবি প্রাণ ফিরে পায়, তাঁদের মধ্যে অন্যতম তপন সিংহ। প্রেম – ভালোবাসা – ধর্মীয় বিষয়ের একঘেয়েমি থেকে মুক্ত হয়ে তাঁর আবির্ভাবে বাংলা সিনেমা হয়ে ওঠে গীতিকবিতার মতন চিত্রধর্মী এবং মানবাবেগে ভরপুর এক শিল্পকলা। তাঁর প্রতিটি কালজয়ী ছবির দর্শক হয়ে উঠলেন সব রকম মানুষ- সাধারণ আর বিশিষ্ট সকলেই। আর্ট এর ক্ষেত্রে ও বক্স অফিসের মেলবন্ধনে তিনি দেখালেন আপন অনন্য প্রতিভা।

রেনোয়ার সান্নিধ্য পাওয়া, পাইনউড স্টুডিওতে শব্দ প্রকৌশল শেখা তপন সিংহের প্রথম ছবি ‘অঙ্কুশ’ দর্শকদের আনুকূল্য পায়নি। তৃতীয় ছবি ‘কাবুলিওয়ালা’ থেকেই তাঁর সাফল্যের সূচনা। রাষ্ট্রপতি পুরস্কার থেকে বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার- তপন সিংহ বিখ্যাত হয়ে ওঠেন দেশজুড়ে। রবীন্দ্রনাথ এবং সমসাময়িক অন্যান্য সাহিত্যিকের গল্প উপন্যাস অবলম্বনে তিনি ছবি তৈরি করেছেন। বাঙালি দর্শক সম্পর্কে তিনি উচ্ছ্বসিত। তাঁর মতে- “ সারা পৃথিবীতে দর্শক হিসেবে বাঙালি দর্শক-ই শ্রেষ্ঠ। সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা- ছবির প্রতি ভালোবাসা-নাটকের প্রতি ভালোবাসা, আর কোনো দেশের দর্শকের মধ্যে খুঁজে পাবেন কি না সন্দেহ। ”

নিজের ছবি সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য- “ বৃহৎ অর্থে আমার দু চারটি ছবি ছাড়া আর সব ছবিই তো ভালোবাসার। মানুষকে ভালোবাসা, পৃথিবীকে ভালোবাসার কথাই তো আমি বলতে চেয়েছি বরাবর। ” তপন সিংহ পরিচালিত উল্লেখযোগ্য বাংলা ছবিগুলির মধ্যে হল-  ‘কাবুলিওয়ালা’ , ‘লৌহকপাট’ , ‘ক্ষুধিত পাষাণ’ , ‘ঝিন্দের বন্দি’  ‘হাঁসুলি বাঁকের উপকথা’ , ‘নির্জন সৈকতে’ , ‘অতিথি’ , ‘সাগিনা’ , ‘মাহাতো’ , ‘সবুজ দ্বীপের রাজা’ , ‘অন্তর্ধান’  ইত্যাদি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন অনেক। 2006 খ্রিস্টাব্দে তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত হন।

আরও পড়ুন :

পট কি ? পট কত প্রকার ও কি কি ? 

বাংলা চিত্রকলায় যামিনী রায়ের অবদান

বাংলা গানের ধারায় অতুলপ্রসাদ সেনের অবদান

2 thoughts on “বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তপন সিংহের অবদান | বাংলা চলচ্চিত্রে তপন সিংহের অবদান”

Leave a Comment