বাংলায় পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ ও ফলাফল

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

বাংলায় পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ ও ফলাফল

বাংলায় পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ ও ফলাফল : আজকের পর্বতে আলোচনা করা হল বাংলায় পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ ? এবং পঞ্চাশের মন্বন্তরের ফলাফল সম্পর্কে। চলুন দেখে নেওয়া যাক আলোচ‍্য বিষয়টি।

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ভারতে দুর্ভিক্ষ, মহামারি, খরা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুলি ছিল ভারতীয় জনজীবনের সঙ্গে একান্তভাবে জড়িত। পলাশির যুদ্ধের পর থেকে যে অর্থনৈতিক লুন্ঠন ব্রিটিশ কোম্পানি শুরু করেছিল তা ভারতের অর্থনৈতিক কাঠামোকে সম্পূর্ণ ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছিল । কেবলমাত্র মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি বা বোম্বাই প্রেসিডেন্সি নয় , কলকাতা প্রেসিডেন্সিতেও দেখা দিয়েছিল। 1943 সালে (বাংলায় 1350 সন) সংঘটিত বাংলার এই দুর্ভিক্ষ পঞ্চাশের মন্বন্তর নামে পরিচিত । এই দুর্ভিক্ষের ফলে দেখা যায় অনাহার , অপুষ্টি , দলে দলে মানুষের মৃত্যু।

পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ

প্রাক্ স্বাধীনতাকালে ভারতীয়রা যেসকল বিপর্যয়কারী দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল 1943 সালের বাংলার মন্বন্তর । পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণগুলি হল

1. উৎপাদন হ্রাস : পঞ্চাশের মন্বন্তরের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল প্রয়োজনের তুলনায় কম পরিমাণে উৎপাদন । 1942 সালে পূর্ব ও পশ্চিম বাংলার উপকূলবর্তী অঞ্চল ( ফরিদপুর , ঢাকা , নোয়াখালি , বরিশাল , ময়মনসিংহ , 24 পরগনা , মেদিনীপুর ) ব্যাপক ঘুর্ণিঝড় এবং প্রবল বৃষ্টির সম্মুখীন হয় । ফলে প্রায় 450 বর্গমাইল এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় । 3200 বর্গমাইল এলাকার কৃষিজ ফসল নষ্ট হয়ে যায় এবং ঘরবাড়ি ও সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে । এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও শস্যহানি 1943 খ্রিস্টাব্দে এক ব্যাপক খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে । সরকারি হিসাবে শস্যহানি ও খাদ্য ঘাটতির পরিমাণ ৫ শতাংশ বলা হলেও বাস্তব পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়াবহ।

2. খাদ্য সংকট : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে বার্মার উপর জাপান তার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে । বার্মা থেকে ভারত এবং বাংলাদেশে যে বিপুল পরিমাণ চাল আমদানি হত তা বন্ধ হয়ে যায় । এরূপ পরিস্থিতিতে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী বেশি লাভের আশায় খাদ্য মজুত করে । এর ফলে কৃত্রিম খাদ্য সংকট সৃষ্টি হয় । দুর্ভিক্ষ সংঘটনের পিছনে মানুষের ভূমিকা এই ঘটনাকে বিশেষ মাত্রা দান করে । পাশাপাশি ব্রিটিশ সরকার সেনাবাহিনীর ভরণপোষণের জন্য মেদিনীপুর , 24 পরগনা , বাখরগঞ্জ , খুলনা প্রভৃতি জেলা থেকে ‘ উদ্বৃত্ত ধান ’ তুলে নেয় যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তোলে।

3. পরিবহণ ব্যবস্থার সমস্যা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জলপথ ছিল পরিবহণ ব্যবস্থার একটি অন্যতম মাধ্যম । নৌকার সাহায্যেই সৈন্যবাহিনীর জন্য খাদ্যসামগ্রী এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাঠানো হত । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সরকার জাপানি সৈন্যবাহিনীর মধ্যে খাদ্যের সংকট তৈরি করার উদ্দেশ্যে 26 হাজারের বেশি নৌকা নষ্ট করে দেয় এবং 20 হাজার নৌকা অন্যত্র অপসারণ করে । পরিণামে একদিকে খাদ্য সংকট চরমে ওঠে এবং খাদ্য পরিবহণের ব্যয়ও ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।

4. সরকারি ন‍্যায় : ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষের জন্য সরকারি নীতি বহুলাংশে দায়ী ছিল । যেমন-

i. জাপানের ব্রহ্মদেশ জয়ের পর ব্রিটিশ সরকার অনুমান করেছিল বাংলার পতন আসন্ন । এইজন্য ব্রিটিশ সরকার পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করে । জাপানি সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত ব্রিটিশ , ভারতীয় , মার্কিন সেনাদের জন্য খাদ্য সঞ্চয় করে রাখে ।

ii. ব্রিটিশ সরকার চেয়েছিল , জাপানি সৈন্যরা দুর্ভিক্ষকবলিত বাংলায় প্রবেশ করুক এবং খাদ্য সংকটে পড়ুক । এজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা খাদ্য রফতানির প্রস্তাব দিলেও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন ।

iii. ব্রিটিশ সরকার রেশন ব্যবস্থা চালু করেছিল অনেক দেরিতে এবং মাত্র কয়েকটি শহর এলাকায় লঙ্গরখানা খোলা হয় । গ্রামাঞল এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত ছিল ।

iv. সরকার যুদ্ধের ব্যয়সংকোচনের জন্য প্রচুর কাগজি নোট বাজারে ছাড়ে । 1939 খ্রিস্টাব্দে তার পরিমাণ ছিল 230 কোটি টাকা । 1945 খ্রিস্টাব্দে তা 1210 কোটি টাকায় পৌঁছোয় । ফলে মুদ্রাস্ফীতি প্রবল আকার ধারণ করে । খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়।

5. অভ্যন্তরীণ জোগান বন্ধ : বাংলাদেশ এ সময় খাদ্যে স্বনির্ভর ছিল না । প্রতিবেশী ব্রিটিশ উপনিবেশ ব্রহ্মদেশ থেকে বাংলায় চাল আমদানি করা হত । ভারতের অন্য রাজ্যেও ব্রহ্মদেশের চাল জোগান দেওয়া হত । এই চাল আমদানির পরিমাণ ছিল 15%। 1942-43 খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জাপান ব্রিটিশ উপনিবেশ মালয় , সিঙ্গাপুর , ব্রহ্মদেশ দখল করে নেয় । ফলে চালের জোগান বন্ধ হয়ে যায় । ভারতের অন্য ধান উৎপাদক অঞ্চল যথা- কৃষ্ণা – গোদাবরী অঞ্চল , কাবেরী ও অন্যান্য স্থানেও আশানুরূপ উৎপাদন হয়নি । সে কারণেই অভ্যন্তরীণ জোগান বন্ধ হয়ে যায়।

6. সংশোধনবাদী মতামত : 1943  খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষের জন্য অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন মুদ্রাস্ফীতিকেই দায়ী করেছেন । বাংলার দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে এই সংশোধনবাদী মতামতটি ছিল উল্লেখযোগ্য । অমর্ত্য সেন বাংলার দুর্ভিক্ষের কারণ হিসেবে দুটি কারণকে শনাক্ত করেন i. মুদ্রাস্ফীতি এবং ii. খাদ্যের অপর্যাপ্ত জোগান । তিনি বলেছেন , ‘ It seems safe to conclude that the disastrous Bengal famine was not reflection of a remarkable overall shortage of food growing in Bengal ‘ ।

পঞ্চাশের মন্বন্তরের ফলাফল

পঞ্চাশের মন্বন্তরের ফলাফল গুলি হল –

1. ব্যাপক মৃত্যুহার : পঞ্চাশের মন্বন্তরের ফলে মৃত্যুর হার ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছিল । একদিকে অনাহার এবং তার পাশাপাশি অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বাংলার জনসংখ্যা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল । রাস্তাঘাটে , বনে – জঙ্গলে হাজার হাজার মৃতদেহের স্তূপ সৃষ্টি হয়েছিল । মৃতের সংখ্যা সঠিকভাবে জানা না গেলেও দুর্ভিক্ষ কমিশনের মতে , ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল 60 লক্ষ মানুষ এবং মৃত্যু ঘটঘটেছি 15 লক্ষ মানুষের । কিন্তু বেসরকারি মতে ,

এই মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় 40 লক্ষ । অধ্যাপক অমর্ত্য সেন পাশাপাশি পশুপাখির সংখ্যাও 20 % হ্রাস পেয়েছিল । বাংলায় ইতিপূর্বে যেসকল দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তাতে অধিকসংখ্যক দরিদ্র মানুষের মৃত্যু হলেও পঞ্চাশের মন্বন্তরে কারিগর ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরই প্রাণহানি ঘটেছিল বেশি।

2. রাজনৈতিক : i.1943 খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষ সমকালীন রাজনীতিকে প্রভাবিত করেছিল । 1942 খ্রিস্টাব্দে যে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল সেই আন্দোলনে জনগণ । স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিতে পারেনি । এই আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার এটি ছিল একটি প্রধান কারণ । ii. এই দুর্ভিক্ষের সময় বাংলার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ফজলুল হক । খাদ্যসমস্যার জন্য শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির সঙ্গে ফজলুল হক – এর মতভেদ ঘটে । কৃষক – প্রজা পার্টির কোয়ালিশন মন্ত্রীসভার পতন হয় । এই সুযোগে আবদুল হাসিমের নেতৃত্বে মুসলিম লিগ প্রভাবশালী হয়ে । ওঠে । হোসেন শহিদ সুরাবদীর নেতৃত্বে মুসলিম লিগ মন্ত্রীসভা গড়ে ওঠে । iii. খাদ্য সংকটে জর্জরিত পূর্ববাংলার মুসলিম কৃষককুল হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন হয়ে পড়ে । 1946 খ্রিস্টাব্দে দাঙ্গার সময় নোয়াখালি , বরিশাল ও ত্রিপুরায় তার প্রতিফলন ঘটে।

3. অর্থনৈতিক কাঠামোয় বিপর্যয় : 1943 সালের মন্বন্তরের ফলে বাংলার আর্থিক কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল । ক্ষুধার্ত মানুষগুলি অন্ন নয় , ফ্যান ভিক্ষা করতে থাকে । কলকাতার রাস্তায় অভুক্ত , শীর্ণকায় , কঙ্কালসার মানুষগুলি তাদের শেষ সঞ্চয়টুকু হারিয়ে ক্রমশ মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায় । সরকার খাদ্যের দাম একেবারে কম করলেও ( রেশনিং ব্যবস্থার মাধ্যমে ) বুভুক্ষু মানুষগুলির সেটি কেনার মতোও সামর্থ্য ছিল না । অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলের মানুষদের বিশেষত্ব ক্ষেতমজুর এবং কৃষকদের অবস্থা ছিল আরও শোচনীয় , কারণ সরকারি ত্রাণ গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত কখনোই পৌঁছোয়নি।

4. কমিউনিস্ট পার্টির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি : 1943 খ্রিস্টাব্দের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি কমিউনিস্ট পার্টির জনপ্রিয়তা অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছিল । কারণ — খাদ্য সংকটকে কেন্দ্র করে কমিউনিস্ট পার্টি ব্রিটিশ সরকারের গৃহীত খাদ্যনীতিকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছিল । সরকারের ত্রাণনীতি কেলবমাত্র শহরাঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল । কমিউনিস্ট পার্টি সরকারের পরিকল্পনার এই ফাকটিকে সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে । বিভিন্ন মহিলা সমিতি এবং বি পি কে এস – এর সাহায্য নিয়ে গ্রামের অভুক্ত মানুষগুলির কাছে তারা খাবার সরবরাহ করে । এইভাবে কমিউনিস্ট পার্টির জনপ্রিয়তা উত্তর ও মধ্যবাংলার সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল।

5. নৈতিক ক্ষয়ক্ষতি : জীবনে বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য পাওয়াই তাদের কাছে সবথেকে লড়াই হয়ে ওঠে । অভাবের তাড়নায় অনেকে হীনবৃত্তি গ্রহণ করতে বাধ্য হয় । বাংলার নৈতিক জীবন কলঙ্কিত হয় । মধুশ্রী মুখার্জি দেখিয়েছেন যে— ক্ষুধার তাড়না সহ্য করতে না পেরে এক অসহায় পিতা তার ছোট্টো শিশুটি বিক্রি করতে বাজারে যান এবং বাজারে কোনো ক্রেতা না পেয়ে তাকে কুয়োয় ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় । আবার পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলের এক দরিদ্র কৃষক ক্ষুধার তাড়নায় পাগল হয়ে বাবা , মা , স্ত্রী , সন্তানকে হত্যা করে নিজেও আত্মঘাতী হয়।

6. অদৃষ্টবাদ : অনাহার , দুর্ভিক্ষ , মৃত্যু বাংলার মানুষের প্রতিরোধ শক্তিকে নিঃশেষ করে দেয় । বেঁচে থাকার জন্য জীবনসংগ্রামের ক্ষমতা তাদের শেষ হয়ে গিয়েছিল । ‘ ভাগ্যে যা আছে তাই হবে ? —এই মনোভাব তাদের আচ্ছন্ন করে তোলে । এই সময় জমির স্বত্ব রক্ষায় তাদের আর কোনো আগ্রহ ছিল না।

7.সাহিত্যে প্রভাব : সমকালীন লেখকদের লেখনী এবং চিত্রকরদের তুলির ছোঁয়ায় 1943 খ্রিস্টাব্দের মন্বন্তরের চিত্র যেন জীবন্ত হয়ে উঠেছে । বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অশনি সংকেত উপন্যাসটির চলচ্চিত্রের রূপ দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায় । ‘ অশনি সংকেত ‘ উপন্যাস থেকে জানা যায় যে , 1943 খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষের হাহাকার বাংলার মানুষদের নৈতিক এবং সামাজিক দিক থেকে কতখানি অধঃপতন ঘটিয়েছিল । মৃণাল সেন অমলেন্দু চক্রবর্তী – র লেখা আকালের সন্ধান গ্রন্থের উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন।

1943 সালে বাংলার বিশেষত মেদিনীপুরের পঞ্চাশের মন্বন্তরের ভয়াবহতা নিয়ে লেখা বিজন ভট্টাচার্যের নবান্ন নাটকটি ছিল অন্যতম । এ ছাড়াও চিত্তপ্রসাদ তাঁর Hungry Bengal গ্রন্থে পঞ্চাশের মন্বন্তরের যে নির্মম ছবিটি তুলে ধরেছেন তার থেকে বোঝা যায় যে , 1943 – এর আকাল তৎকালীন শিল্প ও সাহিত্যকে কতখানি প্রভাবিত করেছিল । এ ছাড়াও গোপাল হালদারের পঞ্চাশের পথ , ঊনপঞ্চাশী এবং তেরশো পঞ্চাশ ছিল পঞ্চাশের মন্বন্তরের এক লিখিত দলিল । এ ছাড়া যেসকল চিত্রকর 1943 খ্রিস্টাব্দের মন্বন্তরের বাস্তব রূপটি চিত্রায়িত করেছেন , তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন অতুল বসু , জয়নাল আবেদিন , চিত্তপ্রসাদ , সোমানাথ হোর এবং দেবব্রত মুখোপাধ্যায় প্রমুখ ।

পঞ্চাশের মন্বন্তরের প্রভাবে বাংলায় ঠিক কত মানুষের জীবনহানি ঘটেছে তার সংখ্যা সঠিকভাবে জানা না গেলেও সেই মৃত্যুর মিছিল যে । সুবিস্তৃত ছিল , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই । ব্রিটিশ সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য যে পদক্ষেপ নিয়েছিল প্রয়োজনের তুলনায় তা ছিল নগণ্য । তার পাশাপাশি সরকারি সাহায্যগুলি শুধুমাত্র শহরাঞ্চলের মধ্যেই সীমিত ছিল । তৎকালীন পুলিশের গোপন ফাইল থেকে জানা যায় যে , বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বিশেষ করে মেদিনীপুর এবং বীরভূমের ধানের গোলা লুঠ হয়েছিল দু – মুঠো অন্নের আশায় , কিন্তু সরকারি খাতায় এই ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছে ডাকাতির নামে । পঞ্চাশের মন্বন্তর বিষয়ে আজও ব্যাপকভাবে গবেষণা চলছে।

আরও পড়ুন : 

রাওলাট আইন কি ? এই আইনের উদ্দেশ্য ও শর্ত 

ক্রিপস মিশনের প্রস্তাব ও ব‍্যর্থতার কারণ

নৌবিদ্রোহের কারণ ও ফলাফল 

2 thoughts on “বাংলায় পঞ্চাশের মন্বন্তরের কারণ ও ফলাফল”

Leave a Comment