মাইটোসিস কাকে বলে ? মাইটোসিসের স্থান, দেহকোষ, পদ্ধতি | What is Mitosis

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

মাইটোসিস কাকে বলে – what is mitosis : প্রিয় বন্ধুরা, আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম, এই পর্বটিতে আমরা মাইটোসিস কাকে বলে এবং মাইটোসিস এর স্থান, দেহকোষ ও পদ্ধতি সম্পর্কে নিখুঁত ভাবে আলোচনা করেছি, যা আপনাদের জন‍্য খুবই হেল্পফুল হবে।

মাইটোসিস কাকে বলে ? মাইটোসিসের স্থান, দেহকোষ, পদ্ধতি | What is Mitosis

মাইটোসিস কাকে বলে :

যে ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় দেহ মাতৃকোশ বিভাজিত হয়ে সম আকৃতি, সমগুণ ও সমসংখ্যক ক্রোমোজোম বিশিষ্ট দুটি অপত্য কোষের সৃষ্টি করে তাকে মাইটোসিস বলে।

মাইটোসিস ঘটার স্থান :

উদ্ভিদদেহে বিভিন্ন প্রকার ভাজক কলা অঞ্চল যথা- মূল ও কান্ড শীর্ষ, নিবেশিত ও পার্শ্বস্থ ভাজক কলা, পাতা, ফল, ভ্রূণ, বীজ প্রভৃতি অংশে মাইটোসিস বিভাজন ঘটে। প্রাণীদেহে ভ্রুণ, ত্বক, অস্থিমজ্জা প্রভৃতি অংশে দেখা যায়।

মাইটোসিসকে সদৃশ বিভাজন বলা হয় কেন :

মাইটোসিস কোষ বিভাজনকালে মাতৃকোশ এবং অপত্য কোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান হওয়ায় মাইটোসিসকে সদৃশ বিভাজন বা সম বিভাজন বলে ।

বিভিন্ন প্রকারের দেহকোষ :

কোষ বিভাজন এবং বৃদ্ধির ক্ষমতা অনুসারে দেহকোষকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

i. চূড়ান্তরূপে বিশেষিত কোষ : এই ধরনের কোশগুলি চূড়ান্তরূপে বিশেষিত। অর্থাৎ এরা কোষবিভাজনে অক্ষম, কোষগুলি বিভেদ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে আকৃতি একই রকম থেকে যায়, যেমন- স্নায়ু কোষ, পেশি কোষ।

ii. স্বাভাবিক বিভাজনে অক্ষম কোষ : এই ধরনের কোষগুলি বিভাজিত হয় না। কিন্তু উপযুক্ত উদ্দীপকের সাহায্যে বিভাজিত হতে পারে। যকৃৎ কোষ, লিম্ফোসাইট এই ধরনের কোষ। যকৃতের অস্ত্রোপাচার পর যকৃতের কোষগুলি বিভাজিত হয়।

iii. স্বাভাবিক বিভাজন ক্ষমতাসম্পন্ন কোষ : এই কোষগুলি নিজ ধর্ম অনুসারে ক্রমাগত বিভাজিত হতে থাকে। লোহিত রক্তকণিকা সৃষ্টিকারী অস্থিমজ্জার কোষ, এপিথিলিয়াল কোষ, স্পার্মাটোগেনিয়া ইত্যাদি এই ধরনের কোষ।

বিভিন্ন প্রকার মাইটোসিস :

i. আদর্শ মাইটোসিস বা ইউমাইটোসিস : যে মাইটোসিস বিভাজনে ক্রোমোজোমগুলি কুন্ডলিত হয়, নিউক্লিয় পর্দা বিলুপ্ত হয়, আদর্শ স্পিন্ডল গঠিত হয় এবং ক্রোমোজোমগুলি নিরক্ষীয় তলে নির্দিষ্ট সজ্জাক্রমে সজ্জিত হয় তাকে আদর্শ মাইটোসিস বা ইউমাইটোসিস বা এক্সট্রানিউক্লিয়ার মাইটোসিস বলে।

ii. ছদ্ম মাইটোসিস বা ক্রিপ্টোমাইটোসিস : যে মাইটোসিস বিভাজনে ক্রোমোজোমগুলি কুন্ডলিত হয়, নিউক্লিয় পর্দা বিলুপ্ত হয়, আদর্শ স্পিন্ডল গঠিত হয় কিন্তু ক্রোমোজোমগুলি নিরক্ষীয় তলে সজ্জিত হয় না তাকে ছদ্ম মাইটোসিস বা ক্রিপ্টোমাইটোসিস বলে।

iii. আদি মাইটোসিস বা প্রোমাইটোসিস : অনেক আদিকোশ, ছত্রাক ও শৈবাল কোষের যে মাইটোসিস বিভাজনে ক্রোমোজোমগুলি কুন্ডলিত হয়, কিন্তু নিউক্লিয় পর্দা বিলুপ্ত হয় না, নিউক্লিয়াসের মধ্যে আদর্শ স্পিন্ডল গঠিত হয় এবং ক্রোমোজোমগুলি নিরক্ষীয় তলে সজ্জিত হয়, তাকে আদি মাইটোসিস বা প্রোমাইটোসিস বা পেরিমাইটোসিস বা ইনট্রানিউক্লিয়ার মাইটোসিস বলে।

iv. প্যারামাইটোসিস : যে মাইটোসিস বিভাজনে ক্রোমোজোমগুলি কুন্ডলিত হয় না, কিন্তু নিউক্লিয় পর্দা বিলুপ্ত হয়, আদর্শ স্পিন্ডল গঠিত হয় এবং ক্রোমোজোমগুলি নিরক্ষীয় তলে সজ্জিত হয় তাকে প্যারামাইটোসিস বলে।

v. এন্ডোমাইটোসিস : যে প্রক্রিয়ায় ক্রোমাটিড বারবার বিভাজিত হয় কিন্তু নিউক্লিয়াস ও কোষ বিভাজিত হয় না তাকে এন্ডোমাইটোসিস বলে। এই পদ্ধতির ফলে দৈত্যাকার ক্রোমোজোম সৃষ্টি হয়, যেমন- Drosophila-র 5th ইনস্টার লার্ভার স্যালিভারি গ্ল্যান্ড ক্রোমোজোম।

মাইটোসিস পদ্ধতি :

স্পিন্ডল গঠনের তারতম্য ও সাইটোকাইনেসিস ছাড়া উদ্ভিদ ও প্রাণীর মাইটোসিস পদ্ধতি মূলত একই রকম। মাইটোসিস প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃকোশে প্রথম নিউক্লিয়াসের বিভাজন ঘটে এবং পরে সাইটোপ্লাজমের বিভাজন ঘটে দুটি অপত্য কোষ সৃষ্টি হয়। নিউক্লিয়াসের বিভাজন পদ্ধতিকে ক্যারিওকাইনেসিস এবং সাইটোপ্লাজমের বিভাজন পদ্ধতিকে সাইটোকাইনেসিস বলে। ক্যারিওকাইনেসিসের চারটি দশা দেখা যায়। যথা- প্রফেজ, মেটাফেজ, অ্যানাফেজ এবং টেলোফেজ । প্রফেজ শুরুর পূর্ববর্তী দশায় নিউক্লিয়াসটি স্থির অবস্থায় থাকে এবং ওই সময় DNA, RNA ও প্রোটিন সংশ্লেষ সম্পন্ন হয়। এই স্থির দশাকে ইন্টারফেজ বলে। ইন্টারফেজ প্রকৃতপক্ষে দুটি কোষ বিভাজনের অন্তর্বর্তী দশা।

আরও পড়ুন :

ভাইরাস কাকে বলে ? ভাইরাসের আবিষ্কার, প্রকৃতি, উৎপত্তি, অবস্থান, আকার এবং বৈশিষ্ট্য ? 

কোষ চক্র কাকে বলে ? কোষচক্রের সময়কাল ও প্রকারভেদ ? 

1 thought on “মাইটোসিস কাকে বলে ? মাইটোসিসের স্থান, দেহকোষ, পদ্ধতি | What is Mitosis”

Leave a Comment