থ‍্যালামাস কাকে বলে ? থ‍্যালামাসের কাজ ও নিউক্লিয়ার গ্ৰুপ | What is Thalamus

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

থ‍্যালামাস কাকে বলে ? থ‍্যালামাসের কাজ ও নিউক্লিয়ার গ্ৰুপ

থ‍্যালামাস কাকে বলে : সুপ্রিয় পাঠকগন আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম , এই পর্বটিতে থ‍্যালামাস কাকে বলে এবং থ‍্যালামাসের কাজ ও নিউক্লিয়ার গ্ৰুপ সম্পর্কে নিঁখুত ভাবে আলোচনা করেছি, যা আপনাদের জন‍্য খুবই হেল্পফুল হবে।

থ‍্যালামাস কাকে বলে :

মস্তিস্কের তৃতীয় প্রকোষ্ঠের দু-পাশে গুরুমস্তিষ্কের নীচে এবং মধ্যমস্তিস্কের ওপরের শ্বেত বস্তুর মধ্যে যে দুটি ধূসর বর্ণের ডিম্বাকার অংশ থাকে তাদের থ্যালামাস বলে

ভ্রুণাবস্থায় অগ্রমস্তিষ্কের নিম্নপ্রাপ্ত অধিকতর পুরু হয়ে তৃতীয় মস্তিষ্ক প্রকোষ্ঠের উভয় পার্শ্বে যে দুটি বৃহদাকার ধূসর পদার্থের সৃষ্টি করে, তাদের থ্যালামাস বলে। থ্যালামাস সুবৃহৎ ডিম্বাকৃতি ধূসর পদার্থের স্নায়ুপুঞ্জবিশেষ। প্রতিটি থ্যালামাসের দৈর্ঘ্য প্রায় 4 সেমি। একে গুরুমস্তিস্কের প্রধান প্রবেশপথ বা সিংহদ্বার বলা হয়, কারণ বহির্জগৎ ও দেহগত সবরকম সংবাদই থ্যালামাসের মাধ্যমে গুরুমস্তিষ্কে পৌঁছোয়। একমাত্র ঘ্রাণবহ স্নায়ুপথ ছাড়া সবরকম স্নায়ুপথই থ্যালামাসে স্নায়ুসন্নিধি গঠন করে।

থ্যালামাসের নিউক্লিয়ার গ্রুপ :

থ্যালামাসে পাঁচ ধরনের নিউক্লিয়ার গ্রুপ থাকে, যথা- i. মধ্যনিউক্লিয়ার গ্রুপ, ii. পার্শ্বনিউক্লিয়ার গ্রুপ, iii. মধ্যরেখ নিউক্লিয়াসসমূহ iv. আস্তফলকীয় নিউক্লিয়াসসমূহ, iv. পালভিনার নিউক্লিয়াস । থ্যালামাসের পাঁচটি নিউক্লিয়ার গ্রুপের সঙ্গে মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশের স্নায়ুসংযোগ আছে। এসব স্নায়ুসংযোগের মাধ্যমে থ্যালামাস বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্য সম্পন্ন করে থাকে।

থ‍্যালামাসের কাজ :

থ্যালামাসের কাজের সংক্ষিপ্তসার নীচে উল্লেখ করা হল-

i. প্রেরক স্থান বা রিলে কেন্দ্র : ঘ্রাণপ্রবাহ ছাড়া সবরকম সংজ্ঞাবহ স্নায়ুপ্রবাহ থ্যালামাসের মধ্য দিয়ে গুরুমস্তিষ্কে প্রবেশ করে। তাই থ্যালামাস গুরুমস্তিষ্কের প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে। তাপ, চাপ, স্পর্শ, টান, কম্পন প্রভৃতি উদ্দীপনা পরিবহণকারী ঊর্ধ্বগামী স্নায়ুপথসমূহ মধ্যগ, সুষুম্নাকাণ্ড ও ট্রাইজেমিনাল লেমনিসকাসের মাধ্যমে থ্যালামাসে প্রবেশ করে এবং থ্যালামাসের স্নায়ুকেন্দ্রে স্নায়ুসন্নিধি গঠন করে।

থ্যালামাস থেকে উৎপন্ন তৃতীয় পর্যায়ের স্নায়ুতন্তু এরপর স্নায়ুপ্রবাহকে গুরুমস্তিষ্কের সংজ্ঞাবহ অঞ্চল এবং ফ্রন্টাল লোবে প্রেরণ করে। লঘুমস্তিষ্ক থেকে আগত স্নায়ুপ্রবাহকেও থ্যালামাস ফ্রন্টাল লোবের 4 ও 6 নং অঞ্চলে প্রেরণ করে। তা ছাড়া থ্যালামাস গুরুমস্তিষ্কের কোনো কোনো অঞ্চল থেকে আগত স্নায়ুতন্ত্রের প্রেরক স্থান হিসেবেও কাজ করে।

ii. প্রতিবর্তী কেন্দ্র : থ্যালামাস একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবর্তী কেন্দ্র। বিভিন্ন আবেগজনিত প্রতিক্রিয়াগুলি (যেমন- ক্রোধ, পীড়ন ইত্যাদি) থ্যালামাসের মাধ্যমেই সংঘটিত হয়।

iii. ব্যক্তিত্ব ও সামাজিক আচরণ : গুরুমস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোবের মাধ্যমে থ্যালামাস ব্যক্তিত্ব ও সামাজিক আচরণের প্রকাশ ঘটায়।

iv. অমার্জিত ইন্দ্ৰিয়ানুভূতির কেন্দ্রস্থল : থ্যালামাসের পৃষ্ঠমধ্য স্নায়ুকেন্দ্র (medial dorsal nuclei) অমার্জিত ইন্দ্রিয়ানুভূতির আদিম স্নায়ুকেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। নিম্নশ্রেণির প্রাণী যাদের গুরুমস্তিষ্ক নেই তাদের ক্ষেত্রে এটি উচ্চতর সংজ্ঞাবহ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।

v. জাগরণ এবং সতর্কীকরণ প্রক্রিয়া : থ্যালামাস দেহের জাগরণ এবং সতর্কীকরণ প্রতিক্রিয়াগুলি নিয়ন্ত্রণ করে। তাই এটি নিদ্রিত প্রাণীকে হঠাৎ জাগিয়ে তোলা এবং পরিবেশ সম্পর্কে তাকে সতর্ক করার ব্যাপারে বিশেষভাবে অংশগ্রহণ করে।

আরও পড়ুন :

মস্তিষ্ক কাকে বলে ? মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ ও কাজ ?

গুরুমস্তিষ্ক কাকে বলে ? গুরুমস্তিস্কের কাজ ও গঠন ?  

1 thought on “থ‍্যালামাস কাকে বলে ? থ‍্যালামাসের কাজ ও নিউক্লিয়ার গ্ৰুপ | What is Thalamus”

Leave a Comment