বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান

বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান : সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে শেয়ার করলাম বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান সম্পর্কে। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিস্তারিত আলোচনাটি।

বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান :

ভূমিকা : বাঙালির বিজ্ঞান সাধনায় যার নাম সর্বাগ্রে স্মরণ করা হয়, তিনি হলেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু। তিনি বিজ্ঞানের নানাবিধ গবেষণা ও প্রয়োগের মাধ্যমে বিশ্বের দরবারে বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করেন। 30 নভেম্বর 1858 সালে অধুনা বাংলাদেশে জগদীশচন্দ্র বসুর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হলেন প্রখ্যাত ডেপুটি কালেক্টর শ্রী ভগবান চন্দ্র বসু, মাতা হলেন বামাসুন্দরী দেবী।

1. শিক্ষাজীবন : পিতার কর্মক্ষেত্র ফরিদপুরে জগদীশচন্দ্র বসুর শিক্ষার সূচনা হলেও পরে সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল ও কলেজে পড়াশোনা করেন। পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ কৃতিত্বের সঙ্গে বি.এ পাশ করে জগদীশচন্দ্র বসু বিলেতে যান ডাক্তারি পড়তে। 1884 খ্রিস্টাব্দে বি.এস.সি পাস করে দেশে ফিরে আসেন। ক্যামব্রিজ ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের উজ্জ্বল ছাত্র ছিলেন তিনি।

2. কর্মজীবন : 1885 খ্রিস্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হন। তিনি প্রমাণ করেন উদ্ভিদ মানুষের মতোই অনুভূতিপ্রবণ। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ‘ক্রেসকোগ্রাফ’ , ‘স্ফিগমোগ্রাফ’ , ‘পেডোমিটার’ , ‘ফটোসিন্থেটিক বাবলার’ নামক কয়েকটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন। 1917 সালে তিনি ‘বসু মন্দির’ স্থাপন করেন কলকাতায়।

3. বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ : জগদীশচন্দ্র বসু 1895 খ্রিস্টাব্দে প্রথম অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ সৃষ্টি ও প্রেরণের পরীক্ষায় সফল হন। এর সাহায্যে কোনো তার ছাড়াই এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় সংকেত পাঠানো সম্ভব হয়। বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলে ‘বিদ্যুৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ’ এছাড়া মহাকাশ গবেষণার কাজ যেমন -‘টেলিভিশন’ও এরোপ্লেনের গতিপথের দিশারী ‘রাডার’ আবিষ্কারে তাঁর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।

4. উদ্ভিদ বিদ্যায় সাফল্য : জগদীশচন্দ্র প্রথম প্রমাণ করেন উদ্ভিদের ও প্রাণ আছে ; কষ্ট আছে, যন্ত্রণা আছে। তিনি উদ্ভিদ দেহের উত্তেজনার বেগ মাপার জন্য ‘রিজোনাস্ট রেকর্ডার’ আবিষ্কার করেন। তাছাড়া উদ্ভিদের বৃদ্ধি মাপার জন্য ‘ক্রেসকোগ্রাফ’ আবিষ্কার করেন। এছাড়া ‘ফটোমিটার’ , ‘স্ফিগমোগ্রাফ’ , ‘ফটোসিনথেটিক বাবলার’ প্রভৃতি যন্ত্র আবিষ্কার করেন।

5. বিজ্ঞান গবেষণা সংস্থা : জগদীশচন্দ্র বসু বিজ্ঞানের চর্চা ও গবেষণার জন্য 1917 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির’ নামে একটি সংস্থা তৈরি করেন। এর ফলে বিজ্ঞান গবেষণার নতুন দ্বার উদঘাটিত হয়।

মূল‍্যায়ন : বাঙালির বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে সর্বাধিক জনপ্রিয় ও স্মরণীয় বিজ্ঞানী হিসাবে আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে ও থাকবে।

আরও পড়ুন :

বাংলা চলচ্চিত্রে মৃণাল সেনের অবদান

বাংলা চিত্রকলায় যামিনী রায়ের অবদান

2 thoughts on “বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান”

Leave a Comment