বাঙালির বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে মেঘনাথ সাহার অবদান

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

বাঙালির বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে মেঘনাথ সাহার অবদান

বাঙালির বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে মেঘনাথ সাহার অবদান : সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে শেয়ার করলাম বাঙালির বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে মেঘনাথ সাহার অবদান সম্পর্কে। দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার্থী দের জন‍্য এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন দেখে নেওয়া যাক আজকের আলোচনাটি।

বাঙালির বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে মেঘনাথ সাহার অবদান :

ভূমিকা : বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিকে যেসব তাত্ত্বিক বাঙালি বিজ্ঞানী হিসেবে বিশ্বের বৈজ্ঞানিক মহলের সশ্রদ্ধ দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, তাঁদের মধ‍্যে একজন মেঘনাদ সাহা। প্রফুল্লচন্দ্র ছিলেন তাঁর আচার্যদেব। বৃহৎ শিল্পায়নের মাধ্যমে ভারতের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো গড়ে উঠুক-এই মতবাদের প্রবক্তা ছিলেন মেঘনাদ সাহা। বিজ্ঞানী মেঘনাদ সাহার অবদানগুলি নিম্নরূপ।

জ‍্যোতি পদার্থবিজ্ঞান : জ্যোতির্বিজ্ঞানী গবেষণার ক্ষেত্রে মেঘনাদ সাহার আয়নন তত্ত্ব এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। এই সূত্র 1920 খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হল ‘Tonisation in the solar Chromosphere’ শিরোনামের গবেষণাপত্রে। এই তথ্য আবিষ্কারের পূর্বে সূর্য এবং তারার বহিরাবনের পর্যবেক্ষণলব্ধ অজস্র ফল শৃঙ্খলাবদ্ধ করা যায়নি।

নিউক্লিয় গবেষণা : 1939 খ্রিস্টাব্দে অটো হ্যান পরমাণু বিভাজন গবেষণায় সফল হলে মেঘনাদ নিউক্লীয় গবেষণায় অধিকতর আগ্রহী হলেন। তিনি বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদনের জন্য পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের কথা বলেন। কলকাতায় তিনি ইনস্টিটিউট অফ্ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স ’ প্রতিষ্ঠা করেন । এখানে সাইক্লোট্রন • ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ • নিউক্লিয় বিজ্ঞান • তাত্ত্বিক বিজ্ঞান – বিষয়ে গবেষণা হত।

পঞ্জিকা সংস্কার : ভারতবর্ষের মতো সর্বধর্ম সমন্বিত এক দেশে পঞ্জিকার ক্ষেত্রে যে অনৈক্য দেখা যায়, 1952 খ্রিস্টাব্দে জওহরলাল নেহরুর নির্দেশে সেই অনৈক্য দূর করতে পঞ্জিকা সংস্কার কমিটি গঠিত হয়, মেঘনাদ সাহা ছিলেন সেই পঞ্জিকা সংস্কার কমিটির চেয়ারম্যান।

বন্যা সমস্যা সমাধান সংস্কার : পদার্থবিজ্ঞানীর বিশ্লেষণী মন নিয়ে বিংশ শতাব্দীর তিরিশের দশক থেকে প্রবহমান জলরাশি থেকে শক্তি অন্বেষণের প্রচেষ্টা চালান মেঘনাদ সাহা। বন্যাকে তিনি হাইড্রোডাইনামিক্সের এক সমস্যা হিসেবে দেখলেন। 1944 খ্রিস্টাব্দে কমলেশ রায়ের সঙ্গে যুগ্মভাবে প্রকাশ করেন ‘Training of the Tennesse River’ ও ‘Planning for the Damodor Vally’ গবেষণাদুটি।

মূল‍্যায়ন : মেঘনাদ সাহার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হল- “The principles of Relativity’ , Treatise of Heat’ , Treatise of Modern Physics । পরাধীন ভারতে চিন্তাভাবনার দেশ যেখানে দাঁড়িয়েছিল, মেঘনাদ সাহা তা থেকে বরাবর অনেক দূর এগিয়েছিলেন। প্রগতিবাদী এই অকুতোভয় মেঘনাদ সত্য থেকে সরেননি। তাই আধুনিক বৈজ্ঞানিক প্রেক্ষাপটে মেঘনাদ সাহার মৌলিকত্ব কোনোদিন বিস্মৃত হওয়ার নয়।

আরও পড়ুন :

বাংলা বিজ্ঞান চর্চায় জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান

1 thought on “বাঙালির বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে মেঘনাথ সাহার অবদান”

Leave a Comment