বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান

বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান : সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে শেয়ার করলাম বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান সম্পর্কে। চলুন দেখে নেওয়া যাক আজকের বিস্তারিত আলোচনাটি।

আরও জানুন : Weekipedia

বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে রামকিঙ্কর বেইজের অবদান :

ভূমিকা : শিল্পাচার্য নন্দলাল বসুর সান্নিধ্যে ও সাহচর্যে প্রশিক্ষিত হয়ে যাঁরা বাংলা তথা ভারতীয় শিল্পচর্চাকে অসামান্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, রামকিঙ্কর বেইজ ছিলেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তিনিই প্রথম ভারতীয় শিল্পী যিনি আধুনিক পাশ্চাত্য শিল্পকে নিজের ভাস্কর্যে প্রয়োগ করেছিলেন।

চিত্রকলা শিক্ষা : শৈশব থেকেই শিল্পের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগ ছিল। দেবদেবীর চিত্র অঙ্কনে, কামার-ছুতোরদের হাতের কাজ দেখে, পুতুল গড়ায়, পোস্টার লেখায়, থিয়েটারের মঞসজ্জায় তাঁর সহজাত প্রতিভার প্রকাশ লক্ষ করা যায়। তাঁর এই শিল্পচর্চার পরিচয় পেয়ে ‘প্রবাসী’ পত্রিকার সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে 1925 খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতনে নিয়ে এলে নন্দলাল বসুর সান্নিধ্যে তিনি চিত্রকলার প্রথাবদ্ধ শিক্ষালাভ করেন।

চিত্রকলাচর্চা ও স্বকীয়তা : রামকিঙ্করের শিল্পী সত্তার যথার্থ মুক্তি ঘটে শান্তিনিকেতনে এসে। তাঁর মাথার উপর ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, সহায়ক ছিলেন গুরু নন্দলাল বসু ও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি সিমেন্টের সঙ্গে কাঁকর মিশিয়ে শান্তিনিকেতনে উন্মুক্ত প্রকৃতির কোলে অসাধারণ কিছু ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। প্রকৃতিকেন্দ্রিক, চারপাশের মানুষের গ্রাম্যজীবন ইত্যাদি নিয়ে তিনি তেলরং ও জলরঙে ছবি এঁকেছেন।

উল্লেখযোগ্য চিত্রকলা : রামকিঙ্করের ‘সুজাতা’ দেখে রবীন্দ্রনাথ মুগ্ধ হন। এ ছাড়াও ‘হাঁটের সাঁওতাল পরিবার’ , ‘গান্ধিজী’ , ‘বুদ্ধদেব’ ,  কাজের শেষে উল্লেখযোগ্য সাঁওতাল পরিবার’ , ‘কৃষ্ণের জন্ম’ ,  সাঁওতাল দম্পতি ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি। নিজের জীবনে দারিদ্র্য থাকলেও দেশের দীপ্ত মুখচ্ছবিকে সারা বিশ্বের দরবারে তুলে চিত্রকলা ধরেছেন।

উপাধি ও সম্মান : রামকিঙ্কর তাঁর অসাধারণ শিল্পকর্মের প্রতিভাবলে 1970 খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের কাছ থেকে ‘পদ্মভূষণ’ এবং 1976 খ্রিস্টাব্দে বিশ্বভারতীর থেকে ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি লাভ করে সম্মানিত হন।

মূল‍্যায়ন : রামকিঙ্কর বেইজের অঙ্কিত চিত্রাবলীতে ভারতীয় সৃজনকলার বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি নিজস্ব স্বকীয়তা প্রভাবও লক্ষ্য করা যেত। তিনি তাঁর চিত্রকলায় অন্ত্যজ শ্রেণীর মানুষদের দৈনন্দিন জীবনের চিত্র ফুটিয়ে তোলায় যেন প্রত্যেক অন্ত্যজ শ্রেণীর মানুষের পাশাপাশি আপামর বাঙালির হৃদয় জয় করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর এই অসাধারণ প্রতিভাবলেই তিনি বাঙালির চিত্রকলার জগৎ কে যেন আরও উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতম স্থানে পৌঁছে দিতে এক অনবদ্য ভূমিকা পালন করেছেন।

আরও পড়ুন :

বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান

বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে যামিনী রায়ের অবদান

বাংলা চিত্রকলার ইতিহাসে নন্দলাল বসুর অবদান

Leave a Comment