করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা রচনা PDF

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা রচনা PDF | করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা প্রতিবেদন রচনা

করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা রচনা : সুপ্রিয় পাঠকগন আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম, এই পর্বটিতে করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা রচনা টি সম্পর্কে নিঁখুত ভাবে আলোচনা করেছি। যা তোমাদের জন‍্য খুবই সাহায্যকারী হবে। চলো দেখে নেওয়া যাক করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা রচনা টি ।

করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা রচনা :

ভূমিকা : ওড়িশায় ২ জুন একটি মালবাহী রেলগাড়ি, ১২৮৪১ করমণ্ডল এক্সপ্রেস ও ১২৮৬৪ বেঙ্গালুরু-হাওড়া এসএফ এক্সপ্রেস এই তিনটি ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে এই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটে। শালিমার চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন মালগাড়ির উপর উঠে যায়। দুই ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষের জেরে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের প্রায় ১৫টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। এদিকে পাশের লাইনে যশবন্তপুর-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের সঙ্গেও ধাক্কা লাগে উলটে পড়া বগিগুলির। এর জেরে ওই ট্রেনটিরও দু’টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে একাধিক ট্রেনের কামরা। লাইন থেকে ছিটকে পড়েছে একাধিক বগি। এই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার জেরে শয়ে শয়ে যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন প্রচুর মানুষ।

এই ঘটনায় কমপক্ষে ৩০০ জন নিহত এবং ৯০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে, যা এটিকে ইতিহাসের সবচেয়ে মারাত্মক রেল দুর্ঘটনার মধ্যে একটিতে পরিণত করেছে।

দুর্ঘটনার প্রেক্ষাপট : দুর্ঘটনাটিকে একবিংশ শতাব্দীর শুরুর পর থেকে দেশের সবচেয়ে গুরুতর রেল দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য পর্যায়ক্রমিক যথেষ্ট বিনিয়োগ সত্ত্বেও ভারতে প্রায়ই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে, ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী ট্রেন ট্র্যাজেডি ঘটেছিল ১৯৮১ সালে, বিহারে একটি ঘূর্ণিঝড়ের সময় যখন একটি জনাকীর্ণ যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয় এবং একটি নদীতে পড়ে যায়, যার ফলে ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

দুর্ঘটনা : ২ জুন আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে বালেশ্বর জেলার বাহানাগা বাজার রেলওয়ে স্টেশনের কাছে হাওড়া-চেন্নাই প্রধান লাইনে দু’টি যাত্রীবাহী রেলের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, এতে কমপক্ষে ৩০০ জন নিহত হয় এবং ৯০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। এটি ধারণা করা হয়েছিল যে প্রথম ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছিল ও এর কয়েকটি বগি উলটে যায় এবং বিপরীত ট্যাকে গিয়ে শেষ হয়। যেখানে সেগুলি দ্বিতীয় রেলটির সাথে ধাক্কা খেয়েছিল। দুর্ঘটনার সঙ্গে একটি মালবাহী ট্রেনও জড়িত বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনায় পতিত যাত্রীবাহী রেলগুলি হল ১২৮৪১ করমণ্ডল এক্সপ্রেস, যা শালিমার ও এমজিআর চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনের মধ্যে যাতায়াত করছিল এবং ১২৮৬৪ এসএমভিটি বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, যা এসএমভিটি বেঙ্গালুরু ও হাওড়া স্টেশনের মধ্যে যাতায়াত করছিল।

উদ্ধারকার্য : হাজার হাজার মানুষের ভিড় জমেছে দুর্ঘটনাস্থলে। উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে সমানতালে পাল্লা দিয়ে উদ্ধারকার্যে সাহায্য করে গিয়েছেন স্থানীয়রাও। সরকারি হিসেবে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ২৮৯ জনের। আহত হয়েছেন ৯০০ জনের বেশি যাত্রী। শুক্রবার সারা রাত ধরে চলেছে উদ্ধারকাজ। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বালেশ্বর জেলা হাসপাতালে। বালেশ্বরের বাহানাগায় দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিকদের সামনে উপরিক্ত কথাগুলি বললেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। তবে প্রাথমিকভাবে রেলের সমস্ত লক্ষ্য যে উদ্ধারকার্য, আর তা নিয়ে কোনো রাজনীতিকে প্রশ্রয় নয়, সেটা স্পষ্ট করে দেন রেলমন্ত্রী।

দুর্ঘটনার কারণ : ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে, পরপর তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি শালিমার স্টেশন থেকে চেন্নাই যাচ্ছিল। প্রথমেই লাইনচ্যুত হওয়া হামসফর এক্সপ্রেসের দুটি বগির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। ওই সংঘর্ষের পর একই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় করমণ্ডল এক্সপ্রেসের। সঙ্গে সঙ্গে দুমড়েমুচড়ে করমণ্ডলের ইঞ্জিন উঠে যায় মালগাড়ির উপরে।

রেলের তৎপরতা : ভারতীয় রেলওয়ে এবং ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে। ওড়িশার মুখ্যসচিব প্রদীপ জানার মতে, তিনটি ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) ইউনিট, চারটি ওডিশা ডিজাস্টার র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স ইউনিট, ১৫টিরও বেশি দমকল দল, ১০০ জন ডাক্তার, ২০০ জন পুলিশকর্মী ও ২০০টি অ্যাম্বুলেন্স উদ্ধার অভিযানের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে। এনডিআরএফের আরও চারটি দল দুর্ঘটনাস্থলের দিকে যাচ্ছিল বলে জানা গেছে। স্থানীয় বাস পরিষেবা সংস্থা আহত যাত্রী পরিবহন সহায়তা করেছে। স্থানীয় অসামরিক ব্যক্তিরা যাত্রীদের জল সরবরাহ করেছিল এবং যেখানে সম্ভব তাদের লাগেজ পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করেছিল।

প্রতিক্রিয়া : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তিনি টুইটারে লিখেছেন, “দুর্ঘটনাস্থলে বর্তমানে উদ্ধারকাজ চলছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এই ঘটনাকে ‘গভীরভাবে বেদনাদায়ক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীরা এই বিপর্যয়ে গভীর উদবেগ প্রকাশ করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা এই ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন।

উপসংহার : রেল কর্তৃপক্ষ ও অন্যান্য সকলের সহযোগিতায় দ্রুততার সঙ্গে রেললাইন পরিষ্কার করার কাজ শুরু করা হয়। মৃতদেহ গুলিকে বাহানাগাঁ স্টেশন সংলগ্ন একটি স্কুলে রাখার ব্যবস্থা করা। হয়। প্রচণ্ড গরমে দেহগুলিতে পচন শুরু হয়, কটু গন্ধ বের হতে থাকে, ওড়িশা সরকার ৮ জুন পর্যন্ত গ্রীষ্মের ছুটি ঘোষণা করে, তবে এই বিদ্যালয়টি খোলা যায়নি। ছাত্রছাত্রীরাও আসছে না। রেলমন্ত্রকের বক্তব্য, পরিতক্ত কামরাগুলিতে আর কোনো মৃতদেহ আটকে নেই তাবে দুর্ঘটনাগ্রস্ত যশোবন্তপুর এক্সপ্রেসের কামরায় প্রায় চার টন ডিম আসছিল, সেগুলি নষ্ট হয়েছে, তার একটা কটু গন্ধ বাহানাগা সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে। ৪ জুন রাত থেকেই পরীক্ষা করমণ্ডল এক্সপ্রেস ছাড়ে। তবে দুর্ঘটনাস্থলে সব ট্রেনের গতি ছিল ২০ কিমি।

জনৈক সাংবাদিক যাত্রীদের প্রশ্ন করেন যে আপনাদের আবার করমণ্ডল এক্সপ্রেসে উঠতে ভয় করছে না? উত্তর- আসে কাজ করতে কিংবা চিকিৎসা করতে যেতেই হবে, ঘরে বসে থেকে ভয় পেলে তো চলবে না। কামনা জানাবো আগামী দিনে রেলযাত্রা যেন নিরাপদ হয়, আর যেন কোনো মায়ের কোল খালি না হয়। ভারতীয় রেল প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির যেন নিরাপদ হয়, আর যেন কোনো মায়ের কোল খালি না হয়। ভারতীয় রেল প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে দেন, এছাড়াও ভারতীয় বিচারপতি, ক্রিকেটাররাও মৃত ও আহত ব্যক্তিদের নানা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন।

PDF DOWNLOAD ZONE
File Name : করমন্ডল এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনা রচনা
Language : বাংলা 
Size : 46 KB
Clik Here To Download

আরও দেখুন :

বাংলার উৎসব রচনা 

খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রচনা 

পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার

চন্দ্রযান ৩ প্রতিবেদন রচনা

Leave a Comment