বাংলা গানের ধারায় কবি মুকুন্দদাসের অবদান | Mukunda Das

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

বাংলা গানের ধারায় কবি মুকুন্দদাসের অবদান

বাংলা গানের ধারায় কবি মুকুন্দদাসের অবদান : সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে শেয়ার করলাম বাংলা গানের ধারায় চারণ কবি মুকুন্দদাসের অবদান সম্পর্কে। এখানে দুটি উত্তর প্রদান করা হল তোমাদের ইচ্ছেমতো যেকোনো একটি উত্তর পড়লেই হবে।

বাংলা গানের ধারায় কবি মুকুন্দদাসের অবদান :

ইংরেজ শাসনকালে আপামর জনসাধারণের কাছে চারণ কবি মুকুন্দদাস ছিল একটি জনপ্রিয় নাম। কবির পিতৃদত্ত নাম ছিল যজ্ঞেশ্বর দে। 1900 খ্রিস্টাব্দে রসানন্দ ঠাকুরের কাছে বৈয়ব ধর্মে দীক্ষান্তে তিনি ‘মুকুন্দদাস’নামে খ্যাত হন কিন্তু ‘চারণ কবি’ নামেই তাঁর প্রসিদ্ধি। অন্য ধারার গানে কবি জনমানসে অতি গভীর প্রভাব ফেলতে পেরেছিলেন । স্বদেশি নেতা অশ্বিনীকুমার দত্তের শিষ্য ছিলেন কবি।

স্বভাবতই স্বাদেশিকতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘মাতৃপূজা’ পালাগান রচনা করেন। এই পালাটি নিয়ে তিনি চারণের ভূমিকায় পূর্ববঙ্গ ভ্রমণকালে যুগপৎ ব্রিটিশ সরকার এবং সংবাদপত্রের নজরে আসেন, ফলশ্রুতিতে তিনি বছর তিনেক কারাদণ্ডও ভোগ করেন। ‘মাতৃপূজা’ ব্রিটিশ কোপে নিষিদ্ধ হওয়ার পর তিনি সমাজনির্ভর পালা লিখতে শুরু করলেও সব পালারই মূল মন্ত্র ছিল গণজাগরণ ও স্বাদেশিকতা।

1932 খ্রিস্টাব্দে মুকুন্দদাস রচিত ‘পল্লিসেবা’ , ‘ব্রষ্মচারিণী’ , ‘সমাজ ও পথ’ প্রভৃতি সব পালাই বাজেয়াপ্ত ও নিষিদ্ধ হয়। তাঁর রচনা ‘ছেড়ে দাও রেশমি চুড়ি বঙ্গনারী’ , ‘ সাবধান ! ঐ আসিছে নামিয়া ন্যায়ের দণ্ড, ‘বান এসেছে মরা গাঙে’ ইত্যাদি গানগুলি যুগের প্রয়োজন মিটিয়েও সমান জনপ্রিয় ও প্রাসঙ্গিক হয়ে রয়েছে।

দ্বিতীয় উত্তর : 

◆ বাংলা গানের ধারায় কবি মুকুন্দদাসের অবদান :

বাংলা গানের চারণকবি মুকুন্দদাস ছিলেন অবিভক্ত বাংলার বরিশালের অদ্বিতীয় নেতা অশ্বিনীকুমার দত্তের শিষ্য,শুরুর দিকে মুকুন্দ দাস যাত্রার গান লিখতেন। তা শুনে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত মুগ্ধ হন। মুকুন্দ দাস গ্রামে গ্রামে দেশপ্রেমমূলক গান গেয়ে বেড়াতেন, অভিনয় করতেন যাত্রাপালায়। ভবরঞ্জন মজুমদার সম্পাদিত ‘মাতৃপূজা’ সংকলনে তাঁর একটি গান- ‘ ছিল ধান গোলাভরা, শ্বেত ইঁদুরে করল সারা’।এ গানের জন্য তিনি ব্রিটিশ সরকারের হাতে গ্রেপ্তার হন এবং তাঁর তিন বছর কারাদণ্ড ও জরিমানা হয়।

অসহযোগ এবং আইন – অমান্য আন্দোলনের সময় তিনি যাত্রাপালা ও গান দিয়ে দেশের মানুষকে মাতিয়ে তোলেন। তাঁর ‘মাতৃপূজা’ নামক যাত্রাপালাটি ওই যুগে জনপ্রিয় হয় দেশের তরুণদের কাছে। তাঁর রচিত কয়েকটি গ্রন্থ যেমন- সাধনসংগীত, ব্রহ্মচারিণী, পল্লীসেবা, সাথী প্রভৃতি। বাংলা গানের এই ভিন্ন ধারার গীতিকার সারাজীবনে অজস্র পুরস্কার পেয়েছিলেন। কিন্তু তা ছাপিয়ে তিনি বাঙালি সংগীত শ্রোতার কাছে আজও প্রিয় হয়ে আছেন তাঁর অপূর্ব গানগুলির জন্য।

মুকুন্দ দাস বৈঘ্নবধর্মে দীক্ষিত হলেও তাঁর সাধনসংগীতে আছে পদাবলি ও শ্যামাসংগীতের অপূর্ব সমন্বয়। তিনি সারাজীবন কোনো সম্প্রদায়ভুক্ত হননি। নিয়মিত কীর্তনের আসরেও যোগ দিতেন, লিখতেন বরিশাল হিতৈষী পত্রিকায়। বিদেশি বর্জন উপলক্ষ্যে রচিত তাঁর গানগুলি প্রতিবাদী মানুষের মনে ঢেউ তোলে। তাঁর গান আজও আধুনিক। বাংলা গানের ইতিহাসে তাঁর আসন চিরকাল উজ্জ্বল থাকবে।

আরও পড়ুন :

বাংলা গানের ধারায় কাজী নজরুল ইসলামের অবদান 

বাংলা গানের ধারায় অতুলপ্রসাদ সেনের অবদান 

বাংলা গানের ধারায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান 

বাংলা গানের ধারায় রজনীকান্ত সেনের অবদান 

1 thought on “বাংলা গানের ধারায় কবি মুকুন্দদাসের অবদান | Mukunda Das”

Leave a Comment