মনোযোগ কাকে বলে ? মনোযোগের শ্রেণীবিভাগ, প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য, শর্ত আরও তথ‍্য

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

মনোযোগ কাকে বলে ? মনোযোগের শ্রেণীবিভাগ, প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য, শর্ত আরও তথ‍্য

মনোযোগ কাকে বলে : সুপ্রিয় ছাত্র ছাত্রী আজকে তোমাদের সাথে আলোচনা করলাম মনোযোগ কাকে বলে এবং মনোযোগের শ্রেণীবিভাগ, প্রকৃতি, বৈশিষ্ট্য, শর্ত আরও বিস্তারিত তথ‍্য সম্পর্কে।

মনোযোগ কাকে বলে : শিখনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো মনোযোগ আজকে আমরা আলোচনা করব মনোযোগ কাকে বলে। চলনা দেখে নেয়া যাক আজকের বিস্তারিত আলোচনাটি।

Table of Contents

🔷মনোযোগ কাকে বলে :

যে মানসিক প্রক্রিয়া অনেকগুলো বিষয়ের মধ্যে থেকে কোন একটি বিষয়ের মধ্যে আমাদের চেতনাকে কেন্দ্রীভূত করে তাকে মনোযোগ বলে।

অপর ভাবে মনোযোগ কাকে বলে বলতে গেলে, অবয়ববাদী মনোবিদদের মতানুসারে চেতনার কেন্দ্রীভূতকরণই হল মনোযোগ। আধুনিক মনোবিদদের মতে, কোনো বিষয়বস্তু সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে মনকে নিবিষ্ট করার দৈহিক – মানসিক প্রক্রিয়াকে মনোযোগ বলে। তত্ত্ব প্রক্রিয়াকরণ তত্ত্বানুযায়ী মনোযোগ হল শিখনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

বিভিন্ন মনোবিদ মনোযোগের বিভিন্ন সংজ্ঞা দিয়েছেন যথা-

1. উনিশ শতকের মাঝামাঝি ভুন্ড , টিচেনার প্রমুখ অবয়ববাদী মনোযোগকে কেন্দ্রীভূত চেতনা হিসেবে আখ্যা দেন।

2. বিশ শতকের প্রথম ভাগে আচরণবাদী উডওয়ার্থ মনোযোগের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন , চেতন মনের নির্বাচন প্রক্রিয়া হল মনোযোগ । অনেকগুলি উদ্দীপকের মধ্যে থেকে কোনো একটি বিশেষ উদ্দীপক বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়াকে মনোযোগ বলে।

3. রস এর মতে– মনোযোগ হল একটি প্রক্রিয়া যা চিন্তার বিষয়কে সুস্পষ্টভাবে মনের দরজায় এনে উপস্থিত করে।

4. ম্যাকডুগালের মতে– যে মানসিক সক্রিয়তা জ্ঞানমূলক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে তাকে মনোযোগ বলে।

5. আর এন শর্মার মতে , মনোযোগ হল এমন একটি প্রক্রিয়া , যা ব্যক্তিকে পরিবেশের মধ্যে অবস্থিত বহু উদ্দীপকের মধ্য থেকে তার আগ্রহ ও দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী বিশেষ উদ্দীপকটিকে নির্বাচন করতে বাধ্য করে।

🔷 মনোযোগের শ্রেণিবিভাগ :

মনোবিদ রস মনোযোগকে দু – ভাগে বিভক্ত করেছেন যথা-
1. ইচ্ছাপ্রসূত মনোযোগ এবং 2. ইচ্ছানিরপেক্ষ মনোযোগ। নিম্নে এগুলি আলোচনা করা হল –

1. ইচ্ছাপ্রসূত মনোযোগ কাকে বলে :

যে মনোযোগের পিছনে ব্যক্তির ইচ্ছা ক্রিয়াশীল , তাকে ইচ্ছাপ্রসূত মনোযোগ বলে। যেমন -পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ না থাকলেও শিক্ষার্থী পরীক্ষার আগে পাঠের প্রতি মনোযোগী হয়। এই ইচ্ছাপ্রসূত মনোযোগকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।যথা- গুপ্ত ইচ্ছাপ্রসূত মনোযোগ এবং ব্যক্ত ইচ্ছাপ্রসূত মনোযোগ।

2. ইচ্ছানিরপেক্ষ মনোযোগ কাকে বলে :

উদ্দীপক বা পরিস্থিতির বৈশিষ্ট্য যখন আমাদের মনোযোগকে নিয়ন্ত্রণ করে , আমাদের ইচ্ছা – অনিচ্ছা যখন মূল্যহীন , তাকে ইচ্ছানিরপেক্ষ মনোযোগ বলে। যেমন-পড়ার সময় যদি বাইরে মাইকে কোনো বক্তৃতা হয় তখন আমাদের মনোযোগ সেখানে আকৃষ্ট হয়। অর্থাৎ বলা যায় ইচ্ছা না থাকা সত্ত্বেও আমরা সেটির প্রতি মনোযোগ দিতে বাধ্য হই।

🔷 মনোযোগের প্রকৃতি বা স্বরূপ :

মনোযোগ হল শিখনের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক। যে – কোনো ধরনের শিখনের ক্ষেত্রে মনোযোগের প্রয়োজন লাগে না। মনোযোগের স্বরূপ বা প্রকৃতি নিম্নে বিদ‍্যমান-

1. সংরক্ষণ বা ধারণ :

মনোযোগ হল সংরক্ষণের বা ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত । আমরা যে বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিই , সেই বিষয়টি আমাদের মনের গভীরে রেখাপাত করে । অন্যান্য সব শর্ত সঠিক অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও কেবলমাত্র যথাযথভাবে মনোযোগ না দেওয়ার ফলে আমরা অনেক বিষয়ই মনের মধ্যে ধারণ করতে বা সংরক্ষণ করতে পারি না।

2. নির্বাচনধর্মী প্রক্রিয়া :

মনোযোগ নির্বাচনধর্মী প্রক্রিয়া। আমাদের চারপাশে অনেক কিছু ছড়িয়ে আছে, আমরা তাদের মধ্যে থেকে একটিকে নির্বাচন করে মনোযোগী হয়ে উঠি।

3. ইচ্ছামূলক মানসিক প্রক্রিয়া :

মনোযোগ একটি ইচ্ছামূলক মানসিক প্রক্রিয়া , কারণ এই প্রক্রিয়াটিকে একটি বিশেষ দিকে চালিত করতে হয়।

4. অস্থির ও সঞ্চারণশীল :

মনোযোগ হল অস্থির ও সঞ্চারণশীল। মনোযোগ এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে চলে যাতে পারে।

5. ক্ষেত্র সীমিত :

মনোযোগের ক্ষেত্র খুব সীমিত এবং সংকীর্ণ কারণ একই সময়ে মাত্র একটি বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া যায়।

6. মনোযোগের নির্ধারক :

সাধারণভাবে মনোযোগের দু – ধরনের নির্ধারক বিদ‍্যমান রয়েছে বস্তুগত ও ব্যক্তিগত। বস্তুগত নির্ধারকে মনোযোগের কারণ বস্তুর মধ্যে নিহিত থাকে যথা- বস্তুর আকার , অভিনবত্ব প্রভৃতি। ব্যক্তিগত নির্ধারকগুলি ব্যক্তির মধ্যেই অবস্থান করে যথি- আগ্রহ , চাহিদা , প্রেষণা প্রভৃতি।

7. দ্বিস্তরবিশিষ্ট :

মনোযোগের দুটি স্তর রয়েছে যথা- কেন্দ্রীয় স্তর এবং প্রান্তীয় স্তর।

8. দৈহিক পরিবর্তন :

মনোযোগের সময় দৈহিক পরিবর্তন লক্ষ‍্য করা যায়। আমাদের যার প্রতি মনোযোগী হই , সেই দিকে আমাদের দৃষ্টি ও শ্রবণ আকৃষ্ট হয়।

🔷 মনোযোগের বৈশিষ্ট্য :

মনোযোগের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলি নীচে আলোচনা করা হল-

1. নির্বাচনধর্মী :

উডওয়ার্থ প্রমুখ আচরণবাদী মনোযোগের নির্বাচনধর্মী বৈশিষ্ট্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। মনোযোগে একাধিক বিষয় বা বস্তুর মধ্যে থেকে একটিকে বেছে নেওয়া হয়।

2. পরিসরযুক্ত :

মুহূর্তমাত্র দেখে বা শুনে ব্যক্তি যতগুলি বস্তুর প্রতি মনোযোগ দেয়  তাকে মনোযোগের পরিসর বলা হয়।

3. কেন্দ্রানুগ :

টিচেনারের মতে চেতনার দুটি স্তর আছে যথা- a. কেন্দ্রীয় চেতনার স্তর এবং b. প্রান্তীয় চেতনার স্তর। বস্তু যখন কেন্দ্রীয় চেতনার স্তরে অবস্থান করে তখন বস্তু সম্পর্কে আমরা সচেতন বা মনোযোগী হই।

4. সঞ্চারণশীল :

একটি নির্দিষ্ট বস্তুর প্রতি ইচ্ছা সত্ত্বেও প্রাকৃতিক নিয়মে বেশিক্ষণ মনোযোগ দেওয়া যায় না, মনোযোগ পার্শ্ববর্তী অন্য বস্তুতে চলে যাওয়াকে মনোযোগের সঞ্চারণশীলতা বলে। পরীক্ষায় দেখা গেছে যে গড়ে দুই সেকেন্ড অন্তর এটি ঘটে।

5. দৈহিক পরিবর্তননির্ভর :

মনোযোগের সময় দৈহিক পরিবর্তন ঘটে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল অঙ্গ – সঞ্চালনমূলক, ইন্দ্রিয়ঘটিত এবং স্নায়ুঘটিত পরিবর্তন।

6. চঞ্চলতা :

কোনো বস্তুর প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়ার সময় লক্ষ‍্য করা যায়, কিছুক্ষন সময় অন্তর মনোযোগ অন্য জায়গায় চলে যায় এবং আবার তা ফিরে আসে। মনোযোগের এই বৈশিষ্ট্যকে মনোযোগের চঞ্চলতা বলে। পরীক্ষায় দেখা গেছে , মনোযোগের এই চঞ্চলতা 8-12 সেকেন্ড পর পর ঘটে।

7. সীমাবদ্ধ ও একমুখীনতা :

এক সময়ে একটি বস্তু বা বিষয়ের ওপর মনোযোগ দেওয়া সম্ভব কিন্তু একই সময়ে একাধিক বস্তু বা বিষয়ের ওপর মনোযোগ দেওয়া অসম্ভব।

8. নতুন কিছুর সন্ধান :

মনোযোগ হল  ছকটি অনুসন্ধানী। মনোযোগ সব সময় বিভিন্ন বিষয়বস্তুর মধ্যে বৈচিত্র্য বা নতুনত্ব খুঁজতে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, শিশুরা নতুন খেলনার প্রতি সহজেই আকৃষ্ট হয়।

9. সম্বন্ধ স্থাপন :

মনোযোগ বিভিন্ন বিষয়বস্তুর মধ্যে একটি সম্বন্ধ স্থাপন করতে সহায়তা করে।

10. উপযোজননির্ভর :

মনোযোগের ক্ষেত্রে ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে বিষয়বস্তুর বিশেষ উপযোজন প্রয়োজন হয়।

🔷 মনোযোগের শর্ত বা নির্ধারক :

মনোযোগের শর্তগুলিকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়যথা- 1. বস্তু গত নির্ধারক 2.ব্যক্তিগত নির্ধারক এবং  3. শারীরিক বা দৈহিক শর্ত বা কারণ।

1. বস্তুগত নির্ধারক :

বস্তু বা উদ্দীপকের বৈশিষ্ট্যই যখন ব্যক্তির মনোযোগ আকর্ষণ করে , তখন তাকে বস্তুগত নির্ধারক বলা হয় । এখানে নির্ধারক ব্যক্তিনিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে। বস্তুগত নির্ধারকগুলির মধ্যে যেগুলি রয়েছে-

i. তীব্রতা : তীব্র আলো , প্রচণ্ড শব্দ , গাঢ় রং ইত্যাদি আমাদের মনকে জোর করে আকর্ষণ করে।

2. বিস্তৃতি : উদ্দীপকের বিস্তৃতি আমাদের মনোযোগকে আকর্ষণ করে । অস্বাভাবিক দীর্ঘ বা খর্ব কিংবা বেজায় স্থূলকায় ব্যক্তির প্রতি আমাদের মনোযোগ সহজেই চলে যায়।

iii. পুনরাবৃত্তি : পুনরাবৃত্তি মনোযোগের অন্যতম বস্তুগত নির্ধারক। ‘ সাহায্য করো ’ কথাটি একবার উচ্চারিত হলে , আমরা মনোযোগ দিতে নাও পারি , কিন্তু ওই কথাটি বারবার উচ্চারিত হলে আমরা মনোযোগ না দিয়ে পারি না।

iv. উদ্দীপকের স্থায়িত্ব বা দীর্ঘ সময় : উদ্দীপক অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হলে আমাদের মনোযোগ এড়িয়ে যেতে পারে । কিন্তু দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হলে আমরা মনোযোগ দিতে বাধ্য হই।

2. ব্যক্তিগত নির্ধারক :

মনোযোগ যখন ব্যক্তির বৈশিষ্ট্যের দ্বারা নির্ধারিত হয় তখন তাকে ব্যক্তিগত নির্ধারক বলে । এই ধরনের নির্ধারকগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-

i. আগ্রহ : ম্যাকডুগাল – এর মতে, আগ্রহ হল সুপ্ত মনোযোগ এবং মনোযোগ হল সক্রিয় অনুরাগ। আগ্রহ ও মনোযোগের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বর্তমান।

ii. অভ্যাস : অভ্যাস মনোযোগের অন্যতম ব্যক্তিগত নির্ধারক। ঘুম থেকে উঠে যাদের খবরের কাগজ পড়া অভ্যাস , তারা যতক্ষণ না খবরের কাগজ পড়তে পারে ততক্ষণ অন্য কোনো বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারে না।

iii. চাহিদাপূরণ : খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য খাদ্যবস্তুর প্রতি আমরা মনোযোগ দিই। কোনো বিষয়ে জ্ঞানের চাহিদা পূরণের জন্য আমরা সেই বিষয়ের বইয়ে মনোযোগী হই।

iv. সেন্টিমেন্ট : সেন্টিমেন্ট এক ধরনের মানসিক সত্তা যা কোনো ব্যক্তি , ঘটনা , বস্তু বা বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে।

3. শারীরিক বা দৈহিক শর্ত বা কারণ :

মনোযোগের ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতাও অন্যতম শর্ত হিসেবে কার্যকর। যদিও শারীরিক শর্তগুলি সঠিক অর্থে মনোযোগের শর্ত নয়, তবুও তা মনঃসংযোগের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে যথা-

i. জ্ঞানেন্দ্রিয়সমূহকে নিবদ্ধ করা : মনোযোগের বিষয়বস্তুর প্রতি . জ্ঞানেন্দ্রিয়গুলিকে নিবদ্ধ করতে হয়। যথা- চোখ বা কানকে সজাগ করা।

ii. শারীরিক পরিবর্তন : মনোযোগ দেওয়ার জন্য আমরা শারীরিক অঙ্গ , পেশি বা ইন্দ্রিয়ের পরিবর্তন ঘটাই। যথা- মনোযোগের বস্তুর দিকে আমরা মাথা হেলাই।

iii. দেহের বিশেষ ভঙ্গিমা : মনোযোগ দেওয়ার জন্য অনেকের মধ্যে বিশেষ ধরনের দেহভঙ্গিমা দেখা যায়। যথা-বহু শিল্পী মনোযোগ দিয়ে গান গাওয়ার সময়ে চোখ বন্ধ করে ফেলেন।

iv. ব্যক্তিগত অভ্যাস : বহু ব্যক্তি বিশেষ কোনো বিষয়ে মনোযোগ দিলে পা নাচাতে থাকেন। পা নাচানো বন্ধ করলেই তাদের মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়।

🔷 মনোযোগ আকর্ষণের উপায় :

মনোযোগ আকর্ষণের গুরুত্বপূর্ণ উপায়গুলি নিজে আলোচনা করা হল-

1. শিক্ষাব্যবস্থার বৈচিত্র্য : পাঠক্রমকে কেবলমাত্র গ্রন্থকেন্দ্রিক না করে বিচিত্র ও বহুমুখী করে তুলতে হবে। ক্রীড়া ও কর্মভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করা প্রয়োজন যাতে শিক্ষার্থীদের বিচিত্র বিষয়ে রুচি ও অনুরাগ সৃষ্টি হয়।

2. সুষ্ঠ পরিবেশ : কোলাহলমুক্ত শান্ত প্রাকৃতিক পরিবেশে বিদ্যালয় স্থাপিত হলে পড়াশোনার প্রতি শিক্ষার্থীদের মনোযোগ সহজে আকৃষ্ট হয়।

3. উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্টতা : শিক্ষার উদ্দেশ্যকে শিক্ষার্থীদের কাছে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন।

4. বিশ্রামের সুব্যবস্থা : শিক্ষার্থীদের ক্লান্তি ও একঘেয়েমি দূর করার জন্য সময়সূচিতে মনোবিজ্ঞানসম্মতভাবে বিভিন্ন বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মাঝে মাঝে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে।

5. জীবনকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা : দৈনন্দিন জীবনের ঘটনা ও বাস্তব অভিজ্ঞতার সঙ্গে শিক্ষার সমন্বয় ঘটালে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।

6. দৃষ্টি ও শ্রুতিনির্ভর শিক্ষার ব্যবস্থা : শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বা অনুরাগকে ক্রিয়াশীল করতে হলে পাঠদানকালে দৃষ্টিনির্ভর ও শ্রুতিনির্ভর শিক্ষার উপকরণ ব্যবহার করা আবশ্যক।

🔷 শিক্ষায় মনোযোগের ভূমিকা :

শিক্ষার সঙ্গে মনোযোগের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। শিখনের একটা বড়ো সমস্যা হল শিক্ষার্থীর মনোযোগ আকর্ষণ করা। এ ব্যাপারে মনোবিদরা কয়েকটি কৌশল উল্লেখ করেছেন সেগুলি হল-

1. মনোযোগ আকর্ষণকারী কৌশল :

ব্যক্তিজীবনে মনোযোগের রূপ এক থাকে না। শৈশবকালে ব্যক্তিনিরপেক্ষ মনোযোগের প্রাধান্য লক্ষ‍্য করা যায়। এই স্তরে বস্তুর বৈশিষ্ট্যই মনোযোগের নির্ধারক। চাহিদাকে কেন্দ্র করে শিশুর শিখনকে বিন্যস্ত করতে হবে।

2. ইচ্ছাসাপেক্ষ কৌশল :

পরবর্তী স্তরে ইচ্ছাসাপেক্ষে মনোযোগ দেখা যায়। এই সময় শিখনের উদ্দেশ্য ও ব্যাবহারিক প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে অবহিত করে , সেন্টিমেন্ট সৃষ্টি করে , উপদেশ দিয়ে , প্রয়োজনে লঘু শাসন ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীর মনোযোগ আকর্ষণ করতে হবে।

3. নির্ধারক প্রয়োগ কৌশল :

মনোযোগের নির্ধারকগুলিকে প্রয়োজনমতো প্রয়োগ করতে হবে। তীব্রতা, স্পষ্টতা, নতুনত্ব, পুনরাবৃত্তি প্রভৃতি মনোযোগের বস্তুগত নির্ধারকগুলিকে শিখনীয় বিষয়গুলির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

4.পরিসর অনতিক্রম্য কৌশল :

বিষয়বস্তু নির্বাচনে শিক্ষককে লক্ষ রাখতে হবে তা যেন শিক্ষার্থীর মনোযোগের পরিসর অতিক্রম না করে। প্রয়োজন হলে বড়ো ও জটিল বাক্যকে ছোটো সরল বাক্যে পরিণত করতে হবে।

আরও পড়ুন :

বংশগতি কাকে বলে ? বংশগতির সুত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্তর