কলারস কাকে বলে : সুপ্রিয় পাঠকগন আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম , এই পর্বটিতে আমরা কলারস কাকে বলে এবং কলারসের উপাদান ও কলারসের কাজ সম্পর্কে নিঁখুত ভাবে আলোচনা করেছি, যা আপনাদের জন্য খুবই হেল্পফুল হবে।
কলারস কাকে বলে :
আন্তঃকোশীয় স্থানে অবস্থানকারী যে স্বচ্ছ, বর্ণহীন তরল কলাকোষ গুলিকে পুষ্টি প্রদান করে তাকে কলারস বা টিস্যু ফ্লুইড বলে।
কলারস উৎপাদন :
কলারস প্রধানত দু-ধরনের উৎস থেকে উৎপন্ন হয়। যথা-1. রক্তজালক এবং 2. কলার ক্রিয়া।
1. রক্তজালক থেকে কলারসের উৎপাদন : রক্তজালক থেকে কলারসের উৎপাদন নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ওপর নির্ভর করে, যথা- i. রক্তজালকের ভেদ্যতা, ii. রক্ত ও কলারসের চাপের পার্থক্য এবং
iii. রক্ত ও কলারসের কোলয়ডীয় অভিস্রবণ চাপের পার্থক্য।
রক্ত যখন জালকের ধমনিপ্রান্তে প্রবেশ করে তখন প্রায় 32 মিমি পারদ চাপে থাকে এবং ধমনিপ্রান্তে রক্তের কোলয়ডীয় অভিস্রবণ চাপ থাকে প্রায় 25 মিমি পারদ। তাই ধমনিপ্রান্তে ক্রিয়াশীল পরিস্রাবণ চাপে রক্তজালকের ভেদ্যপ্রাচীরের মধ্য দিয়ে রক্তের পরিস্রাবণ ঘটে। এর ফলে প্লাজমা থেকে কিছু জল ও প্রোটিন বেরিয়ে এসে কলারস সৃষ্টি করে যা কলাকোষগুলিকে স্নাত করে। অতএব কলারস প্লাজমার অনুরূপ তরল বিশেষ, তবে কলারসে প্লাজমার তুলনায় প্রোটিন অনেক কম থাকে।
জালকের শিরাপ্রান্তে রক্তচাপ খুব কমে যায় (10 মিমি পারদ), তবে এই স্থানে অন্য একটি বল ক্রিয়াশীল হয়। যেহেতু কলারসে প্লাজমার তুলনায় কম প্রোটিন ও অধিক জল থাকে তাই প্লাজমা ও কলারসের মধ্যে একটি অভিস্রবণ চাপ ক্রিয়াশীল হয় এবং এই চাপের ফলে কলারসের অধিকাংশ জল ও প্রোটিন পুনরায় জালকে প্রবেশ করে।
2. কলার ক্রিয়ায় কলারস উৎপাদন : কলাকোশ থেকে কলারসের উৎপাদন কোশগুলির বিপাকীয় কাজের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। কলাকোশগুলি বিপাক ক্রিয়ায় অন্তিম পদার্থ হিসেবে জল উৎপন্ন করে যা কলারসে সংযোজিত হয়। তাই কলাকোশের বিপাকীয় ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি পেলে কলারসের উৎপাদন বেড়ে যায়।
কলারসের কাজ :
1. কলারস কলাকোশগুলিকে অক্সিজেন ও পুষ্টিদ্রব্য সরবরাহ করে এবং কোশের বিপাক ক্রিয়ায় উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থগুলি অপসারণ করে, অতএব কলারস মাধ্যম হিসেবে কাজ করে যা কোশগুলির তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটায়।
2. কলারস দেহে জল, লবণ ও বিভিন্ন পুষ্টিদ্রব্যের সঞ্চয়ভান্ডর হিসেবে কাজ করে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কারণ, যদি কোনো কারণে রক্তের আয়তন কমে যায় কিংবা বেড়ে যায়, তবে ভৌত বলের ক্রিয়ায় কলারসের সাহায্যে রক্তের আয়তন সঠিক থাকে। যেমন—রক্তক্ষরণে জালকে রক্তের চাপ খুব কমে কোলয়ডীয় অভিস্রবণ চাপের নীচে নেমে যায়। এইজন্য জালকের উচ্চতর অভিস্রবণ চাপের ফলে কলারস থেকে জল জালকে প্রবেশ করে। এইভাবে রক্তের আয়তন সঠিক মাত্রায় বজায় থাকে। অপরপক্ষে, অতিরিক্ত স্যালাইন জল প্রবেশ করানোর ফলে যখন রক্তের আয়তন বেড়ে যায় তখন দুটি কারণে জল প্লাজমা থেকে কলারসে চলে আসে। এই দুটি কারণ হল –
i. স্যালাইন জালকের কোলয়ডীয় অভিস্রবণ চাপ হ্রাস করে এবং ii. জালকে রক্তচাপ বৃদ্ধি করে। এর ফলে রক্তের পরিস্রাবণের হার বেড়ে যায় এবং জালক থেকে জল কলারসে প্রবেশ করে।
1 thought on “কলারস কাকে বলে ? কলারসের উপাদান ও কাজ”