পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা

পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা : প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা আজকে তোমাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা প্রবন্ধ রচনাটি। পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্র সমাজের কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে জানাতে হলে অবশ্যই আমাদের দেওয়া পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা রচনাটি পড়তে হবে।

পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা

ভূমিকা :

বর্তমান সময়ে প্রগতি ও উন্নয়নের যুগল বন্ধন সমাজ পরিবেশ ও মানব জীবন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অথচ সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশ আজ বিভিন্ন কারণের ফলে দূষিত। এখন জীবকুলের সুস্থ স্বাভাবিক সরল ভাবে বাঁচার জন্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। এই ভারসাম্য রক্ষায় ছাত্র সমাজের এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।

আমরা যেখানে বসবাস করি , তার পারিপার্শ্বিক জগৎকে বলা হয় ‘ পরিবেশ ’ । গাছ যেমন সজল মাটি , অবাধ আলো এবং উৎকৃষ্ট সার পেলে সতেজভাবে বেড়ে ওঠে , আমাদের বেঁচে থাকা ও বেড়ে ওঠাটাও যেন ঠিক অনুরূপ হল একটি সুন্দর পরিবেশ। আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য চাই উৎকৃষ্ট মানের পরিবেশ । স্বাস্থ্যোজ্জ্বল পরমায়ুর জন্য সুস্থ পরিবেশের একান্ত প্রয়োজন।

পরিবেশদূষণ ও বর্জ পর্দার্থ :

দুঃখের ব্যাপার এই যে , আমাদের বেঁচে থাকার জন্য ভালো পরিবেশের দরকার। বেশিরভাগ সময়েই দেখা যায় , আমাদের ঘরের পাশেই নালানর্দমায় আবদ্ধ থাকে । আমরা যে – জল ব্যবহার করি , তার নিকাশিব্যবস্থাও ঠিক নেই। ফলে , জল জমে এবং এই জমে থাকা জলে মশার জন্ম হয়। কেবল মশা নয় , আরও নানারকম দূষিত কীটপতঙ্গের আশ্রয় হয় এই জমে থাকা জলে । কলেরা প্রভৃতি নানান রোগের সৃষ্টি হয় এই পরিবেশে । শুধু জল জমা নয় , আমরা ঘরের পাশেই জমিয়ে তুলি নানাধরনের আবর্জনা । ছাইপাঁশ , মাছের আঁশ , পচা খাবার , কাঁঠালের ভুতি , শালপাতা , খাবারের প্যাকেট ইত্যাদি জমিয়ে ঘরের পাশে তৈরি করি আবর্জনার পাহাড় । এই আবর্জনা হল দূষিত গন্ধের গন্ধমাদন , ভীষণ অস্বাস্থ্যকর এর ফলে নানান রোগের সৃষ্টি হয়।

সূর্যকিরণ ও বাতাস :

বিশেষকরে সূর্যের আলো এবং বাতাসের ওপর পরিবেশের উৎকর্ষ নির্ভর করে । সূর্যের আলোর অভাবে বাসগৃহগুলি অনেক সময় ভিজে ও স্যাঁতসেঁতে হয়ে থাকে । চারদিকের নোংরা আবহ পরিবেশকে করে তোলে অস্বাস্থ্যকর । এই ধরনের পরিবেশে যারা বাস করে , তারা সারাবছর ধরে নানা অসুখে ভোগে । কোনো ওষুধের ক্ষমতা নেই যে , তাদের নিরাময় করে তোলে । এই প্রেক্ষিতে বলা যায় , পরিবেশ উন্নয়নে আলো ও বাতাস খুবই জরুরি ।

সুস্থ পরিবেশের জন্য চাই নাগরিক – সচেতনতা । নাগরিকরা যদি নিজেরা নিজেদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হন , তা হলে তাঁরা পরিবেশকেও পরিচ্ছন্ন রাখায় সচেষ্ট হবেন । এ ব্যাপারে অবশ্য সরকার , পুরসভা , পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগ ও পরিকল্পনা থাকা জরুরী।

ছাত্রসমাজের ভূমিকা :

পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্রসমাজের ভূমিকাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ । ছাত্রদের জীবনটাই তো সুন্দর , পবিত্র , নির্মল । তারা নিয়মিতভাবে স্কুলের পরিবেশ সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখায় কার্যকারী ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে । তাই সামাজিক পরিবেশরক্ষায়ও তাদের এগিয়ে আসতে হবে । তারা যেমন হাতেকলমে পরিচ্ছন্নতার কাজ করবে , তেমনি নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য তাদের সামনে নিজেরা কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে , আলাপ – আলোচনা করবে , পদযাত্রা করে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে । ছাত্ররা প্রথমে তাদের গৃহ – পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর করবে । তারপর তারা প্রতিবেশীদের পরিবেশকে সুন্দর করার চেষ্টা করবে । এইভাবে তারা বৃহত্তর সমাজে নিজেদের আদর্শের কথা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে । ফলে সমাজের সবচেয়ে সচেতন অংশ যে – ছাত্রসমাজ , তাদের আচার – আচরণ দেখে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হবে এবং পরিবেশ সুন্দর ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।

ছাত্রসমাজ যা পারে :

পল্লির নিকাশিব্যবস্থা এবং বাসগৃহের পাশে যাতে জঞ্জাল না – জমে সে – বিষয়ে আবাসিকদের সচেতন করার দায়িত্বও নিতে পারে ছাত্রসমাজ । দরকার হলে তারা দল বেঁধে সাফাইয়ের কাজেও নেমে পড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে। তারা জনসাধারণকে দেখাতে পারে , বাড়ির আবর্জনা কোথায় ফেলতে হবে । পরিষ্কার – পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে আবাসিকদের সচেতন করতে ছাত্রছাত্রীরাই একমাত্র পারে।

মূল‍্যায়ন :

সুস্থ পরিবেশে মানুষের জীবনের যথার্থ বিকাশ সম্পূর্ণ হয়। আর সেই পরিবেশই যদি দূষিত হয়ে পড়ে তবে মানুষের তথা জীবকুলের স্বাভাবিক কাজগুলি নানা কারণে বন্ধ হয়ে যায় । এই দূষণের প্রভাব বর্তমান প্রজন্মেই সীমাবদ্ধ থাকে না । এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী । তাই পরিবেশকে দূষণমুক্ত করতে মানবজাতির তথা ছাত্রসমাজের সম্মিলিত ভাবে এগিয়ে আসা অত্যন্ত প্রয়োজন।

আরও পড়ুন : 

বিজ্ঞানের অগ্রগতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ

1 thought on “পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্র সমাজের ভূমিকা”

Leave a Comment