প্রবন্ধ কাকে বলে ? কত প্রকার ও কি কি ? প্রবন্ধের উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য ?

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

প্রবন্ধ কাকে বলে ? কত প্রকার ও কি কি ? প্রবন্ধের উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য ?

প্রবন্ধ কাকে বলে :

প্রবন্ধ শব্দের আভিধানিক অর্থ বলতে বোঝায় প্রকৃষ্ট রূপের বন্ধন । এই বন্ধন মূলত ভাব ও ভাষার বন্ধন ।

যে রচনার মধ্যে প্রাবন্ধিক সমাজের যে কোন সমস্যার কথা তুলে ধরেন এবং সেই সমস্যা থেকে উত্তরণের পথ নির্দেশ করেন সেই রচনাকে বলা হয় প্রবন্ধ ।

🔸 প্রবন্ধ কি :

Weekipedia

আমরা সবাই অস্পষ্টভাবে বুঝি প্রবন্ধ কাকে বলে বা কী রকম। গদ্যে লিখিত এমন রচনা যার মূল উদ্দেশ্য থাকে
পাঠকের জ্ঞানতৃষ্ণাকে পরিতৃপ্ত করা। ধরা যাক, সংবাদপত্রের যাবতীয় খবরাখবর দেশের, বিদেশের, মহাকাশের ইত্যাদি। সবই গদ্য ভাষায় রচিত এবং যার লক্ষ্য হল পাঠকের অজানা বিষয় পাঠককে জানানো।

গদ্যসাহিত্যের অন্তর্গত হলেও তথ্যবহুল রচনা হলেই তাকে প্রবন্ধসাহিত্যের উদাহরণরূপে গণ্য করা চলবে না, যদি-না লেখাটি সাহিত্য পদবাচ্য হয়। সাহিত্যের প্রধান লক্ষণ সৃজনশীলতা। লেখকের সৃজনীশক্তির কোনো পরিচয় যদি পরিস্ফুটিত না হয়, তো তেমন কোনো লেখাকে প্রবন্ধসাহিত্যের লক্ষণযুক্ত বলা চলবে না। এ-কারণে খবরের কাগজে প্রকাশিত সমস্ত লেখাই গদ্যে রচিত হলেও তাদেরকে প্রবন্ধসাহিত্যের নমুনা হিসেবে বিবেচনা করা সঙ্গত নয়। তাহলে তো জ্ঞানবিজ্ঞান সংক্রান্ত সকল রচনাই প্রবন্ধসাহিত্য বলে গণ্য হতে পারত। তা না হওয়ার কারণ ঐ সৃজনশীলতার অভাব।

🔸প্রবন্ধ কত প্রকার ও কি কি :

প্রবন্ধ মূলত দুই প্রকার যথা – ক. তন্ময় বা বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ খ.মন্ময় বা ব‍্যক্তিনিষ্ঠ প্রবন্ধ

ক. বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ কাকে বলে :

যে প্রবন্ধের মধ্যে বিষয়বস্তুর প্রাধান্য লক্ষ‍্যণীয় থাকে তাকে বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ বলে । এই বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধের মূলত ৭ টি উপভাগ রয়েছে যেগুলি হল-

১. বিবৃতি মূলক প্রবন্ধ : এই প্রবন্ধে কাহিনীর বিবরণ সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়।

২. ব্যাখ্যা মূলক প্রবন্ধ : ব্যাখ্যামূলক প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্য হলো মত তত্ব নিয়ে আলোচনা করা ।

৩. বর্ণনামূলক প্রবন্ধ : এই প্রবন্ধে বিষয়বস্তু বর্ণনা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে আলোচনা করা হয় ।

৪. বিতর্কমূলক প্রবন্ধ : এই প্রবন্ধের মাধ্যমে মতবাদের বিশ্লেষণ, পক্ষে এবং বিপক্ষে যুক্তি সমূহ আলোচনা হয় ।

৫. চিন্তামূলক প্রবন্ধ : বিশেষ দৃষ্টি কোন থেকে পরিচিত নির্ণয় করায় হলো এই প্রবন্ধের মূল উদ্দেশ্য ।

৬. তথ্যমূলক প্রবন্ধ : এই প্রবন্ধ মূলত বিবিধ তথ্যের মাধ্যমে রচিত হয়ে থাকে ।

৭. নীতিকথা মূলক প্রবন্ধ : প্রচলিত নীতিকথা এই প্রবন্ধের স্থান লাভ করেছে ।

খ. ব‍্যক্তিনিষ্ঠ প্রবন্ধ কাকে বলে :

লেখকের পাণ্ডিত্য , জ্ঞানের গভীরতা প্রভৃতি সফল ভাবে প্রকাশ পায় ।

🔸প্রবন্ধ পাঠদানের উদ্দেশ্য :

প্রবন্ধ পাঠদানের গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্যগুলি হল- ১. তথ্যবহুল কথা বলার দক্ষতা অর্জন করানো।

২. যুক্তিবাদী করে তোলা।

৩. গঠন ক্ষমতার উন্মেষ সাধনে প্রবন্ধ একান্ত ভাবে সাহায্য করে।

৪. শব্দ জ্ঞান ও বাক‍্য পদহিত পদবিন্যাস রীতি সম্বন্ধে ধারণা লাভ করানো সম্ভব।

৫. সাহিত্যে বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় শাখার সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটানো প্রবন্ধের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।

৬. প্রবন্ধ পাঠদানের মাধ্যমে নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা যায়।

7. ইতিহাসের বিভিন্ন শাখা ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার জন্য প্রবন্ধ পাঠদান করা জরুরি।

🔸 প্রবন্ধের বৈশিষ্ট্য :

ভাষার দক্ষতা বিকাশে প্রবন্ধের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য গুলি হল-

১. শিক্ষার্থীদের বলার দক্ষতাকে উন্নতিশীল করে ।

২.শিক্ষার্থীদের লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি পায় ।

৩.শিক্ষার্থীদের পড়ার প্রতি আগ্ৰহী করে তোলে ।

৪. শিক্ষার্থীদের যুক্তিবাদী করে তুলতে সাহায্য করে ।

Read More আরও পড়ুন : 

🔵 সন্ধি কাকে বলে এবং প্রকারভেদ

🔵 বিভক্তি কাকে বলে এবং প্রকারভেদ

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন : 

1. ব্যক্তিগত বা মন্ময় প্রবন্ধের বৈশিষ্ট্য কি ?

উ: 1. যুক্তি ও মননশীলতার fপরিবর্তে লেখক এর হৃদয়ে আবেগ এর প্রবণতা স্থান পাবে ।
2. এই প্রবন্ধের বিষয়বস্তু ভাব রসে জারিত হয়ে পাঠক কে আনন্দ দেবে ।

2. বস্তুনিষ্ঠ তন্ময় প্রবন্ধের বৈশিষ্ট্য কি ?

উ: 1.তত্ব ও তথ্যের একটি লক্ষণ যোগ্য প্রাধান্য থাকে ।
2. যুক্তিনিষ্ঠা ও ভাবনার সুনির্দিষ্ট শৃঙ্খলা থাকে ।

3. তন্ময় প্রবন্ধ কাকে বলে ?

উ: যে প্রবন্ধ বিষয়বস্তুর প্রাধান্য লক্ষ‍্যনীয় তাকে তন্ম‍য় বা বস্তুনিষ্ঠ প্রবন্ধ বলে ।

3 thoughts on “প্রবন্ধ কাকে বলে ? কত প্রকার ও কি কি ? প্রবন্ধের উদ্দেশ্য ও বৈশিষ্ট্য ?”

Leave a Comment