ব্লিজার্ড কি – What is Blizzard : আজকের পর্বটিতে আলোচনা করবো ব্লিজার্ড কি বা এবং ব্লিজার্ডের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। চলুন দেখে নেওয়া যাক ব্লিজার্ড বা প্রবল তুষারঝড় কি ।
ব্লিজার্ড কি
আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতানুসারে, ব্লিজার্ড হল একধরনের প্রবল অতিশীতল বায়ুপ্রবাহ, যার মধ্যে তুষারকণা থাকে এবং বরফাবৃত ভূভাগের ওপর এটি অধিক ক্রিয়াশীল হয়।
ব্লিজার্ডের বৈশিষ্ট্য :
ব্লিজার্ড বা তীব্র তুষারঝড়ের যে বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ করা যায় সেগুলি হল –
1. বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ : এই ঝড় চলাকালীন ঘণ্টায় 56 কিমি বেগে অতিশীতল বায়ু প্রবাহিত হয়।
2. দৃশ্যমানতা : এই সময় 400 মিটারের বেশি দূরত্বের কিছুই দেখা যায় না।
3. ঝড়ের স্থায়িত্ব : অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর স্থায়িত্ব কমপক্ষে প্রায় তিন ঘণ্টা হয়ে থাকে।
অবস্থান : অ্যান্টার্কটিকা , উত্তর আমেরিকার উত্তরাংশ , কানাডা , ইউরোপ ও এশিয়ার উত্তরভাগ , অস্ট্রেলিয়ার নিউসাউথ – ওয়েলশ , ভিক্টোরিয়া , তাসমানিয়ার পার্বত্য অঞ্চল , এ ছাড়া বরফাবৃত উচ্চ পার্বত্য অংশেও ব্লিজার্ড দেখা যায়।
ব্লিজার্ডের ফলে দুর্যোগের কারণ :
ব্লিজার্ডের উপস্থিতি অনেকসময় দুর্যোগ বা বিপর্যয় ডেকে আনে । একটানা দীর্ঘসময় ধরে অতি শীতল বায়ুপ্রবাহের ( তুষারকণা বহনকারী ) ফলে বিভিন্নভাবে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে । যেমন—
1. শারীরিক অসুস্থতা : তীব্র শীতল বায়ুপ্রবাহের ফলে মানুষের দৈহিক কষ্ট বৃদ্ধি পায় , উয়তা হ্রাস পাওয়ায় শারীরিক অসুস্থতা দেখা যায়।
2. পরিবহণ ব্যবস্থা : ভূপৃষ্ঠে বিস্তীর্ণ অংশে পুরু তুষারের স্তর জমা হয় , ফলে পরিবহণ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে । যেমন 1888 সালে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে ও কানাডায় 1-1.3 মিটার পুরু বরফের আস্তরণ পড়েছিল , নিউ ইয়র্কে প্রায় 400 জন মানুষ মারা গিয়েছিলেন । 1972 সালে ইরানে ব্লিজার্ড – এর প্রভাবে প্রায় 4000 মানুষ প্রাণ হারিয়ে ছিলেন।
3. বন্যা : এই ঝড়ের পর সঞ্চিত পুরু বরফের আস্তরণ গলে গেলে জলপ্রবাহ সৃষ্টি হয় । সেই জলপ্রবাহ থেকে বন্যা সৃষ্টির সম্ভাবনা দেখা যায়।
4. জনজীবন স্তব্ধ : দীর্ঘদিন ধরে পরিবহণ , শিক্ষা , স্বাস্থ্য , বিদ্যুৎ , চিকিৎসা , পানীয় জল সরবরাহ প্রভৃতি অতি প্রয়োজনীয় পরিসেবাগুলি স্তব্ধ হয়ে পড়ায় জনজীবনে বিপর্যয় নেমে আসে।
আরও পড়ুন :