স্বামী বিবেকানন্দ রচনা PDF | স্বামী বিবেকানন্দ জীবনী | Swami Vivekananda Biography in Bengali

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

স্বামী বিবেকানন্দ রচনা PDF | স্বামী বিবেকানন্দ জীবনী

স্বামী বিবেকানন্দ রচনা PDF : সুপ্রিয় পাঠকগন আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম, এই পর্বটিতে স্বামী বিবেকানন্দ রচনা টি সম্পর্কে নিঁখুত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। যা তোমাদের জন‍্য খুবই সাহায্যকারী হবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক স্বামী বিবেকানন্দ রচনা টি।

রচনা -১ 

স্বামী বিবেকানন্দ রচনা :

ভূমিকা : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন-

“If you want to know India read Vivekanand”.

স্বামী বিবেকানন্দ ভারতবর্ষের এক অন্যতম বীর মহাপুরুষ। তাঁর চিন্তাধারা ও মহৎ কার্য প্রত্যেক ভারতবাসীর গর্বের বিষয়। একটি জাতির যখন খারাপ অবস্থা আসে তখন সেই অবস্থা থেকে জাতিকে জাগরিত করার জন্য মহাপুরুষের আবির্ভাব ঘটে। পৃথিবীর সব দেশেই এমন ঘটনা দেখা গিয়েছে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে বিবেকানন্দ আবির্ভূত হয়ে আপামর জনসাধারণের দরিদ্র, অশিক্ষা, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ব্যক্তিত্বকে জাগিয়ে তুলেছিলেন।

বাল্যকাল এবং শিক্ষাজীবন : ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ১২ জানুয়ারী বিবেকানন্দ উত্তর কলকাতার সিমলা স্ট্রীটের বিখ্যাত দত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম বিশ্বনাথ দত্ত যিনি একজন পেশায় উকিল ছিলেন। এবং মাতা ছিলেন ধর্মপ্রানা ভুবনেশ্বরী দেবী। বিবেকানন্দের আসল নাম নরেন্দ্রনাথ দত্ত। পরবর্তী কালে রামকৃষ্ণ দেবের শিষ্যত্ব গ্রহন করার পর তাঁর সন্ন্যাস জীবনের নাম হয় স্বামী বিবেকানন্দ। তিনি উত্তর কলকাতার মেট্রোপলিটন স্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ পাশ করেন৷ প্রত্যেকে যেন জ্ঞানের আলো পায় এই সাধনা তিনি করেছেন। জগজ্জননী কাছে তিনি মনুষ্যত্ব প্রার্থনা করে বলেছেন-

“হে জগদম্বে আমায় মনুষ্যত্ব দাও, আমার দুর্বলতা কাপুরুষতা দূর করো, অমিয় মানুষ করো”।

ভারত প্রীতি : রামকৃষ্ণ দেবের শিষ্যত্ব ও সন্ন্যাস গ্রহণ করার পর তিনি সারা ভারত ভ্রমণ করতে বেরিয়ে পড়েন। বিভিন্ন স্থানে তিনি ধর্ম সম্পর্কে তাঁর ব্যাক্তিগত অভিমত প্রকাশ করেন। হিন্দু ধর্মের নানান গোড়ামি ও কুসংস্কার অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। তিনি উপলদ্ধি করেছিলেন। মানুষের মধ্যেই ভগবান বাস করেন” তাই তিনি বলেন―

বিবেকানন্দ এই ভারতবর্ষকে পুনরুজ্জীবিত করতে চেয়েছিলেন মানবধর্মের নানান বাণী দিয়ে। মূর্খ, অজ্ঞ, দরিদ্র মুচি, মেথর সবাইকে তিনি এক রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন।

শিকাগো বক্তৃতা ও বিদেশ ভ্রমন : ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দ ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে আমেরিকার শিকাগো শহরে বিশ্বমহাধর্ম সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। সেই ধর্ম সভায় তিনি জগৎ বাসির কাছে হিন্দু ধর্মের কথা বিস্তারিত আলোচনা করেন। দেশের মানুষ প্রথম উপলব্ধি করে ভারত পরাধীন হলেও বিশ্বে তাদের এক বিশেষ স্থান রয়েছে। তারা একটি সুপ্রাচীন ভূখণ্ডের অধিকারী শিকাগো বক্তৃতার পর স্বামী বিবেকানন্দের অনুরাগী এবং অনুগামীদের সংখ্যা ক্রমশই বাড়তে থাকে। এরপর নিউইয়র্কে তিনি বেদান্ত সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। বক্তৃতা দেন হাভার্ড বিশ্ববিদ‍্যালয়ে।

মিশন ও আদর্শ : রামকৃষ্ণ দেবের তিরোধানের পর বিবেকানন্দ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে রামকৃষ্ণ মিশন ও ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে গঙ্গার তীরে বেলুড় মঠ প্রতিষ্ঠা করেন। এই মঠের মাধ্যমে তিনি সেবা ধর্মের দিকটি প্রচার ও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজ সারা ভারতে এমনকি ভারতের বাইরেও রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এবং সর্বত্রই রামকৃষ্ণ এবং স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ প্রসারিত হয়েছে।

সাহিত্য সাধনা : স্বামী বিবেকানন্দের মধ্যে সমান্তরাল ভাবে বর্তমান ছিল সাহিত্য রচনার প্রতিভা। তিনি বহু গ্রন্থ রচনা করে গিয়েছেন। যেসবে তাঁর সাহিত্য বোধের পরিচয় স্পষ্ট। বর্তমান ভারত, ভাববার কথা, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য ইত্যাদি হল তার উল্লেখযোগ্য বিখ্যাত গ্রন্থ। বিবেকানন্দ অনেক উৎকৃষ্ট মানের কবিতাও রচনা করে গিয়েছেন।

উপসংহার : বিবেকানন্দ উচ্চকোটি প্রজ্ঞানি দার্শনিক তিনি আছেন প্রেমের পরাকাষ্ঠায় পূজার অঞ্জলিতে। তাঁর বাণী ভারত তথা বিশ্বের অজস্র মানুষকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে এখনও।

রচনা -২ 

স্বামী বিবেকানন্দ রচনা :

ভূমিকা : ভারতীয় ধর্ম ও আদর্শকে বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরেছিলেন বিশ্বজয়ী স্বামী বিবেকানন্দ। তাঁর নেতৃত্বে সন্ন্যাসীরা মানুষের সেবায় জীবন উৎসর্গ করার ব্রত গ্রহণ করেন।

জন্ম পরিচয় : ১৮৬৩ খ্রীষ্টাব্দের ১২ই জানুয়ারী কলিকাতার সিমুলিয়া অঞ্চলের বিখ্যাত দত্ত পরিবারে স্বামী বিবেকানন্দ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাল্যনাম বিশ্বেশ্বর, আদরের নাম বিলে, ছাত্রজীবনের নাম নরেন্দ্রনাথ। নরেন্দ্রনাথের পিতার নাম বিশ্বনাথ দত্ত, মাতা ভুবনেশ্বরী দেবী। বালক নরেন্দ্রনাথ ছিলেন দুরন্ত, দুঃসাহসী ও নির্ভীক। অন্যদিকে লেখাপড়ায়ও ছিল তাঁর গভীর অনুরাগ রামায়ণ-মহাভারতের কাহিনী, ধর্মীয় উপখ্যানাদি তাঁকে গভীরভাবে আকর্ষণ করত। তবু নরেন্দ্রনাথ স্বভাব কোমল গ্রন্থকীট বালকমাত্র ছিলেন না, পৌরুষব্যনঞ্জক খেলাধুলায়ও তিনি সমান অনুরক্ত ছিলেন।

বাল্যজীবন ও শিক্ষা : মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে নরেন্দ্রনাথ মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে জেনারেল এসেমব্লিস (বর্তমান স্কটিশ চার্চ) কলেজে প্রবেশ করেন। কলেজের ছাত্র নরেন্দ্রনাথ কিন্তু পুঁথিগত জ্ঞান লাভ করেই তৃপ্ত থাকতে পারলেন না, এই সময় থেকেই ঈশ্বর সম্পর্কিত নানা জিজ্ঞাসা ও সংশয়ে তাঁর হৃদয় আলোড়িত হতে থাকে। নরেন্দ্রনাথ ১৮৮৪ খ্রীষ্টাব্দে বি. এ. পরীক্ষায় সম্মানে উত্তীর্ণ হলেন। পিতা বিশ্বনাথ দত্তের মৃত্যুতে তাঁর আইন পড়বার ইচ্ছা পূর্ণ হতে পারল না, অনভিজ্ঞ যুবককে পরিবার ও সংসারের সমস্ত দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়।

কর্মজীবন ও আদর্শ : স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৯০ খ্রীষ্টাব্দে আমেরিকার শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে হিন্দুধর্মের প্রতিনিধিরূপে যোগদান করেন। সভায় উপস্থিত নর-নারীকে ভ্রাতা ও ভগ্নীরূপে সম্বোধন করে তিনি যে ঐতিহাসিক বক্তৃতা দেন তাতে হিন্দুধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব স্বতঃস্বীকৃত হয়। অতি তরুণ একজন ভারতীয় হিন্দু সন্ন্যাসীর বাগ্মিতাশক্তি, তুলনামূলক বিশ্বধর্মে অতুল পাণ্ডিত্য, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা ইত্যাদির পরিচয় পেয়ে সেদিন আমেরিকাবাসী বিস্মিত না হয়ে পারেনি।

মিশন ও আদর্শ : বিজয়ীর সম্মান নিয়ে দেশে ফিরে এসে ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ‘রামকৃষ্ণ মিশন’ এবং ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করলেন ‘বেলুড় মঠ’। মানব সেবা, বেদান্ত দর্শন এবং রামকৃষ্ণের শিক্ষাপ্রচারই ছিল মিশন প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য। দয়া নয়, দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষদের সেবার মধ্যদিয়ে তিনি ঈশ্বর প্রাপ্তির পথ দেখিয়েছিলেন। তার মতে ঈশ্বর আছেন আমাদের সামনে বহুরূপে দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষদের মধ্যে। এদের সেবা করলেই ঈশ্বরকেই লাভ করা যাবে।

উপসংহার : অত্যাধিক পরিশ্রম আর নিরলস কর্মসাধনায় এই কর্মী সন্ন্যাসীর শরীর ভেঙ্গে পড়ে। অবশেষে ১৯০২ সালের ৪ জুলাই মাত্র ৩৯ বৎসর বয়সে এই বীর সন্ন্যাসী বেলুড় মঠে চিরনিদ্রায় অভিভূত হন। স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম দিবস সমগ্ৰ ভারত জুড়ে ‘জাতীয় যুব দিবস’ হিসাবে পালিত হয়।

রচনা -৩ 

স্বামী বিবেকানন্দ রচনা :

ভূমিকা : বাঙালির কাছে স্বামী বিবেকানন্দ একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। ভারতের মহান পুরুষদের মধ্যে তিনি অন্যতম। যখন ভারত ইংরেজদের দাসত্বে ছিল সেই সময় আমাদের ভারত মা একজন মানুষকে জন্ম দিয়েছিলেন, যিনি শুধু আমাদের ভারতের নয় প্রত্যেক মানবতার গৌরব, তিনিই হলেন বীর সন্ন্যাসী স্বামী বিবেকানন্দ।

জন্ম ও পরিচয় : স্বামী বিবেকানন্দ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৮৬৩ সালে ১২ ই জানুয়ারি। তার আসল নাম ছিল নরেন্দ্র নাথ দত্ত। ছোটবেলায় সবাই তাকে বিলে বলে জানতো। শৈশব থেকে তিনি খুব চঞ্চল এবং মেধাবী প্রকৃতির বালক ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তিনি অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। অনেকে তাঁকে নরেন বলেও ডাকতেন। তিনি উত্তর কলকাতায় একটি কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবার নাম ছিল বিশ্বনাথ দত্ত এবং মায়ের নাম ছিল ভুবনেশ্বরী দেবী। বিশ্বনাথ দত্ত পেশায় একজন উকিল ছিলেন।

শিক্ষাজীবন : নরেন তার মায়ের কাছ থেকে প্রথম ইংরেজি এবং বর্ণমালা শিখেছিলেন। কলকাতার মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশনে তার স্কুল জীবনের শিক্ষা সম্পূর্ণ হয়। পড়াশুনোর প্রতি তার চিরকাল গভীর আগ্রহ ছিল এবং বলাই বাহুল্য তিনি একজন অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ ১৮৭৯ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ম্যাট্রিক পাশ করে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজে এবং তার পর স্কটিশ চার্চ কলেজে ভর্তি হন দর্শন নিয়ে পড়াশুনো করার জন্য। প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ার সময় তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। গীতা, বেদ, উপনিষদে তাঁর প্রচুর আগ্রহ ছিল। ঈশ্বর সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করার জন্য তিনি দক্ষিণেশ্বরের রামকৃষ্ণ পরমহংস দেবের কাছে দীক্ষা নেন।

স্বামী বিবেকানন্দ বি. এ. পাশ করার পর ভারতীয় সংস্কৃতি বিষয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন শুরু করেন। প্রচুর গবেষণা করে তিনি নিজের মনের সত্য জানার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়েন।

অবদান : ‘মানুষের মধ্যে ঈশ্বর রয়েছে’ এই বিশ্বাস তিনি নিজের মনে গেঁথে নেন। সারা ভারত ভ্রমণ করে, স্বদেশ প্রেমে মুগ্ধ হয়ে নিজের জাতি নিজের দেশকে সকলের কাছে তিনি তুলে ধরেছেন। ভারতের বিভিন্ন জাতি, বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন ভাষা এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে মিশে তিনি নিজের এক নতুন রূপ গঠন করেন এবং নিজেকে তৈরি করেন মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে। তিনি নানা শহরে শহরে ঘুরে বিভিন্ন মানুষের সাথে দেশ প্রেম, সংস্কৃতি এবং ধর্ম নিয়ে আলোচনা করতে থাকেন।

১৮৯৭ সালে ১ লা মে কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন রামকৃষ্ণ মঠ। তার মূল আদর্শই ছিল সাধারণ মানুষের সেবা করা। তারপর স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড়ে তৈরি করেন বেলুড় মঠ, যা আজও বিখ্যাত। সকল ভারতবাসীর দুঃখ দুর্দশা উপলব্ধি করেন তিনি। সাধারণ ভারতবাসীর অশিক্ষা, দারিদ্রতা তাঁর কাছে বেদনাদায়ক হয়ে ওঠে।
তিনি আমেরিকার শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে যোগদান করেন এবং হিন্দু ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেন।

উপসংহার : ১৯০২ সালে ৪ ঠা জুলাই স্বামী বিবেকানন্দ দেহত্যাগ করেন। ইতিহাসের পাতায় বাঙালিদের রত্ন তিনি। তাঁর বাণী আজও মানুষের অন্তরে প্রেরণা জাগায়। আমাদের যুব সমাজ ওনার বাণী স্মরণ করে যাবে চিরকাল।

PDF DOWNLOAD ZONE 

File Name : স্বামী বিবেকানন্দ রচনা
Language : বাংলা
Size : 66 KB
Clik Here To Download

আরও দেখুন :

প্রেমেন্দ্র মিত্র জীবনী

বেগম রোকেয়া জীবনী

Leave a Comment