ভগিনী নিবেদিতা জীবনী ? Sister Nivedita Biography | ভগিনী নিবেদিতা প্রবন্ধ রচনা

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

ভগিনী নিবেদিতা জীবনী ? Sister Nivedita Biography | ভগিনী নিবেদিতা প্রবন্ধ রচনা | Sister Nive

ভগিনী নিবেদিতা জীবনী – Sister Nivedita Biography : প্রিয় পাঠকগন আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম, এই পর্বটিতে ভগিনী নিবেদিতার জীবনী সম্পর্কে নিঁখুত ভাবে আলোচনা করেছি, যা আপনাদের জন‍্য খুবই হেল্পফুল হবে। এখানে আমরা ভগিনী নিবেদিতা-র জীবনী সম্পর্কে দুটি উত্তর প্রদান করলাম তোমাদের সুবিধা মতো যেকোনো একটি উত্তর পড়লেই হবে।

ভগিনী নিবেদিতা জীবনী / ভগিনী নিবেদিতা প্রবন্ধ রচনা :

ভূমিকা : মহামানবের সাগরতীর এই ভারতবর্ষ যুগে যুগে অজস্র মহাপুরুষের আগমনে সমৃদ্ধ হয়েছে। “দেবে আর নিবে মিলাবে মিলিবে”- এই আদর্শকে পাথেয় করে এখানে বহু বিদেশি পণ্ডিত ও মনীষীদের আবির্ভাব ঘটেছে। এই দেশকে তারা আপন করে নিয়েছেন। অ্যানি বেসান্ত থেকে মাদার টেরেসার আগমনের সেই ইতিহাস খুব সংক্ষিপ্ত নয়, আর ভগিনী নিবেদিতা সেই তালিকায় এক উজ্জ্বল উপস্থিতি।

জন্ম ও বেড়ে ওঠা : ১৮৬৭-র ২৮ অক্টোবর, উত্তর আয়র্ল্যান্ডের টাইরনে নিবেদিতার জন্ম। পিতা স্যামুয়েল রিচমন্ড নোবেল ছিলেন ধর্মযাজক। মায়ের নাম মেরি ইসাবেল নোবেল। পূর্ব নাম ছিল মিস মার্গারেট এলিজাবেথ নোবেল । মাত্র ১৩ বছর বয়সে মার্গারেটের মনে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন জাগে । স্কুল- জীবনেই মিলটন, শেকসপিয়র, আয়ার্ল্যান্ডের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। কুড়ি বছর বয়সে নিজেকে দরিদ্র মানুষের সেবার উপযোগী করে তুলবেন বলে শিক্ষিকার চাকরি ছেড়ে এক অনাথাশ্রমে যোগ দেন। রেক্সহ্যামের খনি অঞ্চলে শিক্ষকতা করতে এসে একুশ বছর বয়সে চার্চের সংকীর্ণতার বিরুদ্ধে তিনি বিদ্রোহ করেন। এই সময়ে মার্গারেটকে সমাজসমস্যা এবং রাজনীতি নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে দেখা যায়।

এমার্সন, রাসকিন-তাঁর কণ্ঠস্থ ছিল। তারপরেই পেস্তালৎসি এবং ফ্রয়েবেলের আদর্শে তিনি প্রগতিশীল শিক্ষাভাবনায় আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তাকে ঘিরেই লন্ডনে তরুণ সাহিত্যিকদের একটা গোষ্ঠী তৈরি হয়। ভগিনী নিবেদিতা এই সময়ই বুয়র যুদ্ধ নিয়ে প্রবন্ধ লিখছেন উইম্বলডন নিউজ-এ। তাঁর রাজনীতির ভাবনা প্রকাশ পাচ্ছে ডেইলি নিউজ-এ । আবার বিজ্ঞান বিষয়ক রচনা লিখছেন রিসার্চ নামক পত্রিকায়। এই সময়ই তিনি হয়ে উঠেছেন ফ্রি আয়ার্ল্যান্ডের সক্রিয় কর্মী। সময় কাটিয়েছেন বিখ্যাত সব রাজনৈতিক চিন্তাবিদের সঙ্গে। ম্যাকলিনের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন সিসেম ক্লাব; যেখানে নিয়মিত এসেছেন বার্নার্ড শ, হাক্সলির মতো বিদগ্ধ মানুষেরা। তাঁর বিস্ময়কর কর্ম উন্মাদনার মধ্যে কোনোরকম বিস্ময় থাকে না যখন এক ভারতীয় সন্ন্যাসীর আহবান পৌঁছে যায় মার্গারেটকে লেখা চিঠিতে―“তুমি ঠিক সেই নারী যাকে এদেশের আজ প্রয়োজন।”

বিবেকানন্দ ও নিবেদিতা : ১৮৯৫ সালের নভেম্বরের এক বিকেলে লন্ডন ওয়েস্ট এন্ড-এর এক অভিজাত বাড়িতে মার্গারেটের সঙ্গে বিবেকানন্দের প্রথম সাক্ষাৎ হয়েছিল। সেখানে বিবেকানন্দের বেদান্তের ব্যাখ্যা আলোড়ন তুলেছিল মার্গারেটের মনে। এরপরে বিবেকানন্দের অনুগামী হয়ে লন্ডনের প্রতিটি বক্তৃতায় তিনি হাজির হন এবং প্রশ্নের মধ্য দিয়ে নিজের যাবতীয় সংশয়কে তিনি দূর করে নেন। ১৮৯৮-এর ২৮ জানুয়ারি মার্গারেট ভারতে আসেন এবং ২৫ মার্চ বিবেকানন্দ তাঁকে ব্রহ্মচর্য ব্রতে দীক্ষা দেন। মার্গারেট রূপান্তরিত হন ভগিনী নিবেদিতায়। “ভারতের কল্যাণেই জগতের কল্যাণ”― স্বামীজীর এই আদর্শই হয়ে ওঠে তাঁর জীবনাদর্শ।

নিবেদিতা ও ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম : ব্রিটিশ বিরোধিতায় ভগিনী নিবেদিতা ছিলেন দ্বিধাহীন। “ভারতবর্ষ স্বাধ্যায়-এ মগ্ন ছিল। একদল দস্যু এসে তার জমি জারাত ধ্বংস করল … তাদের তাড়িয়ে দিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য করতে হবে স্বস্থানে।” এই ইংরেজ বিরোধিতাই নিবেদিতাকে নিয়ে এসেছিল অরবিন্দের সান্নিধ্যে, তাকে অনুপ্রাণিত করেছিল গুপ্ত বিপ্লবীদের সাহায্য করার জন্য কিংবা, কার্জনের বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদ করতে। বিপিনচন্দ্র পাল তার সম্পর্কে বলেছেন― She was a great hater of British Raj and great lover of Indians. এমনকি বিপ্লবীদের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এতটাই ছিল যে বরোদার মহারাজাকে তিনি অনুশীলন সমিতির মতো বিপ্লবী সংগঠনকে অর্থ সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করেন।

লোকমাতা ভগনী নিবেদিতা : রবীন্দ্রনাথ নিবেদিতাকে বলেছিলেন ‘লোকমাতা’। ১৮৯৯ সালে কলকাতায় প্লেগ মহামারির চেহারা নিলে স্বামী সদানন্দকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সেবাকার্যে নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে এক ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। বাগবাজারে তার বাড়ি ১৫ নং বোসপাড়া লেন হয়ে ওঠে মানবতার ভিত্তিভূমি। সন্তোষিণী, পুরাঙ্গনা থেকে বিখ্যাত গোপালের মা সকলেই তাঁর কাছে অনায়াস আশ্রয় পেয়েছে।

নারীশিক্ষা ও নিবেদিতা : ভগিনী নিবেদিতা নিশ্চিতভাবে বুঝেছিলেন যে মেয়েদের শিক্ষা না হলে সমাজ এগোবে না। তাই অজস্র প্রতিকূলতার মধ্যেও নিজের বাসস্থানে তিনি মেয়েদের জন্য স্কুল তৈরি করেছিলেন। একদিকে প্রাচীন ভারতীয় আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা, অন্যদিকে আধুনিক চিন্তাভাবনাকে গ্রহণ এই দুই-ও মিলে তাঁর শিক্ষা আদর্শ গড়ে উঠেছিল। রক্ষণশীল পরিবারের মেয়েদেরকে যেভাবে তিনি শিক্ষিত করে তুলতে উদ্যোগ নেন তা ছিল এক সামাজিক লড়াই। গিরিবালা ঘোষ থেকে প্রফুল্ল দেবী―সেই লড়াইয়ের সাফল্যের এক-একটা নাম। মিশনারিদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ভারতীয় মেয়েদের হয়ে তিনি রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।

উপসংহার : ১৯১১ সালের ১৫ অক্টোবর নিবেদিতার মৃত্যু হয়। কিন্তু তাঁর কাজ এবং আদর্শের মধ্য দিয়ে তিনি এক মৃত্যুহীন প্রাণ। আজকের প্রজপোর কাছেও নিবেদিতা প্রেরণার উৎস। ধর্ম নিয়ে বিক্ষুব্ধ এবং সংঘাতময় ভারতে নিবেদিতাই হতে পারেন অন্ধকারে আলোর দিলা।

দ্বিতীয় উত্তর : 

ভগিনী নিবেদিতা :

পুণ্যভূমি ভারত। দেবভূমি ভারত। পবিত্র এই মাটির আকর্ষণে কালে কালে বহু বিদেশি-বিদেশিনী এদেশে এসেছেন। তাদের কর্তব্যকর্ম শেষ করে আবার ফিরে গেছেন দেশে। কিন্তু কেউ কেউ “নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই” মন্ত্রকে – শিরোধার্য করে এদেশের মানুষের সেবায় নিজেকে নিঃশেষে দান করেছেন। ভগিনী নিবেদিতা তাঁদেরই অগ্রগণ্যা। বিবেকানন্দের মন্ত্রশিষ্যা, সেবা ও করুণার প্রতিমূর্তি। নিবেদিতা দুরন্ত আইরিশ রক্তে গম্ভীর গাঙ্গেয় কলগান ।

উত্তর আয়ারল্যান্ডের টাইরন প্রদেশের ডানগ্যানন শহরে ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দে ২৮ অক্টোবর ভগিনী নিবেদিতার জন্ম। পিতা স্যামুয়েল রিচমন্ড নোল, মাতা মেরী ইসাবেল হ্যামিলটন – তাঁদের প্রথম সন্তান মার্গারেট এলিজাবেথ নোব্‌ল। বাবা স্যামুয়েল ছিলেন ধর্মযাজক। ধর্ম, দেশপ্রেম এবং মানবতাবাদের ত্রিবেণী সংগমে মার্গারেটের বড়ো হয়ে ওঠা।

নীল চোখের রোগা মার্গারেটকে এক বছর বয়সে পাঠিয়ে দেওয়া হল বয়োজ্যেষ্ঠা ঠাকুরমার বাগানঘেরা বাড়িতে। বাইবেলের পাতা উলটে উলটে ঠাকুরমা করালেন বর্ণপরিচয়। ছোট্ট মার্গারেট আত্মীয় আত্মভোলা ডাক্তার নোবলের হাত ধরে গাছগাছালি, পাখপাখালি চেনে। এর মধ্যে বাবা স্যামুয়েল যক্ষ্মায় মারা গেলেন। নোব্‌লকে হ্যালিফ্যাক্স আবাসিক বিদ্যালয়-এ পাঠানো হল। বড়ো কঠোর শৃঙ্খলা সেখানে। সাহিত্য, সংগীত, কলাবিদ্যা ও উদ্ভিদবিদ্যায় তিনি পারদর্শী হয়ে ওঠেন। অসামান্য প্রতিভার অধিকারিণী মার্গারেট কৃতিত্বের সঙ্গে ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে কলেজ পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হন।

মার্গারেট মায়ের, পরিবারের অর্থাভাব দূর করার জন্য উচ্চশিক্ষায় না গিয়ে চাকরির কথা ভাবলেন। কেসউইকের বোর্ডিং স্কুলে শিক্ষিকার পদে যোগ দেন। দু-বছর পরে যোগ দেন রাগবির অনাথ আশ্রমে। এরপর চলে আসেন রেক্সহ্যাম সেকেন্ডারি স্কুলে। এরপর আরও কয়েকটি কর্মস্থল তিনি পরিবর্তন করেন। নিজের স্কুল ‘দ্য কিংসলে স্কুল’ তৈরি করেন। এ সময়ে তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন। The Christ Child’, ‘The Mother of the Christ Child’, ‘Hag hideen’, ‘A visit to A Coal Mine’ নামে বিভিন্ন বিষয়ে নিবন্ধ রচনা করেন। এর মধ্যে মার্গারেটের পরিচয় ঘটে এক তরুণ ইঞ্জিনিয়ারের। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে যুবকটির মৃত্যু হয়। মার্গারেটের অন্তলোকে বিরাট পরিবর্তন আসে।

১৮৯৫-এর ১০ নভেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় ইসাবেল মার্গেসনের বাড়িতে স্বামী বিবেকানন্দের সঙ্গে যন্ত্রণাদগ্ধ মার্গারেটের প্রথম দেখা। তিনি স্বামীজির কথা শুনলেন, নিঃশব্দে বিপ্লব ঘটে গেল তাঁর অন্তরে।  স্বামীজির আহ্বানে ১৮৯৮-এ ‘মোমবাসা’ জাহাজে করে ভারতের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। ২৮ জানুয়ারিতে খিদিরপুরে প্রিয় শিষ্যাকে অভ্যর্থনা জানালেন স্বামী বিবেকানন্দ। মার্গারেট হতাশার মধ্যেও উপলব্ধি করলেন পূর্ণতা। ২৫ মার্চ স্বামীজি তাঁকে বেলুড়ে ব্রহ্মচর্যব্রতে দীক্ষা দিলেন, নাম দিলেন নিবেদিতা। ভারতসেবায় নিবেদিত হল একটি জীবন। আর স্বামী বিবেকানন্দ খুঁজে পেলেন একজন প্রকৃত সিংহী। নিবেদিতা ১৮১৮-এর ১৭ মার্চ সারদাদেবীর দর্শনলাভ করেন। তিনি হয়ে যান আদরের ‘খুকি। আর সারদাদেবী তাঁর কাছে ছিলেন ‘মাধুর্যের প্রতিমূর্তি”।

ভারতের শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, স্বদেশচেতনা ও অধ্যাত্মসাধনায় তাঁর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। তিনি ভারতের বিপ্লবীদের প্রেরণা দিয়েছেন। ছাত্রীদের কাছে ‘বা আমার জননী আমার’ সংগীত পরিবেশন করে তিনি তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের বীজ রোপণ করেছেন। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়কে তিনি সাংবাদিকতার শিক্ষা দেন। নন্দলাল বসু, রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, রমেশ দত্ত প্রমুখের কাজে তিনি প্রেরণা জুগিয়েছেন। বিজ্ঞানসাধক জগদীশচন্দ্র নিবেদিতার প্রেরণায় বিজ্ঞানসাধনায় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। ‘বসুবিজ্ঞান মন্দির’ প্রতিষ্ঠায় নিবেদিতার ভূমিকা স্মরণীয়।

নিবেদিতা ভারতের নারীশিক্ষার ইতিহাসে এক অনন্য নাম। ১৮৯৯-তে প্লেগ মহামারিতে পরিণত হলে তিনি নিজের জীবন বিপন্ন করে আক্রান্তদের সেবায় ঝাপিয়ে পড়েন। দেশবাসীর সেবার সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজদের মুখোশ খুলে দিতে তিনি লেখনী ধরেন। তিনি এদেশকে ভালোবেসেছেন, এদেশের মানুষকে ভালোবেসেছেন। নিজের দেশ ভুলেছেন, আত্মীয় পরিজনকে ছেড়েছেন। আর হয়তো মনে মনে ভেবেছেন―

“বিশ্বজগৎ আমারে মাগিলে কোথায় আমার ঘর,
আমার বিধাতা আমাতে জাগিলে কে মোর আত্মপর।”

ভগিনী নিবেদিতা বুদ্ধগয়ায় গিয়ে কেঁদেছেন আর ভেবেছেন “দেশের গভীর নিদ্রা এখনও ভালো নাই।” ১৯০৬ -এ বরিশালে ভয়ংকর বন্যায় বিধ্বস্ত মানুষ নিবেদিতার স্নেহস্পর্শ পেয়েছিল। মুমূর্ষুকে দেখে তিনি আর্তনাদ করেছেন – ‘Hunger So Keen, Oh God! So Keen!’ পল্লীর স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যরক্ষায় তিনি নিজের হাতে ঝাড়ু তুলে নিতেন। সেবাময়ী নিবেদিতা মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। মূর্খ, দরিদ্র, অর্ধনগ্ন ভারতবাসীর সেবার ভার কাঁধে তুলে নেন। ১৮৯৮-এর ১৩ নভেম্বর তিনি বাগবাজারের বোসপাড়ায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। নিবেদিতা প্রথাগত শিক্ষার সঙ্গে সনাতন শিক্ষাকে যোগ করেছিলেন।

ভগিনী নিবেদিতা প্রথম জীবনে অনেক নিবন্ধ রচনা করেছেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি রচনা করেন ‘Web of Indian Life’ নামক গ্রন্থ। ১৯১০-এর ১ ফেব্রুয়ারি স্বামীজির জন্মতিথিতে প্রকাশিত হয় তাঁর গভীর অনুভূতির ফসল ‘The Master As I Saw Him’ গ্রন্থটি। কঠোর পরিশ্রমে নিবেদিতার স্বাস্থ্যভগ্ন হল। ১৯১১ তে দার্জিলিং-এ গিয়ে তিনি অসুস্থ হলেন। তিনি উচ্চারণ করলেন

“অসতো মা সদ্‌গময়, তমসো মা জ্যোতির্গময়
মৃত্যোমামৃতং গময়।’

১৩ অক্টোবর সকাল ৭টায় দিব্যজ্যোতিতে ভরে গেল নিবেদিতার মুখ। ঈশ্বরের কর্ম সমাপন করে দিব্যলোকে ফিরে গেলেন ঈশ্বরতনয়া নিবেদিতা। উচ্চ হরিধ্বনির মাঝে তাঁর নশ্বর দেহ ভস্মীভূত হল। শ্মশানভূমিতে নির্মিত হল ফলক―

“এখানে ভগিনী নিবেদিতা শান্তিতে বিশ্রাম করিতেছেন

যিনি ভারতকে তাঁহার সর্বস্ব অর্পণ করিয়াছিলেন।”

নিবেদিতা নিবেদিত এক মহৎপ্রাণা, অগ্নিশিখার মতো তিনি প্রভাময়। বিবেকানন্দের ‘মানসকন্যা’, সারদার ‘খুকি’, রবীন্দ্রনাথের ‘লোকমাতা’ ভারতকে বুঝিয়েছিলেন, ভারতের মানুষকে ভেবেছিলেন আত্মার আত্মীয়। তাই মৃত্যুশয্যায়ও নিবেদিতা শোনালেন আশ্বাসবাণী The boat is sinking, but, I shall see the sunrise’. নিবেদিতা তাপসী – ত্যাগ ও সেবার চিন্ময়ী প্রতিমা।

“হে দেবী, জীবন দিয়া — দিব্য তব নব দৃষ্টি দিয়া
মৃত এ সুপ্তির মাঝে নব সৃষ্টি গিয়েছ আঁকিয়া।”

– স্বামী নিরাময়ানন্দ

আরও পড়ুন :

প্রেমেন্দ্র মিত্র জীবনী 

2 thoughts on “ভগিনী নিবেদিতা জীবনী ? Sister Nivedita Biography | ভগিনী নিবেদিতা প্রবন্ধ রচনা”

Leave a Comment