বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদান

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদান

বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদান : সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে শেয়ার করলাম বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদান সম্পর্কে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য এই প্রশ্নটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদান :

ভূমিকা : ভূমিকা : সত্যেন্দ্রনাথ বসু (1894-1974) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী , কোয়ান্টাম স্ট্যাটিসটিক্সের উদ্ভাবক ও মাতৃভাষায় বিজ্ঞান চর্চার অন্যতম প্রবক্তা। তাঁর গবেষণার ক্ষেত্র ছিল গাণিতিক পদার্থবিদ্যা। ‘বোস- সংখ্যায়ন ’ এর স্রষ্টা সত্যেন্দ্রনাথ বসু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি স্বীকৃত এবং স্মরণীয় নাম। যতদিন এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের পরিচয় অস্তিত্ব থাকবে ততদিন সত্যেন্দ্রনাথ ভাস্বর হয়ে থাকবেন তাঁর বোসন কনার মাধ্যমে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হয়ে সত্যেন্দ্রনাথ ‘ প্ল্যাঙ্ক সূত্র ও আলোকতত্ত্বের কোয়ান্টাম প্রকল্প ‘ নামে একটি প্রবন্ধ রচনা করে তা আপেক্ষিক তত্ত্বের উদ্ভাবক বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের কাছে পাঠান। আইনস্টাইন ওই প্রবন্ধের অনুবাদ করে Zeitschrift fur physik জার্নালে প্রকাশ করেন। আইনস্টাইন সেখানে বলেন- “ The method used here yields also the quantum theory of ideal gas, as I shall show elsewhere . “

অবদান : প্যারিসে সত্যেন্দ্রনাথ ম্যাডাম কুরির গবেষণাগারে কিছুকাল কাজ করার সুযোগ পান। তিনি অটো হ্যান, ওয়ার্নার হাইসেনবার্গ, পাউলির মতো বিজ্ঞানীদের সংস্পর্শে আসেন। এত কিছু সত্ত্বেও মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চায় সত্যেন্দ্রনাথ ছিলেন অবদান একনিষ্ঠ পূজারি। বাঙালির ছেলেরা বাংলাভাষায় বিজ্ঞানচর্চা করবেন, যারা গবেষণাকর্মে যুক্ত আছেন, তারা বাংলায় গবেষণাপত্র লিখবেন- সত্যেন্দ্রনাথ এটাই চাইতেন।

1945 খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে বাংলায় স্নাতকোত্তর পদার্থবিদ্যা ক্লাসে বাংলাতেই পড়াতে শুরু করলেন। 1947 খ্রিস্টাব্দে অক্টোবর মাসে বিজ্ঞানের বিকাশ এবং জনপ্রিয়করণের জন্য বিজ্ঞান কলেজে যে সভা হয় তাতে সভাপতিত্ব করেন সত্যেন্দ্রনাথ। 1948 খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে ‘বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ’ গঠিত হলে বাংলাভাষায় বিজ্ঞান প্রচারের জন্য ‘জ্ঞান ও বিজ্ঞান’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। বলাবাহুল্য, রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘বিশ্বপরিচয়’ গ্রন্থটি এই বৈজ্ঞানিককে উৎসর্গ করেছিলেন।

সম্মান : 1929 খ্রিস্টাব্দে সত্যেন বসু ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের পদার্থবিজ্ঞান শাখার সভাপতি এবং 1944 খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। 1958 খ্রিস্টাব্দে তিনি লন্ডনের রয়েল সোসাইটির ‘ ফেলো ‘ হন।

মূল‍্যায়ন : ভারতীয় বিজ্ঞানচর্চার আধুনিক পর্বে সত্যেন্দ্রনাথের ভূমিকা ছিল অনেকটা পিতৃপুরুষের মতো। উদাসীন এই বিজ্ঞানী তাঁর প্রতিভার যথাযোগ্য ব্যবহার করেননি বলে বিজ্ঞানীমহলে অভিযোগ শোনা যায় বটে, কিন্তু বিজ্ঞানের ইতিহাসে তাঁর অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়।

আরও পড়ুন :

বাংলা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে কাদম্বিনী বসুর অবদান 

বাংলা বিজ্ঞান চর্চার ইতিহাসে মেঘনাথ সাহারা অবদান

Leave a Comment