বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের তাৎপর্য ও ইতিহাস | History Of Independence Of Bangladesh

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের তাৎপর্য ও ইতিহাসবাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ইতিহাস | History Of Independence Of Bangladesh : বাংলাদেশ পূর্বে ভারতেরই একটি অংশ ছিল। কিন্তু কিছু বিবাদের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের আন্দোলন শুরু করে। 26 মার্চ 1971 সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিলবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস ছিল এক ভয়াবহ ঘটনা। আজকে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ইতিহাস সম্পর্কে জানবে। চলুন দেখে নেয়া যাক বাংলাদেশ কিভাবে স্বাধীনতা লাভ করেছিল

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ :

স্বাধীন ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্র হল বাংলাদেশ । বিংশ শতকের সাতের দশকে দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে । এখন ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যাক , স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান হল কীভাবে ? ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে অখণ্ড ভারতবর্ষ বিভাজিত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি । ভারত বিভাগের সূত্র ধরে বঙ্গপ্রদেশও দ্বিখণ্ডিত হয় ।

হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অন্তর্ভুক্ত এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয় । পূর্ববঙ্গের মুসলিমদের ধারণা ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অধ্যুষিত জনগণ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হলে তাদের সুখসমৃদ্ধি ঘটবে । কিন্তু দুর্ভাগ্য এই যে , স্বাধীনতা লাভের মাত্র গুটি কয়েক বছরের মধ্যেই পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বিভিন্ন কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে । শুরু হয় পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রাম।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের পটভূমি :

স্বাধীন বাংলাদেশের উত্থান ঘটে ভাষাকে কেন্দ্র করে । মহম্মদ আলি জিন্নাহ পূর্ব পাকিস্তানে পশ্চিম পাকিস্তানের ন্যায় উর্দুকেই রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে কার্যকরী করতে চেয়েছিলেন । কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের অধিকাংশ জনগণই ছিল বাংলাভাষী । এর ফলস্বরূপ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বাংলা ভাষাকে তাদের রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা প্রদানের জন্য আন্দোলন শুরু করে । ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ভাষা আন্দোলনই পরবর্তীকালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের আন্দোলনের পথ প্রশস্ত করে এবং ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম হয় । এই স্বাধীনতা লাভের পশ্চাতে ছিল বহুবিধ রাজনৈতিক , সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় কারণ।

1. পূর্ব পাকিস্তানিদের প্রতি ঔদাসীন্য : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দ্বিজাতি তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন ভারত ও স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্র । জন্মলগ্ন থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি মুসলিমদের মহম্মদ আলি জিন্নাহ – র প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ছিল । তাঁকে ‘ মুসলিম জাতির রক্ষক ’ বলে মনে করত পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ । হিন্দু অধীনতা থেকে মুক্তি পেয়ে ইসলামীয় শরিয়ৎ মেনে আইন প্রণয়ন ও শাসন পরিচালনার স্বপ্ন দেখে এরা।

2. অর্থনৈতিক শোষণ : দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ববঙ্গের মুসলিম জনগণ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হলেও পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার তাদেরকে মনে – প্রাণে মেনে নিতে পারেনি । জন্মলগ্ন থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক শোষণ , বঞ্চনার শিকারে পরিণত হয় । মোট জাতীয় আয়ের প্রায় সবটাই পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ ছিল । পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি যেন তাদের কোনোরকম দায়বদ্ধতা ছিল না । ফলে পূর্ব পাকিস্তানের নেতৃবৃন্দের দাবিদাওয়ার প্রতি কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি ।

সরকার পূর্ব পাকিস্তানকে কেবল কৃষি উৎপাদক অঞ্চল হিসেবে মনে করত । এই অঞ্চলে শিল্পের বিকাশ না ঘটিয়ে এখান থেকে কাঁচামাল সংগ্রহ করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে শিল্পের বিকাশে মনোযোগী হয় । পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার এইভাবে চক্রান্ত করে পূর্ব পাকিস্তানকে পিছিয়ে দেয় । ফলে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের ক্ষোভ আরও দৃঢ়মূল হয়।

3. রাজনৈতিক ক্ষমতা বণ্টনে অসম নীতি : কোনো একটি দেশের প্রশাসনিক কাজকর্ম মূলত সেই দেশের কেন্দ্রীয় স্থলে হয়ে থাকে ; যেখান থেকে সহজে সকল দায়দায়িত্ব পূরণ করা যায় । পশ্চিম পাকিস্তান ও পূর্ব পাকিস্তানের ভৌগোলিক দূরত্ব অনুযায়ী পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে কিছু সাধারণ প্রশাসনিক দফতর রাখা উচিত ছিল যেখান থেকে সহজে সেখানকার জনগণ রাজনৈতিক কাজকর্মের সুবিধা নিতে পারে । তা না করে দেশের যাবতীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পশ্চিম পাকিস্তানকে রাখা হয় । প্রসঙ্গত উল্লেখ্য পশ্চিমের তুলনায় পূর্ব পাকিস্তানে অধিক জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও সবরকম রাজনৈতিক ক্ষমতা পশ্চিম পাকিস্তানের কেন্দ্রে কুক্ষিগত ছিল । পূর্ব পাকিস্তানের কোনো নেতা পাকিস্তানের কোনো বিশিষ্ট পদাধিকারী হলেও কোনো না কোনোভাবে তাঁকে পদচ্যুত করা হত । এরকম কয়েকটি দৃষ্টান্ত হল খাজা নাজিমউদ্দিন , মহম্মদ আলি বগুড়া , শইদ সুরাবর্দী প্রমুখ।

4. ভিন্ন জাতিসত্তা : এক দেশের ভাষা সেই দেশের জনগোষ্ঠীকে যে এক সূত্রে গ্রথিত করে , সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই । তাদের মধ্যে এক স্বাতন্ত্র্য ও জাতিসত্তা কাজ করে । মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হলেও জাতিসত্তার নিরিখে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পৃথক ছিল । পশ্চিম পাকিস্তানের অ – বাংলাভাষী মুসলিম রীতিনীতি ও ঐতিহ্য অনেকটাই আলাদা ছিল । প্রখ্যাত ঐতিহাসিক রফিকউদ্দিন আহমেদের মতে , পূর্ববঙ্গে মুসলিমদের মধ্যে ইসলামীয় সত্তা বিরাজ করলেও জাতিগত দিক থেকে এখানে বাঙালি জাতিসত্তা অধিক গুরুত্ব পেত । এর ফলে পাকিস্তান সৃষ্টির কিছুদিন পরেই পূর্ববঙ্গের বাঙালি জাতিসত্তা আত্মনিয়ন্ত্রণের দাবি জানায়।

5. ভাষা আন্দোলন : কোনো একটি দেশের মাতৃভাষা হল সেই দেশের জনগণের কাছে মাতৃদুগ্ধ স্বরূপ । মাতৃদুগ্ধে শিশুর বৃদ্ধিবিকাশের মতো মাতৃভাষায় দেশের কৃষ্টি – সভ্যতার উন্নতি যে সমার্থক , সে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই । তাই কোনো দেশের মাতৃভাষার উপর যখন আঘাত আসে , তখন তাকে রক্ষার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠে সেই দেশের জনগণ । বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের জন‍্য সেই পথেই হেঁটেছিল ওই দেশের জনগণ । উর্দু ভাষাকে রাষ্ট্রভাষারূপে মেনে না নিয়ে মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দানের জন্য শুরু হয় ভাষা আন্দোলন।

6. ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের দুর্যোগ : ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পূর্ববঙ্গীয়দের মধ্যে ক্ষোভ যখন পুঞ্জীভূত , তখন ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তানের উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়ংকর সাইক্লোনে বহু মানুষ অকালে প্রাণ হারায় । ইতিহাসের অন্যতম ভয়ংকর এই প্রাকৃতিক দুর্যোগেও পাক সামরিক সরকার ত্রাণকাজে ব্যাপক উদাসীনতা দেখায় । ফলে ঝড়ের পরে যারা বেঁচেছিল , তারা খাদ্য – পানীয়ের অভাবে মারা যায় । সরকারি উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ হয়ে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ পাক – রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের পদত্যাগ দাবি করে।

7. ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের সাধারণ নির্বাচন : পাকিস্তানের তদানীন্তন সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান সাধারণ নির্বাচনের ডাক দিলে পূর্ব পাকিস্তানের ১৬১ টি আসনের মধ্যে শেখ মুজিবরের নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ ১৬০ টি আসনে বিপুল জনসমর্থনে জয়লাভ করে এবং পাকিস্তানের সরকার গঠনের বৈধ অধিকার লাভ করে । কিন্তু ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানের সামরিক সরকার পূর্ব পাকিস্তানের কোনো ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরে কোনোমতেই রাজি ছিল না । অন্যদিকে নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী জুলফিকার আলি ভুট্টো – র পিপলস পার্টি অনৈতিকভাবে আওয়ামি লিগ – এর নেতা শেখ মুজিবর রহমানের ক্ষমতা লাভের বিষয়টির সক্রিয় বিরোধিতা করে।

8. আন্দোলনের সূচনা : অন্য ভাষা জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার অর্থ হল সেই দেশের সংস্কৃতিকে শুধু অবমাননা করা নয় , অধিগ্রহণ করা । অধিকাংশ উর্দুভাষী পশ্চিম পাকিস্তান সর্বাধিক বাংলাভাষী পূর্ব পাকিস্তানের উপর বাংলার পরিবর্তে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে জোর করে চাপিয়ে দিলে পূর্ব পাকিস্তানিদের মধ্যে গভীর বিক্ষোভ দেখা দেয় । মহম্মদ আলি জিন্নাহর মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন উর্দু ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করলে এবং এই ভাষার প্রসারে অধিক সক্রিয় হয়ে উঠলে বাংলা ভাষা রক্ষার দাবিতে পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র আন্দোলন শুরু হয় । বিশেষ করে পূর্ববঙ্গে ছাত্রসমাজ সেদিন নিঃসংকোচে নিজেদের সংস্কৃতি রক্ষার দাবিতে রাস্তায় নেমে পড়ে ।

আন্দোলনকারী ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভেঙে ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি মিছিল নিয়ে এগিয়ে চলে । ছাত্র – পুলিশে সংঘর্ষ বেধে গেলে পুলিশ নিরস্ত্র মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায় । সঙ্গে সঙ্গে মহম্মদ সালাউদ্দিন , আবদুল জব্বার , আবুল বরকত ও রফিকউদ্দিন আহমেদের দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । তাঁদের মৃত্যুতে ক্ষুদ্ধ বাঙালি জাতি যে পাকবিরোধী সংগ্রাম শুরু করে তার ফলশ্রুতিতে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার স্বীকৃতি প্রদান করা হয় । ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে এই আন্দোলনের।

🔹’৭১ -এর মুক্তিযুদ্ধ : আওয়ামি লিগ – এর নেতা শেখ মুজিবর রহমান ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলনের আহ্বান জানালে হাজার হাজার পূর্ববঙ্গীয় মুক্তিযোদ্ধা নির্দ্বিধায় আন্দোলনে শামিল হয় । পূর্ববঙ্গের স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদের সাফল্যের খবর আকাশবাণী কলকাতায় ধারাবাহিকভাবে প্রচারিত হলে শুধু পূর্ববঙ্গের আপামর জনসাধারণই নয় , পশ্চিমবঙ্গেরও প্রতিটি বাঙালির মনে অভূতপূর্ব উন্মাদনার সৃষ্টি হয় । এর ফলস্বরূপ ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়

🔹পৈশাচিক হত্যালীলা : স্বাধীন বাংলাদেশের দাবিতে পূর্ববঙ্গের মানুষ শেখ মুজিবরের নেতৃত্বে তীব্র আন্দোলনে শামিল হলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও পূর্ববঙ্গের মানুষের উপর নৃশংসভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে । তখন পাকিস্তানি বাহিনীকে সাহায্যদানে এগিয়ে আসে পূর্ববঙ্গের মৌলবাদী আল – বদর , আল – সামস্ প্রভৃতি রাজাকার বাহিনী । রাজাকার বাহিনী – সহ পশ্চিম পাকিস্তানি বাহিনী পূর্ববঙ্গের অলিতে – গলিতে , শহরে – নগরের শান্তিপ্রিয় জনতার উপর নির্বিচারে হত্যালীলা চালায় । বইতে থাকে রক্তগঙ্গা । কত মানুষ যে নিহত হয়েছে তার সঠিক সংখ্যা বলা কঠিন । মোটামুটি পরিসংখ্যান থেকে জানা যায় , গণহত্যায় মোট নিহতের সংখ্যা ছিল দশ লক্ষ থেকে ত্রিশ লক্ষ।

🔹ভারতের ভূমিকা : বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রেখেছিল ভারত। মুক্তিসংগ্রামের মহতী লক্ষ্যে যখন লক্ষ লক্ষ বীর যোদ্ধা অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন , তখন পূর্ববঙ্গের প্রায় এক কোটি শরণার্থী ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করে । সেই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধি । পূর্ববঙ্গের উপর – পশ্চিম পাকিস্তানিদের সাঁড়াশি আক্রমণ , ধ্বংসলীলা , গণহত্যা সেদিন ভারতের চিরন্তন মানবতাবাদী ও ত্যাগের ঐতিহ্যকে ভাবিয়ে তুলেছিল । তাই সেদিন নির্দ্বিধায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী সবরকমের সাহায্য দিয়ে পূর্ববঙ্গকে সাহায্য করেছিলেন । ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্য নিয়ে পূর্ববঙ্গের স্বাধীনতার মুক্তি যোদ্ধারা ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে পাকবাহিনীকে কোণঠাসা করে ফেলে।

🔹পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণ ও স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম : অবশেষে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও পূর্ববঙ্গের মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি আক্রমণে পাক সৈন্যবাহিনী বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে । এমতাবস্থায় পাকবাহিনীর সেনাপ্রধান জেনারেল এ এ কে নিয়াজি কর্তৃক ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা – র কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর প্রদানের মধ্য দিয়ে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের অবসান ঘটে এবং স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্ম ( ১৬ ডিসেম্বর , ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ ) হয় । এই দিনটি বাংলাদেশে বিজয় দিবস হিসেবে পালিত হয়।

আরও পড়ুন : 

বন‍্যা কাকে বলে ? বন‍্যার কারণ ও ফলাফল

Leave a Comment