ডেঙ্গু জ্বর কি ? ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও চিকিৎসা, ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিকার, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

ডেঙ্গু জ্বর কি ? ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ও চিকিৎসা, ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিকার, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা

ডেঙ্গু জ্বর কি – Dengue Jor Ki : সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে তোমাদের সাথে শেয়ার করলাম ডেঙ্গু জ্বর কি এবং ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ? ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা ? ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিকার ? ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা সম্পর্কে।

ডেঙ্গু জ্বর কি :

ডেঙ্গু’ একটি স্প্যানিশ শব্দ। এর অর্থ হাড়ভাঙা জ্বর। ডেঙ্গু জ্বর একটি এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু ভাইরাস জনিত রোগ। ডেঙ্গুর জীবাণু বহনকারী এডিস মশা খালি চোখে দেখে চেনা যায়। মশার দেহে সাদা কালো ডোরাকাটা দাগ থাকে। যখন কোনো অঞ্চলে ডেঙ্গু প্রবেশ করে তখন একের পর এক বাড়িতে এই জ্বর প্রবেশ করে। বহু সময় মড়ক লেগে যায় এর অতিরিক্ত প্রভাবে।

ডেঙ্গু জ্বরের উদ্ভব :

ডেঙ্গু জ্বরের ঘটনার প্রথম বিবরণ পাওয়া জিন বংশের (২৬৫-৪২০ খ্রীষ্টাব্দ) এক চীনা মেডিক্যাল এনসাইক্লোপিডিয়ায়। ১৮২৮ সালে ডেঙ্গু শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়। ডেঙ্গু মহামারির তথ্য প্রথম পাওয়া যায় ১৭৭৯ ও ১৭৮০ সালে এশিয়া আফ্রিকা ও উত্তর আমেরিকার মহামারির সময়ে। ১৯৭০ সালে আমেরিকা ও প্ৰশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রাদুর্ভাবকে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করা হয়েছিল।

ডেঙ্গু জ্বরের প্রকারভেদ :

ডেঙ্গু জ্বর দুধরনের যথা- ১. ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বর ২.হেমোরেজিকডেঙ্গু জ্বর। আবার হেমোরেজিক ডেঙ্গু জ্বরের চারটি ধাপ আছে – গ্রেড ১, গ্রেড ২, গ্রেড ৩ ও গ্রেড ৪ । ডেঙ্গু ভাইরাসের আবার চারটি সেরোটাইপ রয়েছে, DEN-1, DEN 2, DEN-3 এবং DEN-4। তবে DEN-2 এবং DEN-3 সবচেয়ে মারাত্মক সেরোটাইপ হিসাবে মনে করা হয়।

ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ :

এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ভাইরাস সংক্রমণের ৩ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গগুলো দেখা দেয়। উপসর্গগুলি হল হঠাৎ করেই জ্বর চলে আসে, বমি বমি ভাব আসে, বমির সাথে রক্তপাত হয়, দাঁতে ভীষণ পরিমাণে ব্যথা হয়, নাক দিয়ে রক্ত পরতে পারে। চামড়া ছোটো ছোট অনেক ফুসকুড়ি গজিয়ে ওঠে। শক সিনড্রোম হয়ে গেলে দেহের কোনো অঙ্গে ঠিকমতো রক্ত সরবরাহ পৌঁছাতে পারে না, তখন অরগান ফেল করে। বিজ্ঞানের ভাষায় একে মান্টি অরগান ফেইলর বলে।

ডেঙ্গু জ্বরের চিকিৎসা :

জ্বর হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, যেকোনো জ্বরই যে ডেঙ্গু, তা-ও নয়। ক্লাসিক্যাল ও গ্রেড-১ হেমোরেজিক ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে বাড়িতেই চিকিৎসা করা যায়। বেশিরভাগ সময়ে এ ধরনের রোগী ৫ থেকে ১০ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যায়। গ্রেড-২, ৩ ও ৪ হেমোরেজিক আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।

ডেঙ্গু জ্বর হলে কি খেতে হবে :

প্রচুর তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। ডাবের জল, ফলের জুস সুস্থ হতে অনেক ভালো কাজ করে। মশারী টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলতে হবে।

ডেঙ্গু জ্বরের প্রতিকার :

মূলত এডিস মশার কামড় এড়িয়ে চলাই ডেঙ্গু প্রতিরোধের প্রধান উপায়। তাই মশার আবাসস্থল ধ্বংস করে, মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধ করতে হবে। এজন্য এডিস মশার বংশবিস্তারের উপযোগী বিভিন্ন আধারে, যেমন- কাপ, টব, টায়ার, ডাবের খোসা,গর্ত,ছাদ প্রভৃতিতে আটকে থাকা জল যেন জমতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। রাত্রে ঘুমানোর সময় মশারী টাঙানো উচিত। না হলে মশা না কামড়ানোর জন্য ক্রিম মেখে নিতে হবে। মশার কয়েল, ম্যাট এর ব্যবহার করতে হবে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে সব সময় মশারির মধ্যে রাখতে হবে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা :

সাধারণ মানুষ এই বিষয়ে এখনো ভীষণ ভাবে অসচেতন। এর নির্দিষ্ট কোনো ভ্যাকসিন নেই। সুনির্দিষ্টভাবে ওষুধও নেই। তবে মশার প্রজননের অনুকূল পরিবেশ আমাদের চারপাশে আছে। জ্বর হলেও এখনো ৪ থেকে ৫ দিন বহু বাড়িতেই প্যারাসিটামল খাওয়া হয়, এটা বন্ধ করতে হবে।

আরও দেখুন :

ভাইরাস কাকে বলে ? ভাইরাসের আবিষ্কার, উৎপত্তি, অবস্থান, আকার ও বৈশিষ্ট্য ?

Leave a Comment