কোশপ্রাচীর কাকে বলে ? কোশপ্রাচীরের গঠন, অবস্থান এবং বৈশিষ্ট্য

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

কোশপ্রাচীর কাকে বলে ? কোশপ্রাচীরের গঠন, অবস্থান এবং বৈশিষ্ট্য

কোশপ্রাচীর কাকে বলে – What is Cell Wall : একটি কোশপ্রাচীরকে নির্জীব উপাদান হিসাবে চিহ্নিত করা হয় যা একটি কোশের বাইরের স্তরকে আবৃত করে। কোশপ্রাচীর বাইরের পরিবেশ থেকে কোশের অভ‍্যন্তরীন বিষয়বস্তুকে আলাদা করে। আজকে আমরা জানবো কোশপ্রাচীর কাকে বলে ? কোশপ্রাচীরের কাজ বা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।

কোশপ্রাচীর কাকে বলে :

ব্যাকটেরিয়া এবং অধিকাংশ উদ্ভিদকোশের কোশ আবরণীর বাইরে যে বহুশর্করা ( মূলত সেলুলোজ ) নির্মিত , স্থিতিস্থাপক , জড় , ভেদ্য এবং স্থূল আবরণী থাকে , তাকে কোশপ্রাচীর বা সেল ওয়াল বলে।

কোশপ্রাচীরের অবস্থান :

উদ্ভিদ ও ব্যাকটেরিয়া কোশের ক্ষেত্রে এটি কোশপর্দার বাইরে থাকে । প্রাণীকোশে , উদ্ভিদ জনন কোশে ( পরাগরেণু ও ডিম্বাণু ) ও কিছু ব্যাকটেরিয়া কোশে ( মাইকোপ্লাজমা ) কোশপ্রাচীর থাকে না।

কোশপ্রাচীর কি দিয়ে গঠিত :

প্রোটোপ্লাজম থেকে ক্ষরিত বিভিন্ন বিপাকজাত নির্জীব পদার্থ , কোশের বাইরের দিকে সঞ্চিত হয়ে কোশপ্রাচীর গঠন করে । কোশপ্রাচীরের মূল রাসায়নিক উপাদান হল – সেলুলোজ , হেমিসেলুলোজ , পেকটিন , লিগনিন , সুবেরিন , কাইটিন , ক্যালশিয়াম , ম্যাগনেশিয়াম ইত্যাদি । পরিণত কোশপ্রাচীর নিম্নলিখিত তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথা-

1. প্রাথমিক প্রাচীর :

এটি কোশের সবথেকে বাইরের স্তর । এটি পাশাপাশি অবস্থিত দুটি কোশের মধ্যপর্দার উভয়দিকে থাকে । এটি তুলনামূলকভাবে পাতলা , ভেদ্য ও স্থিতিস্থাপক প্রকৃতির । এই স্তরটি প্রধানত সেলুলোজ , হেমিসেলুলোজ , লিগনিন ও মাইক্রোফাইব্রিল দিয়ে তৈরি হয় ।

2. গৌণ প্রাচীর :

এটি কোশের প্রাথমিক কোশপ্রাচীরের ভিতরের দিকের স্তর । এটি প্রাথমিক কোশপ্রাচীর ও কোশপর্দার মধ্যবর্তী অংশে অবস্থিত । কোশের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর স্থূলত্বও বৃদ্ধি পায় । এটি প্রাথমিক কোশপ্রাচীরের তুলনায় অনেক বেশি পুরু এবং দৃঢ় হয় । এটির প্রধান উপাদান হল-লিগনিন , সুবেরিন , সেলুলোজ , হেমিসেলুলোজ ইত্যাদি।

3. মধ্যচ্ছদা :

সন্নিহিত দুটি উদ্ভিদকোশের মধ্যবর্তী অংশে বর্তমান জেলিসদৃশ সান্দ্র আন্তঃকোশীয় ধাত্রবিশেষ । এটি সংশ্লিষ্ট কোশদুটিকে সিমেন্টের মতো সংযুক্ত রাখে । এটি ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম পেকটেট দ্বারা গঠিত।

কোশপ্রাচীরের বৈশিষ্ট্য বা কাজ :

কোশপ্রাচীরের কাজ বা বৈশিষ্ট্য গুলি নীচে আলোচনা করা হল –

1.কোশপ্রাচীর উদ্ভিদদেহে কোশের আকৃতি নির্দিষ্ট করে।

2. কোশপ্রাচীর সজীব প্রোটোপ্লাজমকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে এবং কোশকে যান্ত্রিক দৃঢ়তা প্রদান করে।

3. সংলগ্ন কোশের মাঝখানে থাকা প্লাজমোডেসমাটা , জল ও খনিজ লবণ আদানপ্রদানে সাহায্য করে।

4. কোশপ্রাচীর স্থিতিস্থাপক হওয়ায় কোশের মধ্যে জলের চাপ বৃদ্ধি পেলেও কোশটি ফেটে যায় না।

5. পার্শ্ববর্তী কোশগুলির সঙ্গে কোশপ্রাচীর সংযোগ রক্ষা করে।

আরও পড়ুন : 

পরিবেশ দূষন কাকে বলে ? কারণ ও ফলাফল 

2 thoughts on “কোশপ্রাচীর কাকে বলে ? কোশপ্রাচীরের গঠন, অবস্থান এবং বৈশিষ্ট্য”

Leave a Comment