মৃত্তিকা পরিলেখ কাকে বলে ? মৃত্তিকা পরিলেখের বৈশিষ্ট্য

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

মৃত্তিকা পরিলেখ কাকে বলে ? মৃত্তিকা পরিলেখের বৈশিষ্ট্য

মৃত্তিকা পরিলেখ কাকে বলে : সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে আলোচনা করলাম মৃত্তিকা পরিলেখ কাকে বলে এবং মৃত্তিকা পরিলেখের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিস্তারিত আলোচনাটি।

মৃত্তিকা পরিলেখ কাকে বলে :

ভূপৃষ্ঠ থেকে নীচের দিকে আদি শিলা পর্যন্ত পরপর মাটির সুবিন্যস্ত স্তরসমূহের উল্লম্ব প্রস্থচ্ছেদকে মাটির পরিলেখ বা প্রোফাইল বলে। হিউমিফিকেশন, খনিজকরণ, এলুভিয়েশন ও ইলুভিয়েশন প্রভৃতি মৃৎউৎপাদী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অবিন্যস্ত রেগোলিথের মধ্যে চূর্ণীকৃত ও বিয়োজিত শিলাসমূহ অনুভূমিকভাবে বিন্যস্ত হয়ে হোরাইজন বা স্তর তৈরি করে। রুশ বিজ্ঞানী ডকুচেভ সর্বপ্রথম স্তরায়ন তথা মৃত্তিকা পরিলেখের কথা উল্লেখ করেন।

মৃত্তিকা পরিলেখের বৈশিষ্ট্য :

প্রতিটি পরিণত মৃত্তিকার পরিলেখে দুটি স্তর যথা- i. জৈবিক স্তর ও ii. খনিজ স্তর।

i. জৈবিক স্তর : মৃত্তিকা পরিলেখের ওপরের স্তরটি জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ। এই স্তরের ওপরের অংশ বা স্তরটি অবিয়োজিত জৈব পদার্থে ঢাকা থাকে। এই স্তরটি O1 বা A00 স্তর নামে পরিচিত। এর ঠিক নীচের স্তরটি আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে বিয়োজিত। এই স্তরটি O2 বা A0 স্তর নামে পরিচিত। এই স্তরগুলি সাধারণত বনভূমি অঞ্চলে দেখা যায়।

ii. খনিজ স্তর : মৃত্তিকা পরিলেখে খনিজ স্তরকে 3 টি উপস্তরে বিভক্ত। সেগুলি নিচে আলোচনা করা হল-

1. A হোরাইজন বা ক্ষরিত স্তর : জৈবিক স্তরের ঠিক নীচের স্তরটি A হোরাইজন নামে পরিচিত। এই স্তরটি সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম মৃত্তিকা কণা দ্বারা গঠিত। এই স্তরটি খনিজ ও জৈব পদার্থে সমৃদ্ধ। দ্রবীভূত পদার্থসমূহ এই স্তর থেকে এলুভিয়েশন অর্থাৎ ধৌত প্রক্রিয়ায় নীচের স্তরে ক্ষরিত বা অপসারিত হয়। তাই এই হোরাইজনকে ক্ষরিত বা ধৌত স্তর বলে। তাই এই স্তর সূক্ষ্ম কর্দমকণা ও খনিজ শূন্য হয়ে যায়। এই স্তরের মাটির বর্ণ ( রং) হয় হালকা।

2. B হোরাইজন বা সঞ্চয় স্তর : A স্তরের নীচের স্তর B হোরাইজন নামে পরিচিত। ধৌত প্রক্রিয়ায় A হোরাইজনের অতিসূক্ষ্ম কর্দমকণা ও দ্রবীভূত পদার্থসমূহ অপসারিত হয়ে B হোরাইজনে সঞ্চিত হয়। এই স্তরে A স্তরের বাহিত পদার্থ গুলি সঞ্চিত হয় বলে, B হোরাইজন স্তরকে পুষ্টি মৌলের ভাণ্ডার বলা হয়। এই স্তরের মাটির রং গাঢ় হয়।

3. C হোরাইজন বা শিলাচূর্ণ স্তর : মৃত্তিকা পরিলেখের সর্বনিম্ন স্তরটি C স্তর বা C হোরাইজন নামে পরিচিত। এই স্তরটি আংশিক বা সম্পূর্ণ শিলাচূর্ণ দ্বারা সৃষ্ট। এই স্তরটি আদি শিলা ও মৃত্তিকার মধ্যে সংযোগসাধনকারী স্তর।

আরও পড়ুন :

মাটি কাকে বলে ? মাটির প্রকারভেদ, উপাদান ও বৈশিষ্ট্য

Leave a Comment