মৃত্যুঞ্জয়ের কে ? মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন ?

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন
মৃত্যুঞ্জয়ের কে ? মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন
        মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন

মৃত্যুঞ্জয়ের কে ? মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন

দুটি উত্তর দেওয়া হলো তোমাদের যেটা পছন্দ হয় সেটা পড়ে নিও।

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কে বাঁচায় কে বাঁচে’ ছোটগল্পের নায়ক মধ‍্যবিত্ত, বিবাহিত, যুবক মৃত‍্যুঞ্জয়। ফুটপাতে অনাহার আর মৃত্যুর দৃশ্য দেখার পর মৃত্যুঞ্জয় ভেতর থেকে বাইরের দিকে পাল্টাতে শুরু করে। অপরাধবোধে সে বাড়িতে ভালো করে খেতে বা ঘুমাতে পারে না। একদিন তার স্ত্রী এবং সে না খেয়ে ক্ষুধার্থকে খাওয়াতে লাগলেন। এমনকি তিনি মাইনের দিন নিখিলের মাধ্যমে তার পুরো বেতন ত্রাণ-তাহবিলে দান করেন। এদিকে অফিসে যাওয়ি আসার ঠিক থাকে না। কর্মক্ষেত্রে ভুল করে, তিনি প্রায়ই চুপচাপ বসে থাকেন এবং চিন্তা করেন। বিশেষ করে বাড়িতে নয়, তিনি গাছের নীচে, ডাস্টবিনের পাশে বা ফুটপাতে পড়ে থাকা বিরক্তিকর মানুষকে দেখতে শহরের চারপাশে ঘুরে বেড়ান। মৃত্যুঞ্জয়ের এমন অবস্থা তার বাড়ির শোচনীয় অবস্থার দিকে নিয়ে যায়।

মৃত্যুঞ্জয়ের এই অবস্থায় তাঁর স্ত্রী শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। শুয়ে থেকে সে পরিবারের সদস্যদের মৃত্যুঞ্জয়কে খুঁজতে পাঠায়। তারাও মৃত্যুঞ্জয়ের সন্ধানে বেরিয়েছিল কিন্তু তাকে না পেয়ে ফিরে আসে এবং মিথ্যা সান্ত্বনা দেয় যে মৃত্যুঞ্জয় শীঘ্রই দেশে ফিরে আসবে। তারা এই স্লোগান বলার সময় হয় গম্ভীর নয়তো অশ্রুসিক্ত হয়। মৃত্যুঞ্জয়ের বাচ্চারা মাঝে মাঝে ক্ষুধার জ্বালায় চিৎকার করে কাঁদে। মৃত্যুঞ্জয়ের অনুপস্থিতিতে তার পরিবারের সদস্যদের এমনই দুর্দশা।

দ্বিতীয় উত্তর :

মৃত্যুঞ্জয়ের কে ? মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা শোচনীয় কেন

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কে বাঁচায় কে বাঁচে গল্পে ১৩৫০ বঙ্গাব্দের মন্বন্তরকে কেন্দ্র করে শহরাঞ্চলের চিত্র এঁকেছেন। মূল চরিত্র মৃত্যুঞ্জয়, তার চোখ দিয়ে একের পর এক দৃশ্যপট আমাদের সামনে এসেছে এবং একে কেন্দ্র করে নায়ক মৃত্যুঞ্জয়ের চরিত্রে উত্তরণ ঘটেছে।

মৃত‍্যুঞ্জয়ের বাড়ির অবস্থা :

প্রশ্নে প্রদত্ত উদ্ধৃতিটি 1942 খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষের পটভূমিতে সমাজ সচেতন গীতিকার মানিক  বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ‘কে বাঁচায়, কে বাঁচে’ গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে। গল্পের নায়ক মৃত্যুঞ্জয় যখন ক্ষুধার্ত, অসহায়, অন্নহীন মানুষকে বাঁচানোর প্রয়াসে সংসারবিমুখ হলে যার পরিণতি হয় শোকের ছায়া । মৃত্যুঞ্জয় তার স্ত্রী টুনুর মাকে নিয়ে একবেলা খাবার বাঁচিয়ে ফুটপাথে বসবাসকারী লোকেদের মধ্যে বিতরণ করেন। ফলে টুনুর মা কিছুদিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন, তিনি বিছানা থেকে ওঠার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। এমতাবস্থায় তিনি বাড়ির সবাইকে মৃত্যুঞ্জয়কে খুঁজতে বলেন। ক্ষুধা, অনাদর, অবহেলায় ঘরের ছেলেমেয়েরা সব সময় কাঁদে, সবার মুখ বিষণ্ণ ভাব। এমন পরিস্থিতিতে নিখিলকে বারবার এসে পরিবেশ সামলানোর চেষ্টা করতে হয়।

পড়ুন : অনুসর্গ কি ?

শোচনীয় অবস্থার কারণ :

ফুটপাথে দেখা অনাহারে মৃত্যু একজন সংবেদনশীল মৃত্যুঞ্জয়ের হৃদয়ে চিরন্তন প্রশ্ন জাগিয়েছে। স্বার্থপর, তিনি বেঁচে থাকার সমস্ত জাগতিক উপায় উপেক্ষা করে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়া মানুষকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি সংসারের ছোট ছোট দায়িত্বের বাইরে গিয়ে বৃহত্তর সমাজের বৃহত্তর সমস্যার কাছে গিয়েছিলেন। তিনি বুঝতে চেয়েছিলেন, “কোথা থেকে  কীভাবে সমস্ত ওলোট পালোট হয়ে গেলো।” সবকিছু বুঝেও কিছুই না করার অক্ষমতা অবশেষে তাকে তার বাড়ির শোচনীয় অবস্থার অনিবার্য প্রভাবে পরিবর্তন করেছিল।

আরও পড়ুন :

“কে বাঁচায় কে বাচেঁ” গল্পের নামকরণের সার্থকতা ? 

“কে বাঁচায় কে বাঁচে” গল্পে মৃত‍্যুঞ্জয়ের   চরিত্র ?

“কে বাঁচায় কে বাঁচে” গল্পে নিখিলের চরিত্র ?

“কে বাঁচায় কে বাঁচে” গল্পে টুনুর মায়ের চরিত্র ?

Leave a Comment