সুপ্রিয় পাঠকবন্ধুরা আমাদের এই নতুন পোষ্টে স্বাগতম , এই পর্বটিতে আমরা যোগ কলা কাকে বলে এবং যোজক কলা বা যোগ কলার বৈশিষ্ট্য,গঠন, কাজ ও প্রকারভেদ সম্পর্কে নিখুঁত ভাবে আলোচনা করেছি, যা আপনাদের জন্য খুবই হেল্পফুল হবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক যোগ কলা কাকে বলে।
যোগ কলা বা যোজক কলা :
যোজক কলা বা যোগ কলা দেহের বিভিন্ন অঙ্গসমূহের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে, এজন্য একে binding tissue বলে। যোজক কলা সমগ্র দেহের শতকরা 30 ভাগ। মেসোডার্ম থেকে যোজক কলা উৎপন্ন হয়।
যোগ কলা কাকে বলে :
যে কলা দেহের বিভিন্ন কলা ও অঙ্গসমূহের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে, তাকে যোগ কলা বলে।
যোগ কলার বৈশিষ্ট্য :
যোগ কলার গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য গুলি হল-
i. যোজক কলা আদি ভ্রূণের মেসোডার্ম থেকে উৎপন্ন হয়।
ii. এই কলার ধাত্রের (অন্তঃকোশীয় পদার্থ) পরিমাণ বেশি এবং কোশের সংখ্যা কম।
iii. অন্তঃকোশীয় পদার্থ তরল, অর্ধকঠিন বা কঠিন হতে পারে।
iv. অন্তঃকোশীয় পদার্থে বিভিন্ন প্রকার তন্তুজাতীয় উপাদান থাকতে পারে।
যোগ কলার অবস্থিতি :
এই কলা রক্ত, পেশি, তরুণাস্থি, অস্থি, ত্বক ও পেরিটোনিয়ামের নীচে, স্নায়ুর ফাকে ইত্যাদি স্থানে দেখা যায়।
যোগ কলার গঠন :
আদর্শ যোজক কলার 4টি প্রধান অংশ হল-
1. ধাত্র : ধাত্রটি সমস্বত্ত্ব, অর্ধতরল বা জেলির মতো ধাত্রবস্তু যা রাসায়নিকভাবে গ্লাইকোস্যামিনোগ্লাইক্যান দ্বারা গঠিত। যোজক কলায় ছড়িয়ে থাকা সহযোগী কোশ থেকে ম্যাট্রিক্স বা ধাত্র ক্ষরিত হয়।
2. কোশ : যোগ কলার বিভিন্ন প্রকার কোশগুলি হল-
i. ফাইব্রোব্লাস্ট : এরা ফাইবার এবং ধাত্রবস্তু গঠন করে।
ii. ফ্যাট কোশ বা অ্যাডিপোজ কোশ : এই কোশগুলি তাদের ভ্যাকুওলে ফ্যাট বা স্নেহ সঞয় করে।
iii. ম্যাক্রোফাজ : এরা স্বাধীন বা আবদ্ধ ফ্যাগোসাইট হতে পারে।
iv. মাস্ট কোশ : এরা হেপারিন এবং হিস্টামিন ক্ষরণ করে।
v. ইম্যুনোসাইটস : যথা- লিম্ফোসাইট এবং প্লাজমা কোশ, উভয়েই অ্যান্টিবডি উৎপন্ন করে।
3. ফাইবার : বিভিন্ন ধরনের অদ্রবণীয় প্রোটিন ফাইবার, যথা- কোলাজেন বা শ্বেততত্ত্ব, ইলাস্টিন বা পীত তন্তু এবং রেটিক্যুলার বা
জালকাকার তত্ত্ব। এরা ধাত্রের মধ্যে অবস্থান করে।
4. রক্তবাহ : যা উন্নত রক্ত সরবরাহের সঙ্গে সম্পর্কিত।
যোগ কলার কাজ :
i. যোজক কলা বিভিন্ন কলাকে একত্রে বন্ধন ঘটায় এবং যথাযথ অবস্থান বজায় রাখে।
ii. মৃত এবং বিনষ্ট কলাকে প্রতিস্থাপিত করতে সাহায্য করে এবং এভাবে পুনরুৎপাদন এবং কলা মেরামতিতে সাহায্য করে।
iii. ইহা দেহের প্রতিরক্ষায় সাহায্য করে এবং দেহের প্রবেশ করে এমন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং বিষাক্ত বস্তু থেকে দেহকে রক্ষা করে।
iv. দেহ ধারণ বা অবলম্বন করার জন্য কঙ্কাল তৈরি করে।
v. জেলির মতো ধাত্র shock- absorber-এর কাজ করে।
vi. দেহের কোনো কোনো অংশে ফ্যাট সঞয়ে সাহায্য করে।
যোগ কলার শ্রেণিবিভাগ :
ধাত্রের প্রকৃতি এবং কার্যের উপর নির্ভর করে, যোজক কলাকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেমন- I. কানেকটিভ টিস্যু প্রপার, II. তরল যোজক কলা বা সংবহন কলা, III. ভারবাহী যোজক কলা বা কঙ্কাল কলা।
আরও পড়ুন :
● আবরণী কলা কাকে বলে ? আবরণী কলার বৈশিষ্ট্য, কাজ ও শ্রেণীবিভাগ ?