সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | পৃথিবীর পরিক্রমণ

টেলিগ্ৰামে জয়েন করুন

সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর | পৃথিবীর পরিক্রমণ

সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর – Class 7th Geography First Chapter Question Answers : সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে শেয়ার করলাম সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর গুলি সম্পর্কে।

সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর :

এক কথায় উত্তর দাও :

1. কোন্ তারিখকে কর্কট সংক্রান্তি বলে ?

উত্তর : 21 জুন।

2. কোন্ তারিখকে মকর সংক্রান্তি বলে ?

উত্তর : 22 ডিসেম্বর।

3. উত্তর মেরুবৃত্তের মান কত?

উত্তর : 66.5° উত্তর

4. বসন্তকালীন বিষুব কাকে বলে ?

উত্তর : ২১ মার্চকে

5. শরৎকালীন বিষুব কাকে বলে ?

উত্তর : 23 সেপ্টেম্বরকে

6. সূর্যের দক্ষিণমুখী আপাতগতিকে কী বলে ?

উত্তর : দক্ষিণায়ণ

7. মকরক্রান্তি রেখার মান কত ?

উত্তর : 23.5 ° দক্ষিণ

8. কোন্ দিন উত্তর গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড়ো ও রাত সবচেয়ে ছোটো হয় ?

উত্তর : 21শে জুন

9. পৃথিবী কক্ষতলের সাথে কত ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে ?

উত্তর : 66.5° কোণে হেলে থাকে

10. আমাদের পৃথিবী কোন্ ছায়াপথের অন্তর্গত ?

উত্তর : আমাদের পৃথিবী ‘আকাশগঙ্গা’ ছায়াপথের অন্তর্গত।

11. কার সময় থেকে জানা যায় বিভিন্ন গ্রহগুলি সূর্যের চারিদিকে ঘোরে ?

উত্তর : বিজ্ঞানী কোপারনিকাসের সময় থেকে জানা যায়।

12. ‘বিষুব’ কথার অর্থ কী ?

উত্তর : ‘বিষুব’ কথার অর্থ সমান দিন ও রাত্রি।

13. সূর্য পৃথিবীর তুলনায় কত বড়ো ?

উত্তর : সূর্য পৃথিবীর তুলনায় 13 লক্ষ গুণ বড়ো

সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর :

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :

1. পৃথিবীর অক্ষ কাকে বলে ?

উত্তর : যে কল্পিত রেখার চারিদিকে পৃথিবী আবর্তন করে তাকেই পৃথিবীর অক্ষ বলে।

2. পৃথিবীর গতি কয়প্রকার ও কী কী ?

উত্তর : পৃথিবীর গতি দু-প্রকার। যথা-আবর্তন গতি ও পরিক্রমণ গতি।

3. সূর্যে কীভাবে বিপুল শক্তি তৈরি হয় ?

উত্তর : সূর্যে প্রতিমুহূর্তে হাইড্রোজেন হিলিয়ামে রূপান্তরিত হয়। বিপুল শক্তি তৈরি হয়।

4. পৃথিবীর আকৃতি কেমন ?

উত্তর :পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলকের মতো।

5. মুক্তিবেগ কাকে বলে ?

উত্তর : যে গতিতে গেলে কোনো বস্তু পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ছাড়িয়ে যেতে পারে তাকে মুক্তিবেগ (Escape velocity) বলে। এই মুক্তিবেগের গতি প্রতি সেকেন্ডে 11.2 কিমি।

6. কোন্ তারিখে পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাত সমান হয় ?

উত্তর : 21 মার্চ ও 21 সেপ্টেম্বর তারিখে সর্বত্র দিন ও রাত সমান হয়।

7. মহাবিষুব কোন্ দিনকে বলে ?

উত্তর : 21 মাৰ্চ দিনটিকে মহাবিষুব বলে।

8. জলবিষুব কোন্ দিনকে বলে ?

উত্তর : 23 সেপ্টেম্বর দিনটিকে জলবিষুব বলে।

9. মধ্যরাত্রির সূর্যের দেশ কাকে বলে ?

উত্তর : নরওয়ের হ্যামারফেস্ট শহরকে মধ্যরাত্রির সূর্যের দেশ বলে।

10. মহাকর্ষ কাকে বলে ?

উত্তর : পৃথিবীর সব বস্তুই পরস্পরকে আকর্ষণ করে বা নিজের দিকে টানে, একেই মহাকর্ষ বলা হয়।

11. পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির বেগ কত ?

উত্তর : পৃথিবীর পরিক্রমণ গতির বেগ সেকেন্ডে প্রায় 30 কিমি।

12. পৃথিবীর মাঝ বরাবর কোন্ রেখা রয়েছে ?

উত্তর : পৃথিবীর মাঝ বরাবর বিষুবরেখা বা নিরক্ষরেখা রয়েছে।

13. পৃথিবীর কক্ষপথ কাকে বলে ?

পৃথিবী প্রায় 15 কিলোমিটার দূর থেকে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবী যে পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে তাকেই পৃথিবীর কক্ষপথ বলে।

14. কক্ষতল কাকে বলে ?

উত্তর : পৃথিবীর কক্ষপথ মহাশূন্যে যে কাল্পনিক সমতলে অবস্থিত তাকেই কক্ষতল বলা হয়।

15. আমাদের দেশ পৃথিবীর কোথায় অবস্থিত?

উত্তর : আমাদের দেশ নিরক্ষবৃত্ত এবং উত্তরমেরুর মাঝের অঞ্চল অর্থাৎ উত্তর মেরুতে অবস্থিত।

16. পৃথিবীর মেরু কাকে বলে ?

উত্তর : পৃথিবীর যে দুটি প্রান্তে কল্পিত অক্ষদণ্ডটি বেরিয়ে থাকার কথা, পৃথিবীর সেই প্রান্ত দুটিকে মেরু বলা হয়।

17. পৃথিবীর অক্ষের অবস্থান হেলানো কেন ?

উত্তর : বিজ্ঞানীদের ধারণা পৃথিবী সৃষ্টির সময় থেকে বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে সংঘাতের কক্ষতল কারণেই পৃথিবীর অক্ষের এমন হেলানো অবস্থান হয়েছে।

18. সৌরদিন কাকে বলে ?

উত্তর : পৃথিবী নিজের মেরুদণ্ডের উপর একবার পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করতে সময় নেয় 24 ঘণ্টা বা একদিন। একে সৌরদিন বলে।

19. ‘সৌর বছর’ কাকে বলে ?

উত্তর : পৃথিবী নিজ মেরুরেখা আবর্তন করতে করতে সূর্যকে প্রায় 365 দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে। এই সময়টাকে এক সৌর বছর বলে। পরিক্রমণ গতির সময়কে ধরে বছর গণনা করা হয় বলে একে বার্ষিক গতিও বলা হয়।

20. কোথায় ও কখন একটানা রাত হয় ?

উত্তর : মার্চ থেকে জুন এই সময়ে কুমেরুবৃত্তীয় অঞ্চলে অন্ধকার দিন সহ একটানা রাত হয়। সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি সুমেবৃত্তীয় অঞ্চলে 24 ঘণ্টাই অন্ধকার থাকে।

21. শীতকালে সূর্যকে একটু বড়ো দেখায় কেন ?

উত্তর : পৃথিবীর অনুসূর অবস্থানের সময় পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব কমে যায়। এই সময় সূর্য পৃথিবীর কাছে চলে আসে এবং উত্তর গোলার্ধে শীতকালে সূর্যকে একটু বড়ো দেখায়।

সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর :

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :

1. আবর্তন বলতে কী বোঝ ?

উত্তর : পৃথিবী সূর্যকে সামনে রেখে নিজের মেরুরেখার ওপর পশ্চিম থেকে পূর্বে 24 ঘণ্টায় একবার পূর্ণ আবর্তন করে। একে পৃথিবীর আবর্তন গতি বলে। এই আবর্তন বা আহ্নিক গতির ফলে দিনরাত্রি হয়।

2. বার্ষিক গতি বা পরিক্রমণ গতি কাকে বলে? এর ফলাফল লেখো ।

উত্তর : পৃথিবী তার নিজের মেরুরেখার উপর ঘুরতে ঘুরতে তার নিজের উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে। পৃথিবীর এই গতিকে বার্ষিক গতি বা পরিক্রমণ গতি বলে। এই গতির ফলে ঋতুপরিবর্তন হয় ও দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে।

3. গ্রহদের গতি সংক্রান্ত সূত্র কে আবিষ্কার করেন ?

উত্তর : বিজ্ঞানী কেপলার প্রথম গ্রহদের গতি সংক্রান্ত তিনটি সূত্র আবিষ্কার করেন। কেপলারের প্রথম সূত্রটি হল “প্রতিটি গ্রহ উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এবং সূর্য ও উপবৃত্তের একটি ফোকাসে থাকে।”

4. পৃথিবীর অপসূর অবস্থান কাকে বলে ?

উত্তর : পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথের নাভিতে সূর্যের অবস্থান জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত পৃথিবী সূর্য থেকে ক্রমশ দূরে সরে যেতে থাকে। তাই পরিক্রমণকালে পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব সর্বত্র সমান হয় না। 4 জুলাই তারিখে পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব সবচেয়ে বেশি হয়, প্রায় 15 কোটি 20 লক্ষ কিমি। একে পৃথিবীর অপসুর অবস্থান বলে।

5. পৃথিবীর অনুসূর অবস্থান কাকে বলে ?

উত্তর : 3 জানুয়ারি সূর্য ও পৃথিবীর দূরত্ব সবচেয়ে কম হয়, প্রায় 14 কোটি 70 লক্ষ কিমি। এই দিনটিকে পৃথিবীর অনুসূর অবস্থান (Aphelion clerihelion) বলে।

6. অধিবর্ষ বা লিপইয়ার কাকে বলে? এটি কীভাবে নির্ণয় করা হয়।

উত্তর : পৃথিবীর একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে সময় লাগে 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড। কিন্তু হিসাবের সুবিধার জন্য 365 দিনে একবছর ধরা হয়। তাই প্রতিবছর এই 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা 6 ঘণ্টা সময় বাড়তি থেকে যায়। এই

বাড়তি সময়ের হিসাব রাখতে প্রতি 4 বছর অন্তর 1 টা পুরো দিন 6 ঘন্টা x 4 বছর = 24 ঘন্টা যোগ করা হয়। ওই একদিন ফেব্রুয়ারি মাসের সাথে যোগ করে (28+1) = 29 দিন করা হয়। তাই ওই বছরটা 366 দিনের হয়। 366 দিনের বছর কে বলে অধিবর্ষ বা লিপইয়ার ।

7. রবিমার্গ বা সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি বলতে কী বোঝ ?

উত্তর : পৃথিবী তার কক্ষতলের সাথে 66.5° কোণে হেলে অবস্থান করে। সেই কারণে পৃথিবীর বিষুবরেখা, কর্কটক্রান্তি রেখা ও মকরক্রান্তি রেখায় সূর্যরশ্মি কখনও লম্বভাবে ও কখনও তির্যকভাবে পড়ে। তাই আপাতভাবে মনে হয়, যে সহ পৃথিবীর বিষুবরেখা থেকে উত্তরে কর্কটক্রান্তি রেখা পর্যন্ত এবং দক্ষিণে মকরক্রান্তি রেখা পর্যন্ত চলাচল করে। একেই সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি বা রবিমার্গ বলে।

8. সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ণ কাকে বলে ?

উত্তর : 22 ডিসেম্বর মকরক্রান্তিতে লম্বভাবে কিরণ দেবার পর থেকে 21 জুন পর্যন্ত পৃথিবীর উত্তর মেরু ধীরে ধীরে সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। তাই মনে হয় সূর্য উত্তরমুখে গমন করছে। একে সূর্যের উত্তরায়ণ ও 21 জুন থেকে 22 ডিসেম্বর পর্যন্ত সূর্যের দক্ষিণমুখে চলনকে দক্ষিণায়ণ বলে।

9. মধ্যরাত্রির সূর্যের দেশ’ কাকে বলা হয় ?

উত্তর : 21 মাৰ্চ থেকে 21 জুন বা জুলাই পর্যন্ত কানাডা, ডেনমার্ক, আলাস্কা, নরওয়ে, সুইডেন, আইসল্যান্ড-এর অনেক জায়গা থেকে স্থানীয় সময় অনুসারে গভীর রাত্রিতে কিছু সময়ের জন্য দিগন্তরেখায় সূর্যকে দেখা যায়। নরওয়ের উত্তরে হ্যামারফেট বন্দরে মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত সূর্যকে রাত্রে স্পষ্টভাবে দেখা যায় বলে একে ‘মধ্যর, ত্রির সূর্যের দেশ’ বলা হয়।

10. সংক্রান্তি তখন কীভাবে পালিত হত এবং এখন কীভাবে পালিত হয় ?

উত্তর : বছরের সবথেকে বড়ো এবং ছোটো এই দিন দুটি প্রাচীন কালে বছর গণনা, শস্যরোপণ ইত্যাদি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখনও আয়ারল্যান্ড, চিন ও দক্ষিণ আমেরিকায় সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রচলিত রয়েছে।

11. কর্কট সংক্রান্তি ও মকর সংক্রান্তির ফলাফলগুলি লেখো ?

উত্তর : 21 জুন তারিখকে কর্কট সংক্রান্তি বলে। কারণ ওই দিন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই এই সময় উত্তর গোলার্ধে দিন বড়ো ও রাত ছোটো হয়।

22 ডিসেম্বর তারিখকে মকর সংক্রান্তি বলে। কারণ ওই দিন সূর্য মকরক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই এই সময় দক্ষিণ গোলার্ধে দিন বড়ো ও রাত ছোটো হয়।

12. সুমেরু প্রভা ও কুমেরু প্রভা কী ?

উত্তর : পৃথিবীর উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুতে একটানা 6 মাস রাত চলাকালীন সময়ে মাঝে মাঝে আকাশে রংধনুর মতে রঙিন আলো দেখা যায়। একে অরোরা বলা হয়। বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন আয়নিত গ্যাসের সাথে সূর্যরশ্মির সংঘর্ষের ফলে, মেরু অঞ্চলের আকাশে একরকম আলোর বিচ্ছুরণ দেখা যায়। একে উত্তর গোলার্ধে সুমেরু প্রভা ও দক্ষিণ গোলার্ধে কুমেরু প্রভা বলা হয়।

13. কোন্ বছরটি অধিবর্ষ হবে তা কী করে বোঝা যাবে?

উঃ। যদি কোনো সালকে 4 দিয়ে ভাগ করলে ভাগশেষ না থাকে তাহলে সেটি অধিবর্ষ হবে। কিন্তু শতবর্ষ যেমন-1600, 1500 এগুলোকে 400 দিয়ে ভাগ করলে যদি ভাগশেষ না থাকে তবেই সেই বছর ‘অধিবর্ষ’ হবে।

14. সূর্যের দৈনিক আপাতগতি কাকে বলে ?

উত্তর : পৃথিবী নিজ অক্ষের চারপাশে পশ্চিম দিক থেকে পূর্বদিকে আবর্তন করে বলে আপাতদৃষ্টিতে সূর্যকে প্রতিদিন গর আকাশ থেকে পশ্চিম আকাশে চলাচল করছে বলে মনে হয়। এটাই সূর্যের দৈনিক আপাতগতি। সূর্যের দৈনিক আপত গতির সময়কাল হল সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত।

15. পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকলে কী হত?

উত্তর : পৃথিবীর মধ্যাকর্ষণ শক্তি না থাকলে পৃথিবীতে বাতাস, জল, মানুষ, জীবজন্তু, গাছপালা কোনো কিছুই স্থির থাকত না সবই মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যেত। জীবজগতের অস্তিত্ব না থাকায় পৃথিবী প্রাণহীন গ্রহে পরিণত হত।

16. সমস্ত জীবজগৎ কীভাবে সূর্যের ওপর নির্ভরশীল?

উত্তর : পৃথিবীতে জীবনের উৎস হল সূর্য। সূর্যের আলো ও উত্তাপ ছাড়া বীজ অঙ্কুরিত হয় না, গাছপালা বেড়ে ওঠেন না। সূর্যে প্রতিমুহূর্তে হাইড্রোজেন হিলিয়ামে রূপান্তরিত হয়ে এক বিপুল শক্তি সৃষ্টি হয়ে থাকে এই শক্তির ২০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ আলো এবং উত্তাপ রূপে প্রতি মুহূর্তে পৃথিবীতে পৌঁছায়।

সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর :

রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর :

1. ঋতুপরিবর্তন বলতে কী বোঝো? উত্তর গোলার্ধে কীভাবে বসন্ত ঋতুর সূচনা হয় ?

উত্তর : সূর্যরশ্মির পতন কোণের পার্থক্য ও দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধির জন্য পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে তাপমাত্রার পার্থক্য হয়। এই পার্থক্য অনুসারে সারাবছরকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। এর এক একটি ভাগকে ঋতু বলে। আর এই ঋতুগুলির পর্যায়ক্রমিক আবর্তনকে ঋতুপরিবর্তন বলে। সমগ্র পৃথিবীতে চারটি ঋতুকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। এগুলি হল গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত ও বসন্ত।

উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল : পৃথিবী তার নিজের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে 21 মার্চ তারিখে এমন এক অবস্থানে আসে যে তখন পৃথিবীর নিরক্ষরেখার উপর সূর্যের আলো লম্বভাবে পড়ে। তাই পৃথিবীর দুই মেরুই সূর্য থেকে সমান দূরত্বে থাকে ও সমান উয় হয়। সর্বত্রই দিন ও রাত সমান হয়। অর্থাৎ 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয়। এই দিনকে তাই মহাবিষুব বলে। দিন ও রাত সমান হবার জন্য আবহাওয়া কিছুটা মনোরম থাকে। এই সময় তাই উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে শরৎকাল হয়। উত্তর গোলার্ধে বসন্তকাল হবার জন্য এই দিনকে ‘বসন্তকালীন বিষুব’ বলে।

2. উত্তর গোলার্ধে কখন গ্রীষ্মকালের সূচনা হয় ?

উত্তর : 21 মার্চের পর থেকে পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধ একটু একটু করে সূর্যের দিকে হেলতে থাকে। 21 জুন তারিখে সূর্য উত্তরায়ণের শেষ সীমায় পৌঁছায় অর্থাৎ ওই দিন সূর্য কর্কটক্রান্তি রেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই উত্তর গোলার্ধে 12 ঘণ্টার বেশি দিন হয় ও 12 ঘণ্টার কম রাত হয়। বেশি সময় ধরে দিন হওয়ার জন্য ও সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ার জন্য উত্তর গোলার্ধে 21 জুনের দেড় মাস আগে থেকে দেড় মাস পর পর্যন্ত গরম খুব বেশি থাকে। তাই এই সময় উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল হয় ও দক্ষিণ গোলার্ধে ঠিক তার বিপরীত অবস্থা দেখা যায়। 21 জুনকে কর্কট সংক্রান্তি বলা হয়।

3. উত্তর গোলার্ধে কখন শরৎকাল ও শীতকালের সূচনা হয় ?

উত্তর :  21 জুনের পর থেকে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধ ধীরে ধীরে সূর্যের দিকে হেলতে থাকে অর্থাৎ সূর্যের দক্ষিণায়ণ শুরু হয়। পুনরায় 23 সেপ্টেম্বর তারিখে পৃথিবীর দুই মেরু সূর্যের সমান দূরত্বে আসে। ওই দিন পুনরায় নিরক্ষরেখার উপর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে। পৃথিবীর সর্বত্র দিন ও রাত সমান হয়। আবহাওয়া মনোরম থাকে। এই সময় উত্তর গোলার্ধে শরৎকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে বসন্তকাল হয়। 23 সেপ্টেম্বরকে তাই উত্তর গোলার্ধে শরৎকালীন বিষুব’ বলা হয়।

4. সূর্য পরিক্রমণকালের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য দিক লেখো ?

উত্তর :  i. পৃথিবী নিজের অক্ষের ওপর 24 ঘণ্টায় 1 বার পাক খেতে খেতে 365 দিনে একবার সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। ii. পৃথিবীর মেরুরেখা সর্বদা একই দিকে হেলে থাকে। iii. পৃথিবীর কক্ষপথের আকৃতি উপবৃত্তাকার। iv. পৃথিবীর O মেরুরেখা কক্ষতলের সাথে সর্বদা 662 ° এবং নিরক্ষীয় তল কক্ষতলের সাথে 23° কোণে হেলে অবস্থান করে। v. পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথের নাভিতে সূর্যের অবস্থানের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব সর্বদা সমান হয় না। দূরত্বের পার্থক্যের জন্য পরিক্রমণের বেগও পরিবর্তিত হয়। এই দূরত্ব হ্রাসবৃদ্ধির জন্যই সূর্যকে কখনও খুব বড়ো দেখায় (শীতকালে) ও কখনও ছোটো দেখায় (গ্রীষ্মকালে)। vi. পৃথিবী সূর্যকে পশ্চিম থেকে পূর্বে আবর্তন করে।

5. পৃথিবীর দুই মেরুতে একটানা 6 মাস দিন ও 6 মাস রাত্রি দেখা যায় কেন ?

উত্তর : পৃথিবীর দুই মেরুবৃত্তে অর্থাৎ সুমেরু ও কুমেরুতে একটানা 6 মাস দিন ও 6 মাস রাত্রি থাকার কারণ হল পৃথিবীর তার কক্ষতলে সঙ্গে 66 কোণে হেলে থাকা, এর ফলে সারাবছর সূর্যের আগে বাঁকাভাবে পড়ে।

21 মার্চের পর থেকে 23 সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত পৃথিবী তার কক্ষপথের এমন স্থানে আসে যে এই সময়টা উত্তর গোলার্ধের সুমেরু বৃত্তীয় অঞ্চলে সূর্যের দিকে ঝুঁকে থাকে, এখানে কখনোই সূর্য দিগন্তের নীচ থেকে ওঠে না বা অস্ত যায় না। ফলে সুমেরু বৃত্ত থেকে সুমেরু বিন্দু পর্যন্ত সর্বদা অর্থাৎ 24 ঘণ্টা সূর্যের আলো পায়। অর্থাৎ একটানা 6 মাস দিন থাকে।

অপরদিকে, ওই সময় কুমেরু অঞ্চলে একেবারেই সূর্যকে দেখা যায় না ফলে সেখানে 6 মাস রাত্রি বিরাজ করে। অন্যদিকে 23 সেপ্টেম্বরের পর থেকে 21 মার্চের আগে পর্যন্ত পৃথিবী তার কক্ষপথের এমন স্থানে আসে যে, এই সময়টা দক্ষিণ গোলার্ধের কুমেরু বৃত্তীয় অঞ্চলে আলোকিত রাত্রি সহ একটানা। দিন হয়, অর্থাৎ কুমেরু অঞ্চল 24 ঘণ্টা আলোকিত হয়। সেই সময় সুমেরু অঞ্চলে একটানা 6 মাস রাত্রি বিরাজ করে।

উত্তর গোলার্ধে শীতকাল : 23 সেপ্টেম্বরের পর থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়তে থাকে। 22 ডিসেম্বর তারিখে পৃথিবীর মকরক্রান্তি রেখায় সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে। ওই দিন দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে = বড়ো ও রাত সবচেয়ে ছোটো হয়। দীর্ঘসময় সূর্যতাপ পাওয়ার জন্য এর দেড়মাস আগে থেকে দেড় মাস পর পর্যন্ত দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল হয়। এই দিনটিকে মকরসংক্রান্তি ও বলে। উত্তর গোলার্ধে এই সময় দিন ছোটো ও রাত বড়ো হয়। তাই উত্তর গোলার্ধে এই সময় শীতকাল হয়।

6. পৃথিবীর এক একটা গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে কেন ?

উত্তর : পৃথিবীর নিজ অক্ষে ঘোরার সময় উপবৃত্তাকার পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর অক্ষটি কক্ষপথের সাপেক্ষে পুরোপুরি লম্ব নয়। কিছুটা হেলানো, কক্ষতলের 66.5° কোণে অবস্থিত। তাই পৃথিবীও কিছুটা হেলানোভাবে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। তাই কক্ষপথের এক একটা জায়গায় পৃথিবীর এক একটা গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে।

7. ঋতুবৈচিত্র্যের গুরুত্ব বুঝিয়ে লেখো ?

উত্তর : ঋতুবৈচিত্র্য প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সময় গণনা, ক্যালেন্ডার তৈরি, কৃষিকাজ, নানান জীবিকা, বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব সবই ঋতুনির্ভর। উদ্ভিদ ও প্রাণীর সঠিক বৃদ্ধি ও বিকাশ এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য ঋতু পরিবর্তন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সারা বছর ধরে ঋতুগুলির এই আসা যাওয়া আমাদের জীবনে বৈচিত্র্য ও উৎসাহ নিয়ে আসে, যা আমাদের সংস্কৃতিকে আরও সমৃদ্ধ করে।

সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর :

নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন ও উত্তর :

1. শূন্যস্থান পূরণ করো :

ক. উপবৃত্তাকার কক্ষপথের একটা―――সূর্য অবস্থান করে।

খ.  পৃথিবী সূর্যের তুলনায়――― গুণ ছোটো।

গ. পৃথিবীর বার্ষিক গতির বেগ সেকেন্ডে প্রায়―――।

ঘ. ―――তারিখকে বলা হয় অপসূর অবস্থান।

ঙ. ―――তারিখকে বলা হয় অনুসূর অবস্থান।

চ. 366 দিনের বছরকে বলে――― ।

ছ. দুই মেরু অঞ্চলের একটানা রাত এক সময়―――তাপমাত্রা নীচে থাকে।

জ. সূর্যের আপাত বার্ষিক গতিপথকে――― বলে।

ঝ. ‘আয়ন’ কথাটির অর্থ হল―――।

ঞ. সারাবছর দিনরাত্রি সমান হয়―――অঞ্চলে।

ট. উত্তর মেরুতে আকাশে যে রামধনুর মতো রঙিন আলোর জ্যোতি দেখা যায় তাকে বলে―――।

ঠ. সূর্যে প্রতিমুহূর্তে হাইড্রোজেন গ্যাস―――পরিবর্তিত হয়ে প্রচুর শক্তি উৎপন্ন হচ্ছ।

উত্তর :  (i) ফোকাসে। (ii) 13 লক্ষ। (iii) 30 কিমি। (iv) 4 জুলাই। (v) 3 জানুয়ারি। (vi) লিপইয়ার বা অধিবর্ষ। (vii) হিমাঙ্কের। (viii) রবিমার্গ। (ix) পথ। (x) নিরক্ষীয়। (xi) অরোরা বোরিওলিস। (xii) হিলিয়াম।

2. সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো :

ক. সূর্যরশ্মি (উচ্চ/মধ্য/নিম্ন) অক্ষাংশে লম্বভাবে পড়ে।

খ. পৃথিবী যে গতিশীল একথা বলেন (নিউটন/আর্যভট্ট/টলেমি)

গ. পৃথিবী নিজ অক্ষের ওপর ঘুরতে ঘুরতে (বৃত্তাকার/উপবৃত্তাকার/অর্ধবৃত্তাকার) পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে।’

ঘ. পৃথিবীর উপগ্রহ চাঁদ পৃথিবীকে প্রায় (28/29/30) দিনে প্রদক্ষিণ করে।

ঙ. শরৎকালীন বিষুব হয়, (21 জুন/23 জুন/ 23 সেপ্টেম্বর)

চ. দক্ষিণ গোলার্ধের বৃহত্তম দিন (22 ডিসেম্বর/23 সেপ্টেম্বর/21 মার্চ),

উত্তর :  (i) নিম্ন (ii) আর্যভট্ট (iii) উপবৃত্তাকার (iv) 28 দিন (v) 23 সেপ্টেম্বর (vi) 22 ডিসেম্বর

আরও পড়ুন :

সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর