বারদৌলি কৃষক আন্দোলন -টীকা

সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পর্বটিতে শেয়ার করলাম বারদৌলি কৃষক আন্দোলন সম্পর্কে। চলুন দেখে নেওয়া বারদৌলি কৃষক আন্দোলন সংক্ষিপ্ত টীকাটি।

বারদৌলি কৃষক আন্দোলন :

ভূমিকা : গুজরাটের সুরাট জেলার বারদৌলি তালুকের কৃষকরা 1928 সালে এক শক্তিশালী সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু করে, যা বারদৌলি সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত।

1. কৃষকদের অবস্থা : বারদৌলি তালুকের সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষক ছিল নিম্নবর্ণের কালিপরাজ সম্প্রদায়ভুক্ত। সীমাহীন দারিদ্র্য, সামাজিক অবজ্ঞা তাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল।

2. আন্দোলনের কারণ : 1925 খ্রিস্টাব্দে ভয়ংকর বন্যায় বারদৌলি অঞ্চলের প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয়। কৃষকরা দুর্ভিক্ষের শিকার হওয়া সত্ত্বেও সরকার তাদের ওপর প্রথমে 30 শতাংশ এবং পরে তা কমিয়ে প্রায় 22 শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করে। ফলে কৃষকরা বিদ্রোহী হয়।

3. প্যাটেলের নেতৃত্ব : বারদৌলি সত্যাগ্রহে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য কৃষকরা গান্ধিবাদী কংগ্রেস নেতা বল্লভভাই প্যাটেলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি এখানে কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ করে অহিংস তিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলেন। বারদৌলির কৃষক- রমণীরা তাঁকে ‘ সর্দার ’ উপাধি দিয়েছিল।

4. অন্যান্য নেতৃত্ব : আন্দোলনে নরহরি পারিখ , রবিশংকর ব্যাস , মোহনলাল পান্ডে প্রমুখ সর্দার প্যাটেলকে সহযোগিতা করেন। মিঠুবেন প্যাটেল, মণিবেন প্যাটেল, সারদা মেহতা, ভক্তি বাই প্রমুখ নারী এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

5. প্রভাব : আন্দোলনের সমর্থনে বোম্বাই বিধানসভার সদস্য কে এম মুনশি ও লালজি নারাণজি পদত্যাগ করেন। গান্ধিজিও বারদৌলিতে এসে আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কথা ঘোষণা করেন। শেষপর্যন্ত সরকার নিযুক্ত এক কমিটি 6.03 শতাংশ খাজনা বৃদ্ধির অনুমোদন জানালে কৃষকরা তা দিতে রাজি হয়।

মূল‍্যায়ন : বারদৌলির কৃষকদের শক্তিশালী আন্দোলনে শেষপর্যন্ত ইংরেজ সরকার হার মানতে বাধ্য হয়। আন্দোলনের চাপে সরকার শেষপর্যন্ত ‘ ব্লুমফিল্ড – ম্যাক্সওয়েল তদন্ত কমিটি ’ গঠন করে বর্ধিত রাজস্বের হার কমাতে বাধ্য হয়।

আরও পড়ুন :

● একা আন্দোলন সম্পর্কে কি জানো

● ভারত ছাড়ো আন্দোলনের কারণ ও গুরুত্ব

● ফরাজি আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য ও প্রকৃতি