সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীরা আজকের এই পরবর্তীতে আলোচনা করলাম উনিশ শতকের বাংলায় সমাজসংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজ গুলির ভূমিকা সম্পর্কে।
উনিশ শতকের বাংলায় সমাজসংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজ গুলির ভূমিকা :
ভূমিকা : উনিশ শতকের সমাজসংস্কার আন্দোলনে ব্রা সমাজের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ব্রাহ্ণসমাজ বোঝাতে আদি ব্রায়সমাজ , ভারতবর্ষের ব্রাহ্মসমাজ , সাধারণ ব্রায়সমাজ , নববিধান ব্রা সমাজ প্রভৃতিকে বোঝায় । রাজা রামমোহন রায় কলকাতায় 1828 সালে ব্রাহ্ণসভা প্রতিষ্ঠা করেন । 1830 খ্রিস্টাব্দে এর নাম হয় ব্রাহ্মসমাজ। রামমোহনের মৃত্যুর পরবর্তীকালে ব্রাহ্মসমাজের নেতৃত্ব দেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর , কেশবচন্দ্র সেন প্রমুখ।
1. কুসংস্কারের বিরোধিতা ও যুক্তিবাদী চিন্তাধারার প্রসার : ব্রাহ্ণসমাজ ভারতীয় সমাজে প্রচলিত নানা কুসংস্কারের যেমন বিরোধিতা করেছিল , তেমনই মানুষের মধ্যে যুক্তিবাদী চিন্তাধারার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
2. জাতিভেদপ্রথা ও ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরোধ : ব্রাহ্মসমাজ হিন্দুসমাজের জাতিভেদপ্রথা ও ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরোধিতা করে । হিন্দুধর্মের নামে নানা প্রচলিত কুপ্রথার প্রতিরোধে ব্রায়সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
3. নারীকল্যাণের ভূমিকা : ব্রায়সমাজ নারীকল্যাণের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল । যেমন – পর্দাপ্রথার বিলুপ্তিসাধন , বিধবাবিবাহের আইনসিদ্ধকরণ , বহুবিবাহ নিষিদ্ধকরণ , নারীসমাজে শিক্ষার প্রচলন প্রভৃতি।
4. জাতীয় সংহতির বিকাশ : ব্রাহ্মসমাজ ভারতবাসীর মধ্যে জাতীয় সংহতির চেতনা প্রসারের ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। উদারপন্থী ধর্মীয় আদর্শ ও জাতীয়তাবাদের আদর্শ প্রচারের মাধ্যমে ব্রাহ্মসমাজ জাতীয় সংহতি চেতনার জাগরণ ঘটায়।
5. সমাজসেবা : ব্রাহ্মসমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা ছিল । সমাজসেবা ও জনহিতকর কাজের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী আদর্শ প্রতিষ্ঠা , যেমন- দুর্ভিক্ষের সময় কেশবচন্দ্র সেন একদল বাঙালি তরুণকে নিয়ে ত্রাণের এক দৃষ্টান্ত রেখেছিলেন।
মূল্যায়ন : ব্রাহ্মসমাজ বাংলার সমাজসংস্কারের ক্ষেত্রে অনুকরণযোগ্য দৃষ্টান্ত রেখেছিল। এই প্রতিষ্ঠান সমাজসংস্কারের মাধ্যমে এক জাতীয় জাগরণ ঘটাতে চেয়েছিল। পরবর্তীকালে রামকৃষ্ণ মিশন ব্রাহ্মসমাজের কিছু আদর্শ গ্রহণ করে।
আরও পড়ুন :
1 thought on “উনিশ শতকের বাংলায় সমাজসংস্কার আন্দোলনে ব্রাহ্মসমাজ গুলির ভূমিকা”